নিজস্ব প্রতিবেদক,বহরমপুরঃ
সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনই এমনিতেই ব্যস্ত বহরমপুর কালেকটরেট ক্লাব মোড়কে চরম সসব্যস্ত করে তুললো মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।পেট্রোল ডিজেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এই দিন বহরমপুর কালেকটরেট মোড়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
![](https://newsfront.co/wp-content/uploads/2018/06/IMG-20180604-WA0054_1528125246116.jpg)
আদতে ‘কেন্দ্র বিরোধিতায় তৃণমূল’ এটা বোঝাতেই আয়োজন করা হয়েছিল এই সমাবেশ। কিন্তু কালেকটরেট মোড়ের এই সভায় নেতাদের বক্তৃতায় যত না তেজ ছিল কেন্দ্র সরকারের বিরোধিতায়, তার থেকে বেশি ছিলো আড়ম্বরতায়। পথচলতি মানুষ যারা থমকে দাঁড়িয়েছিল বক্তৃতা শুনবে বলে তারা নেতাদের কথা শুনে জৈষ্ঠ্যের ন্যাতানো রোদের দিকে আঙুল তুলে কটাক্ষ করে সহসা স্থান ত্যাগ করলেন। সুব্রত সাহা যখন বলতে উঠলেন তখন তাঁর দলের এক ব্লক নেতা জেলায় যিনি তৃণমূলের বি-টিম বলে খ্যাত তিনি ফোঁড়ণ কাটতে কাটতে হাসাহাসি শুরু করলেন সমগোত্রদের সাথে। তাঁর অধ্যাপক পুত্রের অপটু বক্তৃতা শুনে জেলার প্রাক্তন এক কংগ্রেস নেতা বলেই ফেললেন’ সুব্রত ছেলেকে কেমন নেট প্র্যাকটীস করাচ্ছে দেখছেন’। তিনি যখন পেট্রোল ডিজেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে তাঁর বক্তব্য রাখছেন তখন শহরের এক অর্থনীতির অধ্যাপক বলছেন “এসব হাঙ্গামা না করে রাজ্য সরকার তো কেরালা সরকারের মত এক টাকা দাম কমিয়েও তো মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারত। গরুর গাড়ি সাইকেল চালিয়ে লোককে বোকা বানানোর অক্ষম চেষ্টা ছাড়া কি বা বলবেনএকে”।
![](https://newsfront.co/wp-content/uploads/2018/06/IMG-20180604-WA0052_1528125073369.jpg)
কয়েকজন সদ্য নির্বাচিত নেতাকে দেখে তখন কালেকটরেটের গায়ে লাগানো কংগ্রেস পার্টি অফিস থেকে ভেসে এলো বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য। তা বলতেই সেই নেতা ও তার সহযোদ্ধা বললেন “তোমাদের গেছে যে দিন তা একেবারেই গেছে”। সঙ্গে সঙ্গে তাকে সাবধান করে আর এক নেতা বললেন “লোকসভা ভোটের পর যা বলার বলবি। দিদি কিন্তু দিল্লিতে গেলে রাহুল জোট নাও করতে পারে এসব শুনে”। যা শুনে সতর্ক হয়েও নেতা কিছু সময় পরে আবার গালাগাল দিতে লাগলো মুর্শিদাবাদের কংগ্রেসকে।
![](https://newsfront.co/wp-content/uploads/2018/06/IMG-20180604-WA0053_1528125159683.jpg)
এদিকে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের এই আড়ম্বরপূর্ণ সভাকে পূর্ণ মর্যাদা দিতে জেলা পুলিশ ছিল সদা তৎপর। ট্রাফিক ইন্সপেক্টর গৌতম চক্রবর্তীকে দেখা গেল নেতা ও তাদের দলবলের গাড়ি গুলোকে তৎপরতার সঙ্গে যাতায়াতের সুবিধা করে দিতে। পাছে জেলার নেতারা না চটে যায়। মাঝখান থেকে নাকাল হতে হলো সাধারণ মানুষকে। তাদের অসুবিধার কথা বলতে এসে নেতা ও পুলিশের যৌথ বদান্যতায় নাকাল হতে হলো তাদেরকেই। আর পরিনামে দেখতে হলো সদ্যজয়ী জেলা পরিষদের নেতাদের আনন্দ সম্মীলনি। সব মিলিয়ে সারাক্ষণ সভায় থেকে ভাগীরথীর ওপার থেকে আসা যুবক ইমদাদুল সেখ বলেই ফেললো “এদের কাছেই যে বিষয়টা পরিস্কার নয় তা মানুষকে বোঝাবে কি করে? নেতা হওয়া কি মুখের কথা। দল করলেই হয় না নেতা।” বলেই একটা বিড়ি ধরিয়ে পুরনো বাইকে স্টার্ট দিয়ে মঞ্চের সামনে দিয়ে এগিয়ে গেল। তা দেখে নীতিবাগিশ পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্তাদের কারোর কি নজর এড়িয়ে গেল সদ্য ধুমপান মুক্ত শহরে। কে জানে। বলে ভীড় ঠেলে সাইকেল নিয়ে ভীড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক তপন বিশ্বাস।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584