শ্যামল রায়,পূর্বস্থলীঃমঙ্গলবার পূর্বস্থলী-২ ব্লকের পাটুলী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল চিকিৎসকের অভাবে রোগী দেখছেন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরাই।এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর দশটি গ্রামের মানুষ নির্ভরশীল। গ্রামের মানুষের অভিযোগ যে দীর্ঘদিন ধরে এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের অভাব। গ্রামবাসীদের অভিযোগ যে এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোর অভাব নেই অথচ শুধুমাত্র চিকিৎসকের অভাবে আমরা স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সপ্তাহে একজন চিকিৎসক আসার কথা মাঝেমধ্যে আসে মাঝে মধ্যে আসেন না এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই আমাদের স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ নিতে হয় খুব কষ্টে এবং যন্ত্রণায়। কোন কিছু হলেই আমাদের ছুটতে হয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে অথবা পূর্বস্থলীর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিংবা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে যে পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের অধীন রয়েছে চারটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র একটিতেও স্থায়ীভাবে চিকিৎসক নেই।
ব্লকের অধীন নিমদহ, কুবাজপুর, পাটুলি ও লক্ষীপুরের সিংহাড়ী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। চিকিৎসকের অভাবে এতদ অঞ্চলের বাসিন্দারা চরম সমস্যার মধ্যে করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
এই অঞ্চলের বাসিন্দা দ্বারকানাথ দাস অভিযোগ করেছেন যে পরিকাঠামো থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে আমাদের চিকিৎসা করাতে চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় তাই অনেক দূর দূরান্তে ছুটে যেতে হয় চিকিৎসার জন্য।
চিকিৎসকের দাবিতে বারবার আমরা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে শুরু করে বহু জায়গায় বিষয়টি জানিয়েছি কিন্তু চিকিৎসক আজও মেলেনি।
এছাড়াও বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে রয়েছে বহু সাব সেন্টার।
ওই সব সব সেন্টারে আশা কর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা কোনরকম ভাবে গ্রামীণ চিকিৎসার প্রাথমিক কাজগুলো করে থাকে তবে বড় ধরনের রোগ হলেই ছুড়তে হয় আমাদের দুর্দান্ত বর্ধমান শহর কিংবা কাটোয়া হাসপাতালে।
আসন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত ভোটের মুখে আমরা প্রার্থীদের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ না করলে আগামী দিন আমরা ভোট বয়কটের ডাক দিতে পারি।
দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেখে আসছি পরিকাঠামো থাকলেও অভাব চিকিৎসকের অভাব নার্সের।
ওই সব স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলি ফার্মাসিষ্ট কোন রকম ওষুধ এবং রোগী দেখে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে থাকছেন। যা কিনা নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ বলে মনে করছেন গ্রামের মানুষ।
ব্লকে একমাত্র ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পূর্বস্থলী তে অবস্থিত। এখানেও চিকিৎসকের অভাব তবুও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃণাল কান্তি হালদার পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন রাত দিন সমান করে। মিনাল কান্তি হালদার জানিয়েছেন যে তিনি দুটো ব্লকের দায়িত্বে রয়েছেন। কালনা ২নম্বর ব্লক ও পূর্ব স্থলী ২ নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্যপরিসেবা বজায় রাখতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন।
চিকিৎসকের অভাবে অনেক সময় স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যাঘাত ঘটছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তবে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিকাঠামোর অভাব নেই অভাব শুধু চিকিৎসকের সেই সাথে কর্মী সংকটে রয়েছে রয়েছে নার্সের অভাব।
স্থানীয় সিপিএম নেতা ও বিধায়ক প্রদীপ সাহা জানিয়েছেন যে চিকিৎসক নার্স ও কর্মীর অভাবে স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলি ক্রমেই যেন ভগ্নদশায় পরিণত হচ্ছে। গ্রামের মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকে ঝুঁকছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এর ফলে যারা আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল সে সমস্ত মানুষের পক্ষে স্বাস্থ্যপরিসেবা না পেয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে জীবনযাপন করছেন বলে অভিযোগ প্রদীপবাবুর।
ফিচার ছবি সংগৃহীত
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584