পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের নামে মিথ্যাচার করে বিপাকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অনলাইনে ভারতের সকল শিক্ষকদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন কয়েকদিন আগে।
বৈঠক চলাকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী আচমকাই দাবি করেন, তার ফোনে হঠাৎ করেই একটি ফোন আসে, অপরপ্রান্ত থেকে ফোনে ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন বলছেন বলে পরিচয় দেন। এরপর অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতনে তার বাড়ির সামনে থেকে হকার উচ্ছেদের বিরোধিতা করেন, অধ্যাপক সেন আরো বলেন তারা শান্তিনিকেতন গেলে হকারদের থেকে জিনিসপত্র কেনেন, তাই হকারদের উঠিয়ে দিলে তার মেয়ের অসুবিধা হবে।
উপাচার্য বৈঠকে বলেন অমর্ত্য সেন একজন অত্যন্ত স্বার্থপর মানুষ। উল্টে তিনি অমর্ত্য সেনকে বলেন তার বাড়ি হকারদের জন্য দিয়ে দিতে। কিন্তু সেখানেও অমর্ত্য সেন ঘোর আপত্তি জানায়। এই বক্তব্যের পর এই সন্দেহের দানা বেঁধেছে বৈঠকে উপস্থিত সমস্ত অধ্যাপক, শিক্ষকদের মনে।
আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বিধানসভা ভোট করানোর আর্জি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে বিজেপি প্রতিনিধি দল
উপাচার্যকে সত্যিই অমর্ত্য সেন ফোন করেছিলেন কিনা তার সত্যতা যাচাই করতে অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য ইমেইল মারফত অমর্ত্য সেনকে বিষয়টি জানান, তিনি এটাও দাবি করেন কখনই তিনি নিজেকে ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন বলে দাবি করেন না। ইমেইল মারফত নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন।
তিনি বিশ্বভারতীর ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য কে ধন্যবাদ জানিয়ে লেখেন, আপনার মারফত বিষয়টি জানতে পারলাম, আমি অত্যন্ত হতবাক উপাচার্য এই ধরনের মন্তব্য করেছেন শুনে। তিনি মনে করেন না তিনি এই ধরণের কথোপকথন করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সাথে, তিনি কখনোই নিজেকে ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন বলে দাবি করেন না। আমি অবগত নই আমার মেয়ে কোথা থেকে জিনিসপত্র কেনাকাটা করে,সর্বোপরি আমার বাড়ির সামনে সেই ভাবে কোন হকার বসেনা।
যাইহোক বিশ্বভারতীর কিছু কিছু বিষয় নিয়ে এতটাই নাক গলাচ্ছে যেখানে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। বিশ্বভারতীতে যেসব কর্মকাণ্ড এখন হচ্ছে যা আদতে বিশ্বভারতীর ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করেছে। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য আরো অভিযোগ করেন, পৌষ উৎসব শেষ হতেই শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে থাকা দোকানপাট ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
কিন্তু অদ্ভুতভাবে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী আইনের সাহায্য নাচেয়ে উল্টে দোকান ভাঙতে সাহায্য চাইছেন অধ্যাপকদের৷ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সুকৌশলে অধ্যাপকদের ফাঁদে ফেলে নিয়মবহির্ভূতভাবে অধ্যাপকদের গুন্ডা বানাতে চাইছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতি এবং বিশ্বভারতী আচার্য তথা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
প্রবীণা শ্রমিক সুবোধ মিত্র জানিয়েছেন, “বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অনাসৃষ্টি শুরু হয়েছে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাঙ্গনে।” কিভাবে এই উপাচার্যের হাত থেকে বিশ্বভারতী তথা শান্তিনিকেতনবাসী মুক্তি পাবে এখন সেটাই কোটি টাকার প্রশ্ন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584