শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
উত্তরবঙ্গের ৩ এবং দক্ষিণ এক জেলায় নির্মাণসামগ্রীর ট্রাক চালাতে গেলেই দিতে হচ্ছে গুন্ডাট্যাক্স। আর তার জেরেই নাভিশ্বাস অবস্থা ট্রাকচালকদের। বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বেশ কয়েকজন ট্রাক মালিক।
তাদের অভিযোগ, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে রীতিমত কুপন কেটে নির্মাণসামগ্রী ট্রাকপিছু ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করছে দুষ্কৃতীরা। কেন পুলিশ এই ধরনের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তা নিয়ে এবার রাজ্যের ডিজিপির মন্তব্য তলব করল হাইকোর্ট।
ট্রাকচালকদের অভিযোগ, এই চার জেলায় একাধিক থানা-সহ পুলিশের উচ্চমহলে একাধিকবার বিষয়টি জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তারা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, এই চারটি জেলা বাদে অন্য কোনও জেলায় ট্রাক চালাতে সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু এই চার জেলায় ট্রাক নিয়ে ঢুকলেই ‘গুন্ডাট্যাক্স’ দিয়ে তবেই গাড়ি এগোতে দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ খতিয়ে দেখতে ৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কমিটি
ট্রাকচালকদের অভিযোগে তার পরিষ্কার জানিয়েছেন এই ৪ জেলার সর্বত্র নয়, মূলত মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি, সুতি, জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জ, ফারাক্কা, মালদহের বৈষ্ণবনগর, কালিয়াচক, ইংলিশ বাজার, মালদা ট্রাফিক, ওল্ড মালদা, গাজল, উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি, ডালখোলা, কানকি, ইসলামপুর, চাপরা এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, হরিরামপুর, ইটাহার, বুনিয়াদপুর ও গঙ্গারামপুর থানা এলাকায় এই ধরনের গুণ্ডাট্যাক্সের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে। থানা থেকে জেলা পুলিশ সুপার পর্যন্ত দৌড়াদৌড়ি করেও লাভ হয়নি।
আরও পড়ুনঃ সেপ্টেম্বরের আগে দিল্লি, মুম্বই-সহ ৬ শহরের উড়ান নামবে না কলকাতায়
বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মামলাটির শুনানিতে ট্রাক মালিকদের আইনজীবী, মহিনুর রহমান ও মারিয়া রহমান প্রশ্ন করেন, পুলিশকে জানালেও যেখানে পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তাহলে কি পুলিশের মদতেই দিনের পর দিন এই ‘গুন্ডাট্যাক্স’ আদায় করে চলেছে দুষ্কৃতীরা? রাজ্য সরকারের তরফে এই মামলার শুনানিতে কোনও আইনজীবী উপস্থিত না থাকলেও অন্য মামলার জন্য অনলাইন ছিলেন সরকারি কৌঁসুলি আনন্দ ফরমানিয়া।
বিচারপতি তালুকদার তাঁকেই এ ব্যাপারে রাজ্যের ডাইরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ বা ডিজিপি–র মতামত নিতে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ওই চার জেলার পুলিশ আধিকারিকদের রিপোর্ট দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি তালুকদার। আগামী ১২ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584