স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে বয়ে নিয়ে যাওয়া দানা মাঝির কন্যা সসম্মানে উত্তীর্ণ দশম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায়

0
118

নিজস্ব প্রতিবেদন, নিউজ ফ্রন্টঃ

ছবি সৌজন্যে: এনডিটিভি

২০১৬ সালে, দারিদ্রের এক মর্মান্তিক ছবি নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। উড়িষ্যার কালাহান্ডি জেলার আদিবাসী এক কৃষক দানা মাঝির একটি ছবি প্রকাশ্যে এসেছিল। ছবিতে দেখা যায়, আদিবাসী এই কৃষক স্ত্রী-র মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে হেঁটে চলেছেন ১০ কিমি রাস্তা – কারণ আর্থিক সামর্থ নেই অন্য কোন যানবাহনের ব্যবস্থা করার। পাশে বাবার সাথে অক্লান্ত হেঁটে চলেছে কন্যা চাঁদিনী।

সেই চাঁদিনী আজ সসম্মানে উত্তীর্ণ দশম শ্রেণীর বোর্ডের পরীক্ষায়, শুক্রবার ফল ঘোষিত হয়েছে পরীক্ষার। পরিবারের প্রথম কৃতি সদস্য চাঁদিনী, প্রতিনিয়ত আর্থিক অনটনের সঙ্গে যুদ্ধ করেও হেরে যাননি। রাজ্যের প্রায় ৫ লক্ষ ৬০ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে সাফল্যের অধিকারী সেও।

কান্ধমাল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেডি সাংসদ
অচ্যুৎ সামন্ত অনেকটাই সাহায্য করেছিলেন চাঁদিনী সহ দানা মাঝির আরো দুই কন্যা সন্তানের শিক্ষার ক্ষেত্রে। সাংসদের নিজের একটি স্কুল রয়েছে ভুবনেশ্বরে, কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্স। মূলত আদিবাসীদের নিয়েই চলে স্কুলটি। সেখানেই দানা মাঝির তিন সন্তানকে ভর্তি করিয়ে দেন তিনি। চাঁদিনীর সাফল্যে উচ্ছসিত তিনিও, জানালেন দেখে ভালো লাগছে আজকের মেয়েরা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই তৈরি করে নিতে পারছে। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে চাঁদিনীর কৃতিত্বের কথা পোস্ট করে সাংসদ লিখেছেন, ” সমস্ত গ্রামের মানুষ খুশি চাঁদিনীর সাফল্যের কাহিনী জেনে আনন্দিত। আমিও উচ্ছসিত মেয়েরা তাঁদের নিজেদের লড়াই জিতছেন দেখে। কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্স প্রান্তিক মানুষের সহায়তায় কতটা কাজ করছে এটি তার এক উদাহরণ। এমন অনুপ্রেরণা ও আশার কাহিনীর অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত।”

২০১৬ সালের দানা মাঝির সেই মর্মান্তিক ছবি প্রকাশ্যে আসার পর শুধু দেশ নয় , তাঁদের আর্থিক অনটনের চিত্র দেখে বিশ্বজুড়েই কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে নবীন পট্টনায়কের সরকার। আদিবাসী এই কৃষকের সাহায্যার্থে দেশ-বিদেশ থেকে এগিয়ে আসেন বেশ কিছু মানুষ, কিছু সংগঠন। বাহারিনের প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স খলিফা বিন সলমন আল খলিফা ৯লক্ষ টাকা অর্থ সাহায্য করেন দানা মাঝিকে। সে টাকা গচ্ছিত রয়েছে একটি ফিক্সড ডিপোজিটে, এছাড়াও তিনি প্রতিশ্রুতি দেন চাঁদিনীর জন্য আলাদা করে মাসিক ১০,০০০ টাকা আর্থিক সহযোগিতার।
সেদিনের দানা মাঝি আজ ৫০ বছরের প্রৌঢ়, দ্বিতীয়বার বিবাহও করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পেয়েছেন পাকা বাড়ি। তবে নিজের ছোট্ট জমিতে এখনো চাষ করেন তিনি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here