তরুন প্রজন্মে আস্থা সিপিআইএমের, দেশের সর্বকনিষ্ঠ মেয়র পদে ২১ বছরের আর্যা

0
118

নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ

বাম দলগুলির কাছে গুরুজন মানেই সঠিক, এমনটা কয়েক দশক ধরে চলে আসা ধারণা। নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব না ছাড়ার জন্য প্রায়শ সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। এবার তার বিপরীতে গিয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত নিল কেরালার সিপিআইএম। দেশের সর্বকনিষ্ঠ মেয়র পেতে চলছে তিরুঅনন্তপুরম।

aarya rajendran | newsfront.co
আর্যা রাজেন্দ্রনই

২১ বছরের এক তরুণীকে মেয়র পদের জন্য বেছে নিয়েছে কেরালা সিপিআইএমের সম্পাদকমণ্ডলী।অল সেন্ট’ স কলেজের অঙ্কে অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আর্যা রাজেন্দ্রনই কেরালার রাজধানী শহর তিরুঅন্তপুরমের পরবর্তী মেয়র। আগাগোড়া বামপন্থী পরিবারের মেয়ে আর্যা, তার গোটা পরিবারই সিপিএমের সদস্য। তাই রাজনীতির আবহেই তাঁর বেড়ে ওঠা।

আরও পড়ুনঃ পৌষ মেলা লোকাল ফর ভোকালের আক্ষরিক রূপ- বিশ্বভারতীর শতবর্ষে জানালেন আচার্য মোদী

পঞ্চম শ্রেণীতে পড়তে পড়তেই পার্টির কাজের সঙ্গে তার যোগাযোগ। পরবর্তীকালে এসএফআই-এর সক্রিয় সদস্য এবং তারও পরে রাজ্য কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন আর্যা।কেরলের মুদাভানমুগল ওয়ার্ড থেকে তিরুঅনন্তপুরম পুরসভার লড়াইয়ে সিপিআইএম প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন আর্যা৷ কাউন্সিলর হিসাবে প্রথমে নির্বাচিত হন তিনি৷ দক্ষিণের বামপন্থী এই কন্যা স্থানীয় নির্বাচনে সিপিআইএমের কনিষ্ঠতম প্রার্থী ছিলেন।

বিপক্ষের ইউডিএফ প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হন তিনি৷ পেরুরকাদা ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্বকারী দলের প্রবীণ প্রার্থী জামিলা শ্রীধরন ও গায়ত্রী বাবুর মধ্যে যে কোনও একজনকে প্রথমে মেয়র করার কথা বিবেচনা করা হয়েছিল।
তবে, কেরালায় গ্রাম ও শহরে স্থানীয় স্তরের নির্বাচনগুলিতে তারুণ্যের আধিক্য দেখা গিয়েছে। জয়জয়কার শাসক জোট এলডিএফের নতুন মুখের।

আরও পড়ুনঃ অনড় কেন্দ্র, দাবি আদায়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কৃষকরা আন্দোলনের পথ ঠিক করতে বৈঠকে

তাই বামশাসিত কেরল চাইছে পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি রাখতে। মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নির্বাচনে এলডিএফ ছ’টির মধ্যে পাঁচটিতেই জিতেছে বামেরা৷ জেলা পঞ্চায়েতেও ভাল ফল করেছে৷ তাই সম্মিলিতভাবে দাবি ওঠে জামিলার বা গায়ত্রীর পরিবর্তে নতুন কোনও মুখকে মেয়র করার জন্য ৷ এরপর সিপিআইএম রাজ্য কমিটিই মেয়র পদে আর্যার নাম প্রস্তাব করে৷

মেয়র পদে শনিবারই তাঁর নাম ঘোষণা হতে পারে। তার আগে দলের সিদ্ধান্তে খুশি আর্যা। তিনি বলেছেন, বামপন্থী আদর্শ মেনেই পুরপ্রশাসনের কাজ হবে। দলে এই কাজের যাঁদের অভিজ্ঞাতা রয়েছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই কাজ করবেন তিনি।প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হাতে এলেও পড়াশুনো চালিয়ে যাবেন বলেই জানিয়েছেন আর্যা রাজেন্দ্রন। রোজ ক্লাসে যেতে না পারলেও তাঁর কলেজ ও শিক্ষকরা এ বিষয়ে যথেষ্ট সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন এমনটাই জানিয়েছেন এই মেধাবী ছাত্রী।

আরও পড়ুনঃ লকডাউনের মাশুল উসুল! নভেম্বরের বিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ১০ কিস্তিতে বকেয়া টাকা নেবে সিইএসসি

মাঝামাঝি কোন রাস্তা খুঁজেই করে পড়াশুনো ও রাজনীতির দূরত্ব দূর করবেন আর্যা।বাম রাজনীতির নতুন প্রজন্মের কাছে আপাতত রোল মডেল তিরিঅনন্তপুরমের ভাবী মেয়র। আর্যার বাবা ইলেকট্রিশিয়ান ও মা এলআইসি এজেন্ট। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার হলেও কখনই মেয়েকে তাঁরা দলের কাজে বাধা দেননি। আর্যার কথায়, গত কয়েক বছরে কেরালার শহর থেকে গ্রামে- সর্বত্র তাঁকে দলের কাজে ঘুরতে হয়েছে।

কিন্তু রাজ্যের বাইরে একবার মাত্র মুম্বই গিয়েছিলেন ক্লাস সিক্সে পড়ার সময়। তাও সেই মুম্বই ভ্রমন ছিল তাঁর মায়ের অফিস সূত্রে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো যাতে করা যায় সেজন্য আর্যার বড় দাদা এখন মধ্য প্রাচ্যে কর্মরত। পেশায় অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়র তিনি।

আরও পড়ুনঃ অর্ধসত্য বলে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী, কৃষক বঞ্চনা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে জবাব মুখ্যমন্ত্রীর

কোভিড পরিস্থিতি যেভাবে সামাল দিয়েছে কেরালা, তাতে এই রাজ্য আপাতত দেশে এবং বিদেশেও এখন মডেল দক্ষিণের এই রাজ্য, তার নেপথ্যে রয়েছেন কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজী। আর্যার বিশেষ পছন্দের নেত্রী এই শৈলজা। বাম আদর্শে দীক্ষিত হলেও আধ্যাত্মিকতার ইতিবাচক শক্তিতে বিশ্বাসী সে। মায়ের সঙ্গে মন্দিরেও যান। ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বলেই মনে করেন আর্যা। তবে ধর্মীয় কুসংস্কারের তীব্র বিরোধী সে।

তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্বে এগিয়ে আনা হচ্ছে। খুশি সিপিএমের প্রবীণ নেতৃত্ব। দলের নেতা তথা মন্ত্রী কে সিরেন্দ্রন এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “নতুন প্রজন্মের দূরদৃষ্টি, কাজের ইচ্ছাই দেশকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে। আমি আর্যাকে ছোট থেকে চিনি। ওর লড়াই স্বচক্ষে দেখেছি। ওর প্রায় সমবয়সী বহু আইএএস অফিসার কাজ করছেন। আমি নিশ্চিত ও ভালো ভাবেই কাজ করবে।“

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here