প্রয়াত মেদিনীপুরের প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতি, বাড়িতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী

0
131

নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

মেদিনীপুরে বর্ণময় এক অধ্যায়ের অবসান হল। সোমবার মারা গেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মেদিনীপুরের প্রবীণ বিধায়ক মৃগেন মাইতি।মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। মৃগেন মাইতির জন্ম ও পড়াশুনা পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের জাগুল গ্রামে। তাদের পারিবারিক ব্যবসা ছিল পরিবহণের। মৃগেন মাইতি ডেবরা ব্লকের বালিচক ভজহরি হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন।

mrigen maity | newsfront.co
মৃগেন মাইতি। ফাইল চিত্র

যদিও সেই চাকরি ছেড়ে মেদিনীপুরে কালেক্টরি অফিসে যোগদান করেন। সেই সঙ্গে মেদিনীপুর পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের সিপাইবাজার এলাকায় বাড়ি করে ভাইদের নিয়ে একই সঙ্গে বসবাস শুরু করেন।২০০৬ সালে প্রথম ডেবরা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে মৃগেন মাইতি হেরে যায়।

এরপর ২০১১ ও ২০১৬ সালে মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে পরপর দুইবার বিধায়ক নির্বাচিত হন মৃগেন মাইতি। তিনি মৃত্যুর দিন পর্যন্ত মেদিনীপুরের বিধায়ক ছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন মেদিনীপুর খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান। এছাড়াও ছিলেন মেদিনীপুর পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্যও। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের এক সময় রাজ্য সভাপতি ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির পদও সামলেছেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ ইতিহাসে স্নাতক হয়ে ইতিহাসের শরিক শবর কন্যা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃগেন মাইতি কে মৃগেন দা বলে ডাকতেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কয়েকদিন আগে তাকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৭ ই ডিসেম্বর সোমবার দুপুর নাগাদ মৃগেন মাইতি কলকাতার পিজি হাসপাতালের আইসিইউতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।তাই মৃগেন মাইতির মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

মৃগেন মাইতির মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর শোক প্রকাশ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দিনেন রায় সহ একাধিক বিধায়ক ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার পরিবারবর্গকে সমবেদনা জানান। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা ভেঙ পশ্চিম মেদিনীপুর, পরে তা ভেঙে ঝাড়গ্রাম জেলা হয়েছে। এই অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার বাম বিরোধী আন্দোলনে তিনি ছিলেন অন্যতম নেতা।

আরও পড়ুনঃ তপনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে বধূর মৃত্যু,অভিযুক্ত স্বামী

তিনি মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগর এলাকায় ফেডারেশনের কার্যালয়ে বসে কাজ করতেন। মৃগেন মাইতি বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অনেক উন্নয়ন করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম হল মেদিনীপুর বিধানসভার অন্তর্গত শালবনি ব্লকের গড়মাল গ্রামের পানীয় জলের সমস্যা সমাধান করা।

তার মৃত্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসে এক শূন্যতার সৃষ্টি হল এবং তিনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ভালো মানুষ হিসাবে পরিচিত ছিলেন বলে জানাযায়। এক সময় মেদিনীপুরের সিপিএম দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার কে পায়ে হাত দিয়ে তিনি প্রণাম করেছিলেন। সেটা নিয়ে বহু সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল, তাতেও তিনি কান দেননি।

আরও পড়ুনঃ পাঁশকুড়ায় বাইকের ধাক্কায় প্রৌঢ়ের মৃত্যু

তিনি বলেছিলেন, দীপক বাবু একজন শিক্ষক এবং রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে রেখে অধ্যাপক দীপক সরকার কে প্রণাম করে তিনি কোনো ভুল কাজ করেননি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার খোঁজখবর নিতেন নিয়মিত।

যখন মেদিনীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করছেন তখন বিধায়ক মৃগেন মাইতির মৃত্যুসংবাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ব্যথিত করেছে। তাই তার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠে জনসভা শেষ করে প্রয়াত বিধায়ক মৃগেন মাইতির মেদিনীপুর শহরের সিপাই বাজারের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বিধায়কের পরিবারবর্গকে সমবেদনা জানান এবং তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মৃগেন মাইতির আত্মার শান্তি কামনা করেন।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here