নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদঃ
শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণে চোখের জলে দিন কাটছে অসুস্থ অসহায় এক পরিবারের। ছয় মেয়ে এক ছেলে নিয়ে রিক্সা চালিয়ে কোনো রকমে চলতো সংসার। আয় বলতে কেবলই ইয়ামিন ওরফে সেন্টুর রিক্সা বর্তমানে টোটো গাড়ি। গত বছর লকডাউনে বন্ধ ছিল কাজ ফলে সংসারে দেখা দেয় আর্থিক অনটন, সংসার চালাতে করতে হয় ধার-দেনা, শুরু হয় মানসিক চাপ। আর তা থেকেই হটাৎ করে শরীর অসুস্থ হয়ে যায়, এবং চিকিৎসক জানায় প্যারালাইসিস হয়েছে তাঁর।

সেই যে প্রায় এক বছর আগে অসুস্থ হয়ে বিছানা পড়েছে এখনো পর্যন্ত নিজে থেকে কাজ তো দূরের কথা হাঁটাচলাও করতে পারেনা। স্ত্রী শুকরুন্নেশার সাহায্যে ধরে ধরে স্নান, খাওয়া দাওয়া, হাসপাতালে যাওয়া সবকিছুই করতে হয়। দীর্ঘ এক বছর ধরে সংসারের কোনো আয় না থাকায় অসহায় পরিবারকে ডাক্তার দেখার জন্য কাতারে সাহায্যের আবেদন করতে হয়। কিন্তু এভাবে কতদিন চলবে চোখ থেকে অশ্রু ঝরে ইয়ামিনের, কথা বন্ধ করে সুদূরে দৃষ্টি ,মনে হয় পৃথিবীর সমস্ত গ্লানি দুঃখ গ্রাস করেছে তাকে।

এমনই ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের জেলার বহরমপুর ব্লকের অন্তর্গত কর্ণসুবর্ণের রাঙামাটি চাঁদপাড়া অঞ্চলে ডাবকাই গ্রামের অসহায় নিরুপায় এক পরিবারে। নাম ইয়ামিন সেখ, পরিবারের ছয় মেয়ের মধ্যে খুব কষ্টে পাঁচজনের বিয়ে হয়েছে, একটি মেয়ের বিয়ে এখনো বাকি বর্তমানে নবম শ্রেণীর ছাত্রী। এক ছেলে রয়েছে কিন্তু সেও শারীরিক ও মানসিক ভাবে অক্ষম।
আরও পড়ুনঃ বেহাল রাস্তা পরিদর্শনে রাণীনগর বিধানসভার বিধায়ক সৌমিক হোসেন
সপ্তাহে একবার বহরমপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসবে এখন সে টাকাও নেই। সম্বল বলতে কিছুটা জমি ছিল কিন্তু ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে তাও বিক্রি করে দিয়ে এখন নিঃস্ব, অসহায়, নিরুপায়। গ্রামের কিছু মানুষ দিন কয়েক সাহায্য করলেও বর্তমানে ছেলে মেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চলে না, টাকার অভাবে বন্ধ ওষুধ। গ্রামের প্রধান মেম্বারেরা সেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে না দেওয়ায়, হতাশায়, দুশ্চিন্তায় ভুগছে শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণের ডাবকাই গ্রামের ইয়ামিন ওরফে টোটো চালক সেন্টুর পরিবার।
এ ব্যাপারে উপপ্রধান ইসমাইল সেখ বলেন ” সত্যি ইয়ামিনের পরিবারের অবস্থা খুব খারাপ, পঞ্চায়েত থেকেও আমরা সেভাবে সাহায্য করতে পারিনি। তবে বিডিওর সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু সাহায্যের আবেদন করেছি ”
যদিও অসুস্থ ইয়ামিনের স্ত্রী শুকরুন্নেশা বিবি বলেন ” মেম্বার প্রধান কেউ কোনো দিন খোঁজ নেয় না খুব কষ্টেই দিন যাচ্ছে। যা ছিল সব শেষ যদি কেউ সাহায্য করে খুব উপকার হবে। ”
আরও পড়ুনঃ নবনাট্য সংস্থা ও রেড ভলেন্টিয়ার এর উদ্যোগে কমিউনিটি কিচেন চালু হল কান্দিতে
ইয়ামিনের কাতর আবেদন সরকারের কাছে আমাকে সাহায্য করুন ” আর পারছি না! আমার স্ত্রী, ছেলে -মেয়ে কে নিয়ে কোথায় যাব?” প্রশ্ন অনেক? উত্তর একটাই- সাহায্য করলে পরিবারের মুখে হাসি ফুটবে। ফিরে পাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন! এখন দেখার বিষয় দুয়ারে সরকার থেকে সমাজ সচেতন মানুষ ইয়ামিন ওরফে সেন্টুর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা নিয়ে কবির ভাষায় বলতে শোনা যাবে নিশ্চয়ই “মানুষ বড়ো কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াও”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584