নিউজফ্রন্ট, ওয়েব ডেস্কঃ
সম্প্রতি কৃষ্ণাঙ্গ প্রাক্তন বাস্কেটবল খেলোয়াড় জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু ঘিরে গর্জে উঠেছিল গোটা বিশ্ব। এবার খোদ পশ্চিমবঙ্গে নজরে এল এক অপ্রীতিকর ঘটনার ছবি। এক্ষেত্রেও কৃষ্ণাঙ্গদের অমর্যাদা করা হয়েছে। আর তা নিয়ে রাজ্যজুড়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। বিতর্কের কেন্দ্র বিন্দুতে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুলের প্রাক প্রাথমিক শ্রেণীর ইংরেজি বই।
ইংরেজি পাঠ্যবইয়ে U অক্ষরের পরিচিতির জন্য লেখা হয়েছে UGLY, তার সঙ্গে এক কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের মুখের ছবি দেওয়া হয়েছে। নীচে বাংলায় লেখা হয়েছে ‘কুৎসিত’। তাই নিয়েই তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ধমানের নামি স্কুল বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুলের প্রাক প্রাথমিক বিভাগ থেকে ওই পাঠ্য বই বাতিলের দাবি তুলেছেন অভিভাবকরা। এই ধরণের পাঠ শিশুমনে কুপ্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন তাঁরা। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রতিবাদে সরব অনেকে।
আরও পড়ুনঃ বড়বাজারে চামড়ার ব্যাগের গুদামে আগুন, ঘটনাস্থলে দমকলের ৫ ইঞ্জিন
ইতিমধ্যেই বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের গোচরে এনেছেন অভিভাবকরা। জেলা শিক্ষা দফতর বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে তা রাজ্য শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের বিস্তারিত জানিয়েছেন। রাজ্য শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ওই বই যত শীঘ্র সম্ভব তুলে নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও প্রাথমিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত টিচার ইন চার্জকে সাসপেন্ডও করেছে শিক্ষা দফতর। এমনকি ওই বই যাতে আর পড়ানো না হয় তা নিশ্চিত করতেও জেলা শিক্ষা দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ অঙ্গনওয়াড়ী সুপার ভাইজারের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি কর্মীদের
বর্ধমানের রামকৃষ্ণ পল্লি এলাকার বাসিন্দা সুদীপ মজুমদার প্রথম বিষয়টি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানান। সুদীপবাবু কলকাতার বঙ্গবাসী (সান্ধ্য) কলেজের অধ্যাপক। বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুলের প্রাক প্রাথমিকের ছাত্রী। সুদীপবাবু বলেন, মেয়েকে পড়াতে গিয়ে তিনি দেখেন, এসব মানবিকতা বিরোধী পাঠ দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি পূর্ব বর্ধমান জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) স্বপনকুমার দত্তকে জানান।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক তাঁকে জানান, এই বইটি সরকারি নয়। রেফারেন্স বই। তবে স্কুলের সঙ্গে কথা বলবেন বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন। এই ঘটনার কথা কানে জেতেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা খুবই স্তম্ভিত। প্রি-প্রাইমারিতে ইংরেজি শেখানোর নামে কী হচ্ছে? আমরা এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী নই”। শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, “এটা সরকারি বই নয়। সরকারি ছাপাখানায় তা ছাপেনি। বইটি আমরা চাপিয়েও দিইনি। বাংলায় এই বই চলতে পারে না। সেটি যাতে বাংলার কোনও স্কুলে পড়ানো না হয় তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এই নিন্দাজনক ঘটনার জন্য স্কুলের দুই শিক্ষক শ্রাবণী মল্লিক ও বর্ণালী রায়কে সাসপেন্ড করা হয়েছে।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584