ভাইরাস মোকাবিলায় কুইক রেসপন্স টিম ও হেল্প লাইন চালু, প্রশাসনের

0
87

প্রীতম সরকার, উত্তর দিনাজপুরঃ

করোনা ভাইরাস রুখতে এবারে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। জেলার জন্য কুইক রেসপন্স টিম চালু করল প্রশাসন। তার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালু হল একটি হেল্প লাইন নম্বরও।

Arabinda Mina and Sumit Kumar | newsfront.co
জেলা শাসক,অরবিন্দ মিনা। পুলিশ সুপার, সুমিত কুমার। নিজস্ব চিত্র

রায়গঞ্জের কর্নজোড়ায় নিজের দফতরে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানালেন জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মীনা। জেলাবাসীর জন্য যে হেল্প লাইন নম্বরটি চালু করা হয়েছে তা হল ০৩৫২৩-২৪৬১৫৩। এ নিয়ে জেলাশাসক বলেন, “করোনা প্রতিরোধে কুইক রেস্পন্স টিম এবং হেল্প লাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। এখন থেকে করোনা সম্পর্কিত তথ্য বা সহায়তার জন্য এই হেল্প লাইন নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে। তাছাড়া রাজ্যের পক্ষ থেকেও হেল্পলাইন চালু রয়েছে”।

Raiganj Hospital | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

এদিকে জেলা শাসক জানিয়েছেন, “এখনও পর্যন্ত জেলায় ভিনদেশ বা ভিনরাজ্য থেকে আসা মোট ৩৬ জনের খবর মিলেছে। যারা নিজেদের বাড়িতেই হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। সেইসাথে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এখন পর্যন্ত মোট ৭জন রোগীর মধ্যে ফ্লুয়ের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানা গেছে”।

আরও পড়ুনঃ  থানায় প্রবেশের আগে হাত ধুয়ে ঢুকতে হবে, নির্দেশ পুলিশের

জেলায় থাকা বেসরকারি নার্সিং হোমগুলোর আধিকারিকদের সঙ্গে এদিন বৈঠক করেন জেলাশাসক। অন্যদিকে, বিদেশ বা ভিন রাজ্য থেকে কত জন ফিরেছেন জেলায়— তার কোনও তথ্য নেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। অভিযোগ, করোনা আতংকে গত তিন দিনে জেলার বিভিন্ন ব্লকের অনেক বাসিন্দাই বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেনি জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের দাবি, কোনও বাসিন্দা ভিন রাজ্য বা বিদেশ থেকে অসুস্থ হয়ে জেলায় ফিরলে, তা দেখার দায়িত্ব জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। জেলা স্বাস্থ্য দফতর তাঁদের চিহ্নিত করার পরে স্বাস্থ্যপরীক্ষা বা আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চাইলে পুলিশ ও প্রশাসন তা করবে।

আরও পড়ুনঃ স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে স্কুলে প্রবেশ শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীদের

জেলাবাসীর একাংশের বক্তব্য, করোনা আতংকে গত তিন দিনে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, গুজরাত, রাজস্থান ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বহু বাসিন্দা জেলায় ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগের বাড়ি রায়গঞ্জ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর ও গোয়ালপোখর-১ ব্লকে। কিন্তু পুলিশ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর এখনও পর্যন্ত তাঁদের চিহ্নিত করে স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করেনি বলে অভিযোগ।

তার জেরে সে সব ব্লকের বাসিন্দাদের মধ্যে করোনা-আতংক চরমে উঠেছে।প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জের বীরনগর এলাকার বাসিন্দা এক অধ্যাপকের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে তাঁকে ১৪ দিন ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

অভিযোগ, ওই অধ্যাপক মিশরে সেমিনারে যোগ দিয়ে রায়গঞ্জে ফিরে শহরের একটি হোটেলে উঠেছিলেন। তা ছাড়া শুক্রবার রায়গঞ্জের উকিলপাড়ার এক তরুণকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে কালিয়াগঞ্জের কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ডে ভর্তি করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

উকিলপাড়া এলাকার এক অলংকার ব্যবসায়ীর ছেলে ওই তরুণ লণ্ডনের একটি কলেজে এমবিএ পড়ছেন। ১৬ মার্চ তিনি রায়গঞ্জের বাড়িতে ফেরেন।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজস্থান থেকে রায়গঞ্জের বীরনগর এলাকার বাড়িতে ফেরেন এক যুবক। এ দিন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা তাঁর বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে আগামী ১৪ দিন তাঁকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানের বলেন,”ভিন রাজ্য ও বিদেশ থেকে জেলায় ফিরে আসা বাসিন্দাদের চিহ্নিত করার পরিকাঠামো জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নেই। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও ওই ভাইরাস ছড়ানো রুখতে বাসিন্দাদেরই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো উচিত।

বাইরে থেকে এলাকায় কারা আসছেন, সেই তথ্য জানার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের তরফে জেলার ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও চারটি পুরসভার জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সে রকম কোনও তথ্য পেলে সাথে সাথে তা জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে জানানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here