সাহিত্যে নোবেল জয়ী লেখক আব্দুল রাজাক গুরনাহ

0
199

মোহনা বিশ্বাস, ওয়েব ডেস্কঃ

সাহিত্য ২০২১-এ নোবেল পুরস্কার পেলেন লেখক আব্দুল রাজাক গুরনাহ। এই পুরস্কার আফ্রিকা ও আফ্রিকাবাসীকে উৎসর্গ করেছেন তানজানিয়ার বংশোদ্ভূত এই কথাসাহিত্যিক। বৃহস্পতিবার এই পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আফ্রিকার এক দ্বীপে জন্মেছিলেন আব্দুল রাজাক গুরনাহ। তার পর ১২ বছরের এই কিশোর ইংল্যান্ডে এসেছিল শরণার্থী হয়ে। ক্যান্টবেরির কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন সাহিত্যের অধ্যাপনা করেছেন তিনি। সেখান থেকেই অবসর নেন আব্দুল রাজাক।

abdulrazak gurnah
আব্দুল রাজাক গুরনাহ। ছবি সৌজন্যে : বিবিসি

১৯৬৩-তে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা থেকে জাঞ্জিবার মুক্ত হয়। কিন্তু সেই সময় সে দেশে শুরু হয় আরব-বংশোদ্ভূতদের বিরুদ্ধে অত্যাচার এবং গণহত্যা। একসময় সেই আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে যায় লেখক আব্দুল রাজাক ও তাঁর পরিবার। ফলে বাধ্য হয়ে ইংল্যান্ড ছাড়তে হয় তাঁদের।

এরপর ১৯৮৪ সালের আগে তিনি আর নিজের দেশে ফিরে যেতে পারেননি। তাই শরণার্থী অর্থাৎ যারা নিজের জন্মস্থানের শিকড় উপড়ে দেশ থেকে দেশান্তরে ছুটে যায়, তাদের কষ্ট যন্ত্রণাই ফুটে উঠেছে তাঁর লেখনীর মাধ্যমে। সেই লেখনীর সাহায্যে ঔপনিবেশিকতার অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে নিজের আপসহীন সংগ্রাম, সংস্কৃতি ও গোটা বিশ্বে যাযাবরদের কণ্ঠস্বরকে সাহসের সঙ্গে তুলে ধরার জন্য এই নোবেল পুরস্কার পেলেন ৭৩ বছর বয়সি কথাসাহিত্যিক আব্দুল রাজাক গুরনাহ।

আব্দুল রাজাক যখন ২১ বছরের তরুণ। সেই সময় থেকে লেখা শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর একটি বিখ্যাত উপন্যাস হল ‘ডেসারশন’। যা পাঠকের মনকে সহজেই স্পর্শ করে নেয়। দক্ষিণ আফ্রিকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্র করেই এই উপন্যাসটি লিখেছিলেন আব্দুল রাজাক। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল লেখকের ‘প্যারাডাইস’ প্রবন্ধটি। যা সেইসময় অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। পূর্ব আফ্রিকার একাধিক জায়গা ঘুরে এসে এই উপন্যাসটি লিখেছিলেন তিনি।

আব্দুল রাজাক গুরনাহ তাঁর লেখনীর মাধ্যমে ভূমিচ্যুত মানুষের যন্ত্রণার কথা সর্বসমক্ষে নিয়ে আসেন। ১৯৯৬-এ ‘অ্যাডমায়ারিং সাইলেন্স’ এবং ২০০১ সালে প্রকাশিত হয় ‘বাই দ্য সি’। আব্দুল রাজাকের এই দুটি উপন্যাসের মধ্যে দিয়েও গোটা বিশ্বের মানুষের সামনে উদ্বাস্তুদের দুঃখ কষ্টের চিত্র ফুটে উঠেছে। ২০২০ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর সর্বশেষ উপন্যাস ‘আফটারলাইভস’।

আরও পড়ুনঃ ‘সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’- প্রমান করল বিহারের হবু আইএএস

এক সাক্ষাৎকারে আব্দুল রাজাক গুরনাহ বলেন যে, তিনি যখন শরণার্থী ছিলেন তখন শব্দটা এত মারাত্মক ছিল না। কিন্তু এখন শরণার্থীদের নিরাপত্তা প্রায় নেই বললেই চলে। এখন গুলির ভয়ে পালিয়ে বাঁচে সেই সকল শরণার্থীরা। উদ্বাস্তু মানুষদের এত কষ্ট, এত যন্ত্রণার কথাই তাঁর লেখনীতে তুলে ধরেন আব্দুল রাজাক।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here