শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর ডাকা জনতা কার্ফুর পরেই দেশ এবং বাংলায় শুরু হয়েছিল লকডাউন। ঘরবন্দি হয়ে কেটে গিয়েছে পুরো একটা মাস। পিলিশি হিসেব বলছে, এই লকডাউন পর্বে বাংলায় অপরাধের হার প্রায় শূন্যে নেমে গেলেও একশ্রেনীর মানুষের মধ্যে আইন না মানার মানসিকতা ভীষণ রকম ভাবে বেড়ে গিয়েছে। তার সব থেকে বড় প্রমাণ হল এই এক মাসে লকডাউন ভেঙে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতারির সংখ্যাটাই।
পুলিশের একটি বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ দিনে রাজ্যে গ্রেফতার হয়েছেন ৫০৬৫২ জন। তার মধ্যে শুধু কলকাতা পুলিশের হাতেই গ্রেফতার হয়েছেন ২০৭৬৬ জন। মাস্ক না পরে রাস্তায় বের হওয়া, রাস্তায় অকারণে থুতু ফেলা, অকারণে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো, অভব্য আচরণের মতো একাধিক অভিযোগে মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মাস্ক না পরে বেরোনো আর অভব্য আচরণে গ্রেফতারের সংখ্যাই বেশি।
কিন্তু এরপরেও মানুষের মধ্যে সচেতনতার লক্ষণ নেই। তাই কিছুদিন বিরতি দেওয়ার পর পুলিশকে আবার ফিরে যেতে হয়েছে আগের পুরানো ফর্মে। অনেকেই রাস্তার মোড়ে ছুটি কাটানোর ভঙ্গিমায় গল্প করছেন, গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বাজার করছেন । তাই এখনও পুলিশকে চালাতে হচ্ছে সেই গ্রেফতারির পালা।
আরও পড়ুনঃ জোন ভেদে ২১মে পর্যন্ত রাজ্যে চলবে লকডাউন
মারণ ভাইরাস নভেল করোনাকে ঠেকাতে হলে সবার আগে যেটা দরকার তা হল লকডাউন ঠিক মতো মেনে চলা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক আর স্টানিটাইজার ব্যবহার করা। কিন্তু এসব বিধি এখনও মানুষকে পুরোপুরি মানতে পারানো যাচ্ছে না। বার বার স্থানীয় প্রশাসন থেকে মাইকিং করে প্রচার করা হলেও সবাই সব কিছু মেনে চলছেন না। বারবার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কড়া ব্যবস্থার হুমকি দিচ্ছেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও।
মানুষ সামাজিক দূরত্ব মানছিলেন না বলে কলকাতার বেশ কিছু বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেই বাজারকেই কাছাকাছি কোনও মাঠে বা ফাঁকা জায়গায় নির্দিষ্ট দূরত্বে বসিয়েছে পুলিশ। এছাড়া রাজ্য বা কলকাতার কোন কোন এলাকায় সব থেকে বেশি মানুষ লকডাউনকে উপেক্ষা করছে তা চিহ্নিত করতে বিভিন্ন জায়গায় ড্রোনও ওড়াচ্ছে পুলিশ। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেন মানুষ-পুলিশের লুকোচুরি থামার লক্ষণ নেই। তবে পুলিশ যে এই কড়া ব্যবস্থা চালিয়ে যাবে, তা বলছেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারাই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584