মোহনা বিশ্বাস, কলকাতাঃ
করোনার কবলে গোটা বিশ্ব। সংক্রামিতের সংখ্যা কোনোভাবেই কমছে না। তবে সুস্থতার হার কিছুটা বেড়েছে। এবার দেশের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। করোনা ভয়কে জয় করে দীর্ঘ এক বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আসছে বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। এই বছর বাংলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে ছোটো বড় সব শহরে সম্পূর্ণ বিধিনিষেধ মেনেই এই উৎসব পালন করা হবে।
করোনার সঙ্কটজনক পরিস্থিতি কাটিয়ে বর্তমানের নিউ নর্মাল পর্বেই হবে পুজো। তাই আনন্দে মাতোয়ারা আপামর বাঙালি। করোনা অতিমারীর সময়ও মনকে শক্ত করে, খুশিতে মেতে থাকতে পুজোর দিনগুলিতে নতুন পোশাকে সেজে উঠবেন পরিবারের ছোট সদস্য থেকে বয়ঃজেষ্ঠ্য সকলেই। কিন্তু যাঁদের বছরের প্রতিটা দিন, প্রতিটা মুহূর্ত কাটে শুধুই অবহেলায়, তাঁদের কী হবে? তাঁরা কী সমস্ত আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকবেন? নাহ্, সেই সব অবহেলায় দিন কাটানো মানুষগুলি যাতে পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে পারেন তারই ব্যবস্থা করল ‘শারদীয়া’।
আরও পড়ুনঃ কোভিড পরবর্তী দ্বিতীয় প্রশাসনিক বৈঠকেও দরাজ মুখ্যমন্ত্রী
এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, তথাকথিত কোনো এনজিও নয়। প্রতি বছরই দুর্গাপুজোর আগে তাঁরা একটি কর্মসূচী পালন করেন। যার নাম ‘শারদীয়ার আনন্দধারা’। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে শারদীয়া দুঃস্থদের নতুন পোশাক দেয়। প্রতি বছরের মত এবছরও শারদীয়া তাদের এই কর্মসূচী শুরু করেছে ২ অক্টোবর থেকে। ‘শারদীয়ার আনন্দধারা’ এবার পদার্পন করেছে অষ্টম বর্ষে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে পিছিয়ে পড়া মানুষের হাতে নতুন পোশাক, পড়াশোনার সামগ্রী, দৈনন্দিন সামগ্রী তুলে দেওয়াই এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুনঃ পূর্বস্থলীতে করোনা জয়ীদের সংবর্ধনা প্রদান
শতাব্দী প্রাচীন ‘দি রেফিউজ’ অনাথ আশ্রম থেকেই এই বছরের ‘শারদীয়ার আনন্দধারা’র সূচনা হয়। ২ অক্টোবর এই আশ্রমের শিশু এবং বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের হাতে নতুন পোশাক ও দৈনন্দিন সামগ্রী তুলে দেয় শারদীয়া। এবছর মাত্র একমাসের প্রস্তুতিতে ‘শারদীয়া’-র সদস্যগণের নিঃস্বার্থ ও নিরলস প্রয়াসে সুসম্পন্ন হয় ‘শারদীয়া’-র প্রথম আনন্দধারা।
কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বা কোনো বাণিজ্যিক সংস্থার সাহায্য ছাড়াই, শুধুমাত্র সদস্যদের অনুদান ও তাঁদের সংগৃহিত অর্থ সংগ্রহেই শারদীয়ার এই সাফল্য। এখনও বহু অনাথ শিশু, পথশিশু ও দুঃস্থ শিশু এবং বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের হাতে নতুন পোশাক তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ‘শারদীয়া’।
আরও পড়ুনঃ সিনেমা দেখতে গেলে ফোন নম্বর দিতে হবে, নয়া নির্দেশিকা জারি
শুধুমাত্র কলকাতা নয়, কলকাতার গন্ডি ছাড়িয়ে এবার কলকাতা লাগোয়া জেলাগুলিতে বসবাসকারী মানুষের মুখেও হাসি ফোটাতে অঙ্গীকারবদ্ধ ‘শারদীয়া’।
শারদীয়ার অন্যতম সদস্য জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, “মূলত দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে আনন্দধারা শুরু হলেও, এটির ধারাবাহিকতা শারদীয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট বজায় রাখে সারাবছর ধরেই। যার মূল উদ্দেশ্য যথাসম্ভব আমাদের চারপাশের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলির পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের হাতে নতুন পোশাক, শীতবস্ত্র, পড়াশোনার সামগ্রী, দৈনন্দিন সামগ্রী তুলে দেওয়া এবং বহু আনন্দ থেকে বঞ্চিত মানুষগুলির মুখে হাসি ফোটানো”।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584