পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
ফের কমিশনের নজরে অনুব্রত মণ্ডল।আবার তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশন রিপোর্ট তলব করল।জেলা নির্বাচন আধিকারিককে এবিষয়ে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।সূত্রের খবর,এবার তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।তাঁকে সেন্সর পর্যন্ত করা হতে পারে বলে খবর।জেলা নির্বাচন আধিকারিকের রিপোর্ট আসার পরেই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।পাঁচন, নকুলদানা, সিরিঞ্জের পর পোল ভোট।আবারও বিতর্কে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।
গতকাল সিউড়িতে ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শিক্ষক সংগঠনের সভায় অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “ভোটের দিনে আপনারা ভয় পাবেন না।আমাদের দলের সভাপতিরা,বুথ সভাপতিরা আপনাদের সঙ্গে থাকবেন।তাঁদের নম্বর আপনাদের দিয়ে দেব।আপনাদের কোনও অসুবিধা হলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আপনাদের সুরক্ষার জন্য আমরা সবসময় আছি।তার বদলে আপনারা ৫০০-৬০০টা করে পোল ভোট করার সুযোগ দেবেন।এটা আমার অনুরোধ।” বিরোধীদের বক্তব্য, পোল ভোট মানে ছাপ্পা।সেই সূত্রে কমিশনে অভিযোগ জমা পড়েছে। সি.পি.আই(এম)-র তরফে রবিন দেব নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়ে দাবি করেন, এখনই অনুব্রতর বিরুদ্ধে এফ.আই.আর করা হোক। অন্যদিকে বীরভূমের জেলা বি. জে.পি সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় অনুব্রতর বিরুদ্ধে ডি.ই.ও-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।অনুব্রত মণ্ডল প্রথমে বিরোধীদের,তারপর জনগণকে নকুলদানা খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।তা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক।নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জমা পড়ে।অনুব্রত মণ্ডলকে শোকজ করা হয়।এরপর তিনি কমিশনকেই নকুলদানা খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।তা নিয়ে বেজায় চটে কমিশন।ফের তাঁকে শোকজ করা হয়।সম্প্রতি তিনি সেই শোকজের জবাব দিয়েছেন।তারপর তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নকুলদানা খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও নকুলদানা দেবে।জল চাইবে,জল দেবে।কেন্দ্রীয় বাহিনী যা চাইবে তাই দেবে।”মুরারই ২ নম্বর ব্লকের মিত্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, “১০০ শতাংশ উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবে। এছাড়াও বুথে বুথে নকুলদানা থাকবে।” বিষয়টি নজরে এসেছে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের।অনুব্রতর এই মন্তব্য নিয়ে জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়।এই বিষয়ে কমিশন যথেষ্ট কড়া মনোভাব নিয়েছে। কারণ তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে শুধু নকুলদানা খাওয়ানোর কথাই বলেননি। দলীয় কর্মীদের বলেছেন, “বাহিনী যা চাইবে তাই দেবে।” বাহিনীকে “মাংস ভাত খাইয়ে ম্যানেজ” করার অভিযোগ বিরোধীরা আগেই এনেছিল। কমিশনের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল এবার যেন কোনওভাবেই বাহিনীকে কেউ কিছু না দিতে পারে। পাশাপাশি উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার মন্তব্য নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে বিস্তর গোলমাল হয়।এইসব বিতর্কের মধ্যেই রবিবার সিউড়িতে তিনি “পোল ভোট” করানোর “অনুরোধ” করেন। এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যেভাবে ভোট কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সেই সূত্র ধরেই তিনি বলেন, “আপনাদের যদি কোনও ক্ষতি হয় তাহলে আপনারা আমাকে ধরবেন। কোনও রকম অসুবিধা হবে না।”বিষয়টি নিয়ে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দুধ কুমার মন্ডল বলেন “উনার কথার কোন তাৎপর্য নেই, কার্যত সরকারি কর্মীদের ভয় দেখিয়ে ভোট সরিয়ে নেবার প্রক্রিয়া তিনি শুরু করেছেন, মধ্যে আমরা নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছি আশা করছি নির্বাচন কমিশন কড়া পদক্ষেপ নেবেন।”
আরও পড়ুনঃ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিতর্কিত গানেই রোড শো বাবুলের
অন্যদিকে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে সি.পি.এম প্রার্থী রামচন্দ্র ডোম বলেন জঘন্য, “অতি জঘন্য, সম্মেলনের নামে সহকারী শিক্ষকদের ভোট করানোর বা করতে দেওয়ার যে সুযোগ নিতে চাইছে অনুব্রত মণ্ডল তা অত্যন্ত নক্কারজনক নির্বাচন কমিশনের উচিত অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584