উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে সংখ্যালঘু ভোট কাটতে বাংলায় আসছে মিম। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তার কটাক্ষ, ‘আগেও বলেছি, মিম ভোট কাটুয়া পার্টি।’
বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ২০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল মিম। ৫টি আসনে জিতেছে তারা। বাংলায় বিধানসভা ভোটেও প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন আসাউদ্দিন ওয়াইসি। তাতে শিরে সংক্রান্তি দেখছে বাম-কংগ্রেস জোট। তাদের আশঙ্কা, ভোট ভাগ করে বিজেপির সুবিধা করে দিতে পারে এআইএমআইএম।
তাই শুরু থেকে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়েছেন অধীর চৌধুরী। কারণ, মুর্শিদাবাদ ও মালদহে মিম প্রার্থী দিলে ধাক্কা খেতে পারে কংগ্রেস। এ দিন অধীর চৌধুরী বলেন,”এই মিম হায়দ্রাবাদের পার্টি। তেলেঙ্গানায় বড়জোর ১৩-১৪টি বিধানসভায় লড়ে। আর কোথাও প্রার্থী দেয় না। কেরলে লড়বে না, অসমে লড়বে না, বাংলায় লড়বে। কারণ বাংলা বিজেপির দরকার।”
আরও পড়ুনঃ ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হল আজ থেকে
অধীর আরও বলেন, ”এই মিম মুসলিমদের অধিকার নিয়ে কথা বলে, বলে দাবি করে। সিএএ-এনআরসি নিয়ে নাকি সবচেয়ে বেশি আন্দোলন করেছে। সংসদের রেকর্ড দেখুন, সিএএ নিয়ে সবার আগে বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস। তৃণমূল পাশ করাতে সাহায্য করেছিল। আমরা বিরোধিতা করেছি। শাহিনবাগের বিক্ষোভে সব ধর্মের মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। মিমের নেতারা তখন কোথায় ছিল? একবারও কি গিয়েছিলেন? হঠাৎ এখানে এসেছে কেন? অমিত শাহের নির্দেশ রয়েছে।”
মঙ্গলবার দিন ফুরফুরা শরিফে পীর জাদা ত্বহা সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন অধীর চৌধুরী ও আবদুল মান্নান। তবে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন। তার ভাই আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করেন অধীর চৌধুরী ও আবদুল মান্নান। পরে ইব্রাহিম সিদ্দিকির সঙ্গেও কথা হয়। সংখ্যালঘুদের মন বুঝতে অধীরের এই ফুরফুরা সফর বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
আরও পড়ুনঃ অবশেষে পিনকন মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ অভিযুক্ত মৌসুমির
বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পাল্টা বিরোধীদের প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একইসঙ্গে জানিয়ে দিলেন, “মিম রাজনৈতিক দল। সংবিধানই বলছে, তারা এ রাজ্যে লড়াই করতে চাইলে কেউ মানা করতে পারে না।”বাংলায় মিম প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করার পর থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে নতুন জল্পনা। প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন, সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করে বিজেপির সুবিধা করে দিতেই মিমকে আনা হচ্ছে।
নেপথ্যে রয়েছেন অমিত শাহ। এখন লাখ টাকার প্রশ্ন, সংখ্যালঘু ভোট কার ইভিএমে পড়বে? দিলীপ ঘোষ বলেন,”মুসলিম ভোট আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। এরাজ্যে মুসলিমরা বিজেপিকে ভোট দেন না। অন্য রাজ্যের কথা বলতে পারব না। যদি এখানকার মুসলিম ভোটাররা সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূলকে না দিয়ে অন্য কাউকে দেন, তাহলে ধরে নিতে হবে তারা ধোঁকা দিয়েছে। সে কারণেই বিকল্প খুঁজছেন মুসলিমরা।”
আরও পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে অত্যাচারি হিটলারি শাসন চলছেঃ সায়ন্তন বসু
বিজেপিকে নিয়ে কি অনীহা মুসলিমদের? দিলীপের কথায়,”বিজেপিকে বিকল্প মনে করেননি মুসলিমরা। তবে ধীরে ধীরে আরম্ভ করেছেন তারা। সংখ্যালঘু মোর্চার সভায় ভিড় বাড়ছে। যেখানেই বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চা যাচ্ছে সেখানে দলে দলে মুসলমান ধর্মের মানুষ বিজেপিতে যোগদান করছেন।” তিনি আরও বলেন,”মুসলিম ভোটারদের কেনা মনে করে বিরোধীরা। তাদের গরিব করে রেখেছেন।
মুসলিম বানিয়ে রেখেছেন, ভারতীয় হতে দেননি। কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন বাংলার মুসলিমরা। তারা সিদ্ধান্ত কী নেবেন, এনিয়ে বিজেপির কোনও মাথাব্যথা নেই। কে কাকে বিশ্বাস করবেন, এতে আমাদের কোনও হাত নেই।” এর পাশাপাশি দিলীপ স্পষ্ট করেছেন, ”মিম রাজনৈতিক দল। সাংবিধানিক অধিকারে বাংলায় এসে কাজ করলে কেউ মানা করতে পারবে না।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584