রাজ্যে আজ নতুন করে আক্রান্ত ১১২, মৃত্যু ৪

0
78

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

সংক্রমণের সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে ৪২ দিনের লকডাউনে প্রথম বার একদিনেই ১০০ পার করল পশ্চিমবঙ্গ। বুধবার নবান্নে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ১১২ জন নতুন সংক্রামিত হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৫৬। গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু হওয়ায় করোনা মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে হল ৭২।

corona positive | newsfront.co

যদিও করোনা আক্রান্ত ১৪৪ জনের এখনও মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে বাকি ৭২ জনের কো-মরবিড বা মৃত্যুকালীন অন্যান্য উপসর্গ ছিল। গত ২৪ ঘন্টায় মাত্র ১ জন সুস্থ হওয়ায় সুস্থদের সংখ্যা ২৬৫ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ১০৪৭ জন।

Alapan Banerjee | newsfront.co
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরাষ্ট্র সচিব। চিত্রঃ এএনআই

একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার। বর্তমানে রাজ্যের মোট ১৫টি ল্যাবরেটরিতে করোনা টেস্ট হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ১০টি সরকারি ও ৫টি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। কোনও কোনও জায়গায় করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়ো টেস্ট করে প্রতারণা করা হচ্ছে। এরকম একটি ক্ষেত্রে পুলিশ অভিযোগ পেয়েই ব্যবস্থা নিয়েছে। তাঁর পরামর্শ, ‘আইসিএমআর অনুমোদিত ল্যাবরেটরি ছাড়া আর কোনও ল্যাবরেটরিতে ব্যক্তিগত ভাবে করোনা পরীক্ষা করাতে যাবেন না।’

এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ , মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ, মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে করোনা পরীক্ষার জন্য ল‍্যাবগুলি কাজ করছে। আরও ১০টি সরকারি ল্যাব-সহ ১২টি পরীক্ষাগারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে আইসিএমআর-এর কাছে। এনআরএস ও বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ করোনা টেস্টের জন্য প্রস্তুত। প্রয়োজনীয় অনুমতি পেলেই ওই দুই মেডিক্যাল কলেজে করোনা টেস্ট শুরু হয়ে যাবে। এই মুহূর্তে রাজ্যে ৬৭টি করোনা হাসপাতাল আছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকেও করোনা হাসপাতাল হিসেবে চালু করার কথা রয়েছে। ফলে রাজ্যে করোনা হাসপাতাল দাঁড়াবে ৬৮ টি। এখনও পর্যন্ত ৬৭ করোনা হাসপাতালে ৮০৩৬টি বেড আছে এবং ২৭১টি ভেন্টিলেটর আছে। এছাড়াও রাজ্যের করোনা হাসপাতালগুলিতে ৮৬০টি আইসিইউ বেড রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৩.০৩% বেড ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ৩০টি ক্ষেত্রে ভেন্টিলেটর ব্যবহারের প্রয়োজন পড়েছে।

টেস্টের সংখ্যা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ৩০১৪১টি নমুনা এখনও পর্যন্ত টেস্ট হয়েছে রাজ্যে। এর মধ্যে মঙ্গলবারই ২৫৭০ টি টেস্ট করা হয়েছে। আগে যেখানে দিনে মাত্র ২৫০ টি টেস্ট করা হত, এখন তা অনেকটাই বেড়েছে।

তিনি আরও জানান, এই মুহূর্তে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মাসিক হাজার টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে আড়াই লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক উপকৃত হয়েছেন। সামনের সারির করোনা যোদ্ধাদের জন্য ১০ লক্ষ টাকার বিমাও চালু করা হয়েছে সরকারের তরফে, যার মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিকরাও। এর মধ্যেই রাজ্যের ৬ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্যের আশা কর্মীরা। রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি অনুযায়ী প্রত্যেকদিন কনটেনমেন্ট জোনের পরিধি পরিবর্তিত হচ্ছে। রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে গেলেই তা জানতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট করেন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘করোনাতে মারা গেলে ডেথ সার্টিফিকেট কী হবে, তাই নিয়ে একটা বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করছি, প্রোটোকল মেনটেন করে ডাক্তাররাই ডেথ সার্টিফিকেট লিখবেন। এতে অনর্থক বিভ্রান্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’ রাজ্যে মানুষের ফিরে আসা অথবা বেরিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে এগিয়ে বাংলাতেও যেখানে মানুষ নিজের রাজ্যে ফিরতে অথবা পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসতে আবেদন করতে পারবেন।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here