৪৮ ঘন্টা পরেও বিধ্বস্ত তিলোত্তমা, নাজেহাল পুরসভা -পুলিশ, পানীয় জল বিদ্যুতের দাবীতে বিক্ষোভ

0
102

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

ঘূর্ণিঝড় আমপান চলে যাওয়ার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৪৮ ঘন্টা। কিন্তু তার তাণ্ডবে শুধু গ্রামাঞ্চল নয়, তছনছ হয়ে গিয়েছে গোটা কলকাতা শহরটাই। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে মহানগরের একাধিক জায়গায় নেই পানীয় জল-বিদ্যুৎ সংযোগ। রাজপথ থেকে গলিপথে একাধিক জায়গায় উপড়ে পড়ে আছে গাছ থেকে লাইটপোস্ট।

storm | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

শহরের একাধিক এলাকায় আসেনি বিদ্যুৎ, নেই পানীয় জলও। আর তার জেরেই শহরের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ অবরোধ করছেন স্থানীয় মানুষ। একযোগে পুলিশ ও পুরসভার কর্মীরা কাজ করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। শহরের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করছেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা থেকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

officer | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

শুক্রবার সকাল থেকে বেলগাছিয়া, অজয়নগর, যাদবপুর-সহ শহরের একাধিক এলাকায় অবরোধ শুরু করেন সাধারণ মানুষ। অজয়নগর, যাদবপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় নেই বিদ্যুৎ, পানীয় জল। এমনকি এত সময় গড়িয়ে যাওয়ার পরেও রাস্তা থেকে গাছ কাটাও হয়নি। পুরসভার কর্মীরা আসেননি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। সেই কারণেই স্থানীয় কাউন্সিলর অনন্যা চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা।

storm effect | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

যদিও কাউন্সিলরের দাবি, ঝড়ে এত গাছ পড়েছে, তাতে সব পরিস্কার করতে সময় লাগবে। পুরসভার সমস্ত কর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছেন। কিন্তু একটু ধৈর্য্য ধরতেই হবে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এছাড়াও, বেলগাছিয়া মিল্ক কলোনি ও যশোর রোডের বিভিন্ন এলাকায় অনেক গাছ পড়েছে, তা এখনও সরানো যায়নি।

আরও পড়ুনঃ আমপানে ক্ষতির ধাক্কা মালদহের আমে

Amfan | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

বহু এলাকা বিদ্যুৎ খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ থেকে টেলি-ইন্টারনেট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে লেকটাউনে ক্ষতিগ্রস্ত বিগ বেনের ঘড়ি। ভেঙেচুরে দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে ঘড়ির ডায়াল ও কাঁটা। গাছ উপড়ে পড়েছে বেলগাছিয়া এলআইজি আবাসনেও। বিদ্যুতের তারে গাছ পড়ায় পঞ্চসায়রের বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহাসিক মূর্তি ভেঙে মাটিতে মিশে গিয়েছে।

Amfan | newsfrontco
নিজস্ব চিত্র

টালিগঞ্জের কুদঘাটেও পানীয় জলের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল থেকেই পুরসভা কর্মীদের সঙ্গে গাছ কাটায় হাত লাগিয়েছে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল। এমনকি গাছ কাটতে দেখা গিয়েছে বহু সাব ইনস্পেক্টর থেকে কনস্টেবলকেও। বহু জায়গায় মানুষকে বিকল্প পথের জোগান থেকে পানীয় জলের হদিশও দিচ্ছে পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে গতি আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্র দান

 

watch tower | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

অন্যদিকে, পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ পর্যন্ত শহর জুড়ে আমফানের দাপটে প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি গাছ উপড়ে পড়েছে। ১০০-র বেশি ল্যাম্পপোস্ট ভেঙে পড়েছে। ময়দান, সল্ট লেক, গড়িয়া হাট , গল্ফ গ্রিন, সাদার্ন এভিনিউ, বিধান সরণি ইত্যাদি জায়গায় গাছগুলি অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিস্তীর্ন অঞ্চল। ফলে যাতায়াতে যথেষ্টই কষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের।

officer | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

কলকাতার ডক এলাকায় ৮০-১০০ টি গাছ পড়ে গেছে। গাছের পড়ে প্রচুর পরিমাণে বাস এবং গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গলফগ্রিন মিনিবাস স্ট্যান্ড ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। ডকে একটি জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিকল্পগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে।

এদিকে ঝড়বৃষ্টি হলেই বেহালাবাসীর সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টির জমা জল। কিন্তু এবারে জেনেরেটার চালিয়ে ডবল পাম্প বসিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে অঞ্চলের জল। তবে দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছেন বেহালাবাসী।

তবে ম্যানটন এলাকায় কিছুটা বিদ্যুৎ থাকায় মানুষজন মোবাইল ফোন বা জরুরী কাজের জন্য সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন আত্মীয়-পরিজন এর ঘরে। বিদ্যুৎ না থাকায় পানীয় ও ব্যবহার যোগ্য জলের আকাল রয়েছে। এ সময় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পরিস্থিতির লাভ উঠিয়ে ছোট ছোট জেনারেটর সেট দিয়ে জল তুলে দিচ্ছেন। পরিবর্তে মোটা টাকা আদায় করছে এলাকাবাসীর কাছ থেকে। বিপদে পড়ে সেটাই মেনে নিতে হচ্ছে নিরুপায় মানুষকে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here