শরীয়তুল্লাহ সোহন, ওয়েব ডেস্কঃ
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের মুরি শহরে শনিবার ভারী তুষারপাতে ১০ শিশুসহ অন্তত ২২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। মূলত তুষারপাতে গাড়ি আটকে পড়ে এসব ব্যক্তির মৃত্যু হয়। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী ইসলামাবাদের উত্তরে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত মুরি শহরে শীতকালীন তুষারপাত দেখতে অসংখ্য মানুষ সমাগত হয়। চলমান তুষারপাতে সেখানে প্রায় এক হাজার গাড়ি আটকা পড়ে। সেখানে ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয়েছিল। এর পর শুক্রবার দিবাগত রাতভর এসব গাড়ির ওপর তুষারপাত অব্যাহত থাকে।
স্থানীয় জরুরি সেবা রেসকিউ ১১২২-এর তথ্য মতে, নিহতদের মধ্যে এক পুলিশসদস্য, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের ছয় সন্তান রয়েছে। এ ছাড়া আরেকটি পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ছয়জন তাদের গাড়ির মধ্যে ঠান্ডায় জমে গিয়ে প্রাণ হারান।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পর্যটকদের প্রাণহানির ঘটনায় এক টুইট বার্তায় শোক প্রকাশ করেছেন। ওই টুইটে তিনি বলেন, অভূতপূর্ব তুষারপাত ও আবহাওয়া পরিস্থিতি পরীক্ষা না করে লোকদের এমন ভিড় জেলা প্রশাসনকে অপ্রস্তুত করে ফেলেছে। তিনি ঘটনার তদন্ত ও এই ধরনের বিপর্যয় প্রতিরোধে করণীয় ঠিক করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তুষারপাতে ঢাকা সড়ক পরিষ্কার ও আটকে পড়া গাড়ি উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ বলেন, অতিরিক্ত লোক সেখানে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে গত শুক্রবারই স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে যে, মুরিতে পর্যটকেরা আটকে পড়েছে। এর পর শনিবার ভারী তুষারপাত ও আটকে পড়া গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ মুরিকে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, আটকে পড়া সংশ্লিষ্ট গাড়িগুলোর চারপাশ তুষারে ঠেকে গেছে, ছাদেও তুষার জমাট বেঁধে আছে।
আরও পড়ুনঃ ১ লক্ষ ৬০ হাজার ছুঁইছুঁই দৈনিক সংক্রমণ, ওমিক্রন আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়াল ৩ হাজার ৬২৩
মুরি শহরে আটকে পড়া উসমান আব্বাসি নামের এক পর্যটক বার্তা সংস্থা গুলোকে ফোনে জানিয়েছেন, শহরটিতে শুধু পর্যটকেরা নয়, স্থানীয়রাও নানা সমস্যায় পড়েছেন। এর মধ্যে গ্যাস ও পানির অপ্রতুলতা অন্যতম। স্থানীয়রা আটকে পড়া গাড়ির যাত্রীদের জন্য কম্বল ও খাবার সরবরাহ করছে। যারা মূল শহরে পৌঁছাতে পেরেছেন তাদের সেখানকার সরকারি ভবন ও স্কুলগুলোতে থাকতে দেওয়া হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে সাড়ে সাত হাজার ফুট ওপরে অবস্থিত মুরি ১৯ শতকে ব্রিটিশদের হাতে তৈরি। এটি তারা সৈনিকদের চিকিৎসা শিবির হিসেবে গড়ে তুলেছিল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584