নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ
‘তাজা জমজমাট পর্ব’ আর ‘শো মাস্ট গো অন’- এই দুই প্রতিশ্রুতি রাখতে টেলিপর্দার অভিনেতারা বাড়ি থেকে করছেন শুট৷ ৬০-৭০ জনের ইউনিট থেকে এখন ২-৩ জনে এসে ঠেকেছে ইউনিট। ঘরেই বসেছে মোবাইল ক্যামেরা। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেউ ধরছেন আলো, কেউবা করছেন ডায়লগ প্রম্পট। এভাবেই চলছে বিরাট কর্মযজ্ঞ। এহেন রোজ রুটিন নিয়ে কী বলছেন দিব্যজ্যোতি দত্ত, রুবেল দাস এবং অর্কজা আচার্য?
দিব্যজ্যোতি দত্ত (কিয়ান), দেশের মাটিঃ ঘরে বসে শুটের অভিজ্ঞতা এই প্রথম নয় আমার। গত বছরও করেছি। এমনকী এক ঘণ্টার মহা এপিসোডেরও শুট করেছি ঘরে বসে। অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে। কিন্তু করে তো ফেলেছিলাম। সেটা যেমন একটা অভিজ্ঞতা বা ট্রেনিং তেমনি পুরো সেট আপ, ভাইব্রেশনটা পাওয়া যায় না বাড়িতে বসে শুটিঙে। ফোনে ক্যামেরা করতে গেলে রেজুলেশন ড্রপ করে। তা সে যত দামী ফোনই হোক। ক্যামেরার কাজই আলাদা। কিন্তু ফোনেই সেই কাজটা করতে হবে সিরিয়ালটা রানিং রাখার জন্য। সমস্যা যেগুলো হচ্ছে তা হল, ধরুন আমি ছাদে শুট করছি, কেউ চলে এল৷ যেহেতু ফ্ল্যাট তাই কারোকে বারণ করা যায় না। কিংবা শুট চলাকালীন একটা পাখি ক্রস করল। কিংবা রাস্তায় কোনও ফেরিওয়ালা চেঁচাল। এই সব সমস্যা নিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। যে কোনও অভিজ্ঞতাই কাজে লাগে। এটাও একটা অভিজ্ঞতা। বলতে পারেন ট্রেনিং। সবকিছুই শিখে রাখা দরকার। তবে, ফ্লোরটা মিস করছি। ওখানে দুটো ডগি আছে৷ আমি গেলেই আমার গায়ে উঠে পড়ে। ওদের রোজ খেতে দিই আমি। এর মধ্যে একদিন গিয়েছিলাম ওদের খেতে দিতে। সহ অভিনেতাদের সঙ্গে গল্প আড্ডা মিস করছি খুব। তবে, গ্রুপে ডিরেক্টর সহ সকলের সঙ্গে কথা হয়। ভিডিও কল হয়। সিনিয়রদের সঙ্গেও কথা হয় অনেক। ১৫ তারিখের পর যদি লকডাউন উঠে যায় তাহলে হয়ত আমরা আবার ফ্লোরে ফিরব। সাবধানতা বজায় রেখে কাজ করব। টেকনিশিয়ান দাদারাও নিজেদের কাজে ফিরতে পারবেন।
অর্কজা আচার্য (নিরুপমা), ওগো নিরুপমাঃ ওয়ার্ক ফ্রম এখনও করিনি। আমাদের সিরিয়ালের বেশ কিছুটা ব্যাঙ্কিং করাই ছিল। তাই এখনও শুট ফ্রম হোম করতে হয়নি। তবে, করতে হবে হয়ত তাজা জমজমাট পর্ব দেখানোর জন্য। সিরিয়ালে শুটের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে আমি ছাড়াও আরও ১০০ টা মানুষ। সেক্ষেত্রে ঘরে বসে একা একা কাজটা করতে সমস্যা তো হবেই। আলো, মেক আপ, হেয়ার, ক্যামেরা সবই নিজেকে করতে হবে। খুব সমস্যাতেই পড়তে হবে বুঝতে পারছি। অন্যান্য সিরিয়াল যখন দেখছি তখন বুঝতে পারছি যে এসেন্সটা হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা তো ক্যামেরার সামনের মানুষ। তাই টেকনিকালি অত দক্ষ নই আমরা। তাছাড়া বিপরীতের মানুষগুলোকে পাব না, মানে যাদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমি সংলাপ বলি। সুতরাং কতটা কী ভালভাবে করতে পারব জানি না। চেষ্টা করব আপ্রাণ।
আরও পড়ুনঃ কেমন কাটছে শুট ফ্রম হোম জার্নি?
রুবেল দাস (সঙ্গীত), যমুনা ঢাকিঃ প্রথমে খুবই টেন্সড ছিলাম। ৬০-৭০ জনের ইউনিট নিয়ে কাজ হয় মেগা সিরিয়ালে। সেখানে ঘরে বসে ২/৩ জন মিলে করছি। আমার ফ্যামিলি মেম্বাররা টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করছে। দাদা ক্যামেরা ধরছে, বৌদি ডায়লগ প্রম্পট করছে। বৌদির মুখে ডায়লগগুলো শুনতে বেশ মজা লাগে। মা লাইট ধরছে। কখনও সিনে প্রদীপের দরকার হলে প্রদীপও ধরছে মা। সবাই মিলে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রথমে অসুবিধা হচ্ছিল বৈকি। তবে, এখন আনন্দে কাজ করছি।
এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলতেই হচ্ছে, টেকনিশিয়ান্সদের কাজ নিয়ে প্রোডিউসার এবং ফেডারেশনের মধ্যে একটা মতবিরোধ চলছে। আশা রাখি এই বিবাদ খুব শীঘ্রই নির্মূল হবে। শো মাস্ট গো অন, তাই সবাইকে সবার সহযোগিতা করে কাজটা করে নেওয়া উচিত। সব মিলিয়ে বলব কাজটা বেশ ডিফারেন্ট (different) এবং এনরিচিং (enreaching) লাগছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584