শারীরিক অক্ষমতাকে দূরে সরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাকিবুলের স্বপ্ন শিক্ষকতা

0
41

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ

জন্ম থেকেই হাতে-পায়ে প্রতিবন্ধী। ঠিক মত চলাফেরা করতে পারে না। হাতে পায়ে ভর দিয়ে চলাফেরা করতে হয় মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা ভক্তিপুর গ্রামের রাকিবুল হোসেনকে। উচ্চতা আড়াই ফুট। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে এবার রাকিবুল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। দিনমজুরের ছেলে ভক্তিপুর গ্রামের রাকিবুল অনেক কষ্ট করে লড়াই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। চোখে শিক্ষকতা স্বপ্ন।

abnormal higher secondary candidate attend examination | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

এ প্রসঙ্গে রাকিবুল হোসেন জানালেন সে জন্ম থেকেই হাতে-পায়ে প্রতিবন্ধী। চলাফেরা করতে প্রচুর কষ্ট করতে হয়। বাবা মা দাদা ভাই সবাই তাকে সমান ভাবে সাহায্য করে। সে ভক্তিপুর হাই মাদ্রাসার ছাত্র। এবার সে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তার সিট পড়েছে স্থানীয় হরিশ্চন্দ্রপুর তুলসিহাটা হাই স্কুলে।

abnormal higher secondary candidate attend examination | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

প্রতিবন্ধকতার জন্য সারাদিনে অনেক কষ্ট করতে হয়। বাবা-মা তার জন্য অনেক করে। নিজের লেখা পড়া ছাড়াও গ্রামের ছোট বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়ায় বাড়িতে বসেই। এর জন্য কেউ পয়সার দিলে দেয়, কেউবা দেয় না। পড়াশোনা শেষ করে নিজেও শিক্ষকতার স্বপ্ন দেখে। ভালো লাগে এডুকেশন সাবজেক্ট। ব্লক থেকে মাসিক হাজার টাকা করে একটা প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। তবে সে চায় সরকার তার পাশে দাঁড়াক যাতে সে আরো পড়াশোনা করতে পারে।

abnormal higher secondary candidate attend examination | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

রাকিবুলের বাবা রাহাতুল ইসলাম জানালেন তার ছেলে জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। ঠিক মত চলাফেরা করতে পারে না। তিনি দিনমজুরি করে সংসার চালান। মাঝে মাঝে পঞ্চায়েত থেকে ১০০ দিনের কাজ ও পান। খুব কষ্ট করে তার তিন ছেলেকে মানুষ করছেন।রাকিবুল সহ বাকি দুই ছেলে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তার আশা রাকিবুল এবার পরীক্ষায় ভালো ফল করবে।

আরও পড়ুনঃ করোনা মোকাবিলায় জরুরী অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু মাথাভাঙ্গায়

রাকিবুলের মা রুকসানা খাতুন জানান জন্ম থেকেই রাকিবুল প্রতিবন্ধী অবস্থায়। আমরা সব সময় সারাদিনে রাকিবুল কে সাহায্য করে থাকি। সে আগামী দিনে খুব ভালো হবে জীবন কাটাতে পারে এই চিন্তায় সবসময় করি এই কামনায় করেন রাকিবুলের মা।

রাকিবুলের দুই জমজ ভাইও খুশি তারাও দাদার সঙ্গে এবছর তুলসিহাট্টা হাই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে। তারা জানাল তারা সবসময় প্রতিবন্ধী দাদা রাকিবুলকে সাহায্য করে। স্কুলে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে যেখানে যাওয়া প্রয়োজন হয় সেখানে তারা তাদের দাদাকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা উচ্চ মাধ্যমিক সেন্টার কমিটির সম্পাদক মফিজ উদ্দিন আহমেদ জানালেন এত বাধা-বিঘ্ন সত্ত্বেও রাকিবুল এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে তার জন্য তাকে প্রথমে অভিনন্দন জানাই আমরা। তার সাথে আমরা সব সময় নজর রাখছি তার পরীক্ষা দিতে কোন অসুবিধা না হয়। পরীক্ষা হলে তার জন্য সব রকম ব্যবস্থাই আমরা রাখছি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here