সিমা পুরকাইত,দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ
বেলা বাড়তেই জনস্রোত আছড়ে পড়লো সাগরে আজও সকালে চলল স্নান।সোমবার ও মঙ্গলবার দু দিনই চলছে এই পূর্ণস্নান।যার জন্য সাগরে উপস্থিত ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের তীর্থযাত্রীরা।সাগর মেলাকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে তৈরি প্রশাসন। আর এই মহেন্দ্রক্ষনের জন্য সমস্ত রকমের পরিষেবা গত কয়েক দিন ধরে চালু রাখা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।বিকাল থেকে জমছিল ভীড়।অস্থায়ী শেডগুলি থেকে ভীড় উপচে তা চলে এসেছে খোলা আকাশের নিচে।উত্তরে হাওয়া আর প্রবল ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ পূন্যার্থীর মুখে একটাই আওয়াজ কপিলমুনি কি জয়।গঙ্গা মাই কি জয়।পূর্ণ্যস্নানের মহেন্দ্রক্ষন নিয়ে অন্যবছরের মত এবছরও নানা মুনির নানা মত।এক দল সাধুসন্ত মনে করেন এবারের ১৪ তারিখ ভোর থেকে স্নান শুরু হয়েছে।আর তা চলবে ১৫ তারিখে ১১.৩০ মিনিট পর্যন্ত।আর ১৫ তারিখে সকাল ৮.২২ মিনিট হল মহেন্দ্রক্ষন। আর সব থেকে পূন্য সময় এটি।পূণ্যের অবগাহনে ডুব দিতে তাই ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন সকলেই।শুধু ভারতবর্ষ নয়,ভারতের বাইরে থেকেও বহু পূণ্যার্থী এসে ভীড় করেছেন গঙ্গাসাগর মেলাতে। সাগরসঙ্গমে স্নান সেরে কপিলমুনি মন্দিরে পূজা দিচ্ছেন পূণ্যার্থীরা।রাতের অন্ধকার বা ভোরের কুয়াশা কোনও কিছুই বাধ সাধতে পারছে না পূণ্যার্থীদের।আট থেকে আশি সকলের একটাই উদ্দেশ্য পূণ্য অর্জন। তাই ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে কেউ দিয়েছেন গঙ্গায় ডুব আবার কেউ বা অপেক্ষা করছেন ডুব দেওয়ার জন্য। আর করবে নাই বা কেন?গঙ্গার ন্যায় গঙ্গা সাগরের মাহাত্ম্য অপরিসীম।আমরা মহাভারতে দেখেছি দেবর্ষি নারদ মহারাজ যুধিষ্ঠিরের নিকট গঙ্গা সাগরতীর্থের মাহাত্ম্য কীর্ত্তন করেছিলেন।যাহাতে বলা হয়েছে দশটি অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল এক গঙ্গাসাগর স্নানে নিষ্পন্ন হয়।মহাভারতে বলা হয়েছে হরিদ্বার প্রয়াগ ও গঙ্গাসাগর সঙ্গমে গঙ্গা অধিক পূন্যময়ী।আর তাই সবতীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার।
প্রশাসনের পরিসংখ্যান এবং রাজ্যের মন্ত্রীদের দাবি ইতিমধ্যে প্রায় দশ থেকে বারো লক্ষাধিক পূণ্যার্থী সাগরে এসে পোঁছেছেন।অথবা মেলা থেকে স্নান সেরে ফিরেও গেছেন।পুরো মেলা পরিচালনার জন্য সাগরে উপস্থিত আছেন রাজ্যের তিনজন মন্ত্রী। সমগ্র মেলা তদারকির জন্য উপস্থিত আছেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও যুবকল্যান দফতরের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস এবং বিদুৎ দফতরের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।সাগর মেলায় নজরদারির জন্য বাবুঘাট থেকে সাগরতট পর্যন্ত নজরদারির জন্য প্রায় আটশো সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।সাতটি ড্রোন পাহারা দিচ্ছে।মেগা কন্ট্রোল রুম বানানো হয়েছে।প্রতিটা ছবি ড্রোনের ছবি ও ক্যামেরার ছবি পাঠানো হচ্ছে এই কন্ট্রোল রুমে।জোয়ার ভাটার কারনে ভেসেল বা লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ থাকলে তা বারবার জানানো হচ্ছে মাইকিং করে।বড় এলসিডি টিভিতে ভেসে উঠছে জোয়ার ভাঁটার সময়।ইতিমধ্যে গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।নামখানা থেকে ফেরিঘাটে আসার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এই ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের দাবি।এদিন সংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন,ইতিমধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষ তীর্থযাত্রী স্নান সেরে ফিরে গেছেন।পুন্যস্নান চলছে আরো মানুষ আসবেন।সুষ্ঠু ভাবে মেলা চলছে।ভারতের কোনও মেলাতে এত ভালে ব্যবস্থা থাকে না।এদিন সাগরে কপিল মুনির মন্দিরে পূজাদেন অরুপ বিশ্বাস।স্নান সারেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।কুম্ভমেলাতে আগুন লাগানোর ঘটনা থেকে সাগর মেলার অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও ও মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস ঘুরে ঘুরে খতিয়ে দেখেছেন
আরও পড়ুন: গৃহশিক্ষক কল্যান সমিতির গণডেপুটেশন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584