আইন না জেনেও নিজের মামলার সওয়াল করছেন নিজেই, বেআইনি নির্মানের বিরুদ্ধে লড়াই শগুফতার

0
80

নিজস্ব প্রতিবেদন, নিউজ ফ্রন্টঃ

ঘটনার সূত্রপাত ২০০৯ সালে। কলকাতার রিপন স্ট্রিটের বাসিন্দা শগুফতা সুলেমান। তাঁর মা হার্টের দুরারোগ্য সমস্যায় ভুগছিলেন। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন তাঁর মায়ের হৃদপিন্ডে একটি ফুটো রয়েছে। তাই ধুলো, বালি, গুঁড়ো, ধোঁয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। সেই মতোই মায়ের যত্ন নিচ্ছিলেন শগুফতা।

Calcutta highcourt

এরপর ২০১৩ সালে শগুফতাদের ঘরের লাগোয়া একটি পুরনো বাড়ি ভাঙা শুরু হয় বহুতল গড়ার জন্য। তার ফলে দিনভর ধুলো, বালি, গুঁড়ো ঢুকছিল তাদের বাড়িতে ফলে শ্বাসকষ্টে বেড়ে যাচ্ছিল মায়ের অসুস্থতা। প্রোমোটারের কর্মীদের অনেক অনুনয়-বিনয় করেও কাজ না হওয়ায় পার্ক স্ট্রিট থানার দ্বারস্থ হন শগুফতা। তাঁর অভিযোগ, সমস্যা শুনে পাত্তাই দেয়নি থানার পুলিশ। তার পর কলকাতা পুরসভাকে বিষয়টি বলা হয়। সেখানেও কোন কাজের কাজ হয়নি। এরপরে শগুফতাদের জায়গা দখল করে সেখানেও শুরু হয় নির্মান এবং বেআইনি ভাবে। এই বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে তৎকালীন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদ থেকে শুরু করে সকলের দ্বারস্থ হন শগুফতা, মেলেনি সাহায্য।

তারপরে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। ২০১৪ সালে আদালতের নির্দেশে হাই কোর্ট ওই নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ‘পুলিশের সাহায্যে’ নির্মাণ চালিয়ে যান প্রোমোটার। আদালতে যাওয়ার কারণে তাঁকে প্রাণে মারার ষড়যন্ত্র করা হয় বলেও অভিযোগ। সে কারণে তৎকালীন ডিসি সাউথের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁকে নিরাপত্তাও দেওয়া হয়। পাশাপাশি নির্মাণকাজ ও বন্ধ হয়। তবে শগুফতার দাবি, দু’বছরের মাথায় ট্রান্সফার হয় তাঁর পরে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। নিরাপত্তা উঠে যায়। শগুফতার মা-ও মারা যান।

আরও পড়ুনঃ এয়ার ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান পদে চেনা নামেই আস্থা রাখল টাটা গ্রুপ, এন চন্দ্রশেখরণ হলেন চেয়ারম্যান

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট পর পর বেশ কয়েকটি মামলায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিচ্ছে, তখন ফের আদালতের দ্বারস্থ হন শগুফতা। মামলা দায়ের করেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। এক বছর পরে মার্চের প্রথম সপ্তাহে শুনানি হয় মামলার। যদিও নিজে আইন পড়েননি শগুফতা, তাও আর্থিক কারণে নিজের মামলার সওয়াল আদালতে নিজেই করেন তিনি। শগুফতার বিশ্বাস ছিল আদালতে ‘ন্যায়’ পাবেন। মামলা শুনে আদালত কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয় শগুফতার অভিযোগ গুরুত্বসহকারে দেখার।

আরও পড়ুনঃ মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার ৫টি পৌরসভার চেয়ারম্যান- ভাইস চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা, উচ্ছ্বসিত কর্মীরা

শগুফতার প্রতিক্রিয়া আদালতের ওপর তাঁর আস্থা ছিল তা আরো দৃঢ় হল। নিজের চাকরি হারিয়েছেন, মা-কে হারিয়েছেন আর কোন কিছুতেই ভয় করেন না তিনি। তাই এখন লড়াইটা শুধুই এক বেআইনি নির্মানের বিরুদ্ধে, সেই লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি।

তথ্য সূত্রঃ আনন্দ বাজার পত্রিকা

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here