রাজনৈতিক কারনেই বাড়ি বিতর্ক, জানালেন নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন

0
68

নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ

শান্তিনিকেতনের বাড়ি বিতর্কে এবার মুখ খুললেন নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুর তাঁর গলাতেও। অমর্ত্য সেন জমি বিতর্ক নিয়ে বলেন যে, বিশ্বভারতী কোনও দিন তাঁদের জানায়নি যে জমি নিয়ে কোনও বেনিয়ম হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে রাজনৈতিক কারণেই এই ধরণের ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

Amartya Sen | newsfront.co
অমর্ত্য সেন

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ তুলেছেন যে, অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র সীমানায় বিশ্বভারতীর জমিও ঢুকে গিয়েছে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, জমির মাপ করে দেখা যায়, পাশাপাশি দু’টি লিজ দেওয়া জমির মধ্যবর্তী বিশ্বভারতীর নিজস্ব ১৩ ডেসিমেল জমিও ঢুকে রয়েছে ‘প্রতীচী’র সীমানার ভিতরে।

অর্থাৎ, ‘প্রতীচী’র জমির পরিমাণ এখন ১৩৮ ডেসিমেল, ১২৫ ডেসিমেল নয়। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, রজতকান্ত রায় যখন উপাচার্য ছিলেন, তখন অমর্ত্যবাবুকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিন্তু নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ নাকি তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বভারতীর আচরণে দুঃখিত, দাদা সম্বোধনে অমর্ত্য সেনের কাছে ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী

এবিষয়ে গত বৃহস্পতিবারই প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্যই অমর্ত্যবাবুর মতো মনীষীকে আক্রমণ করা হচ্ছে। পরে শুক্রবার অমর্ত্যবাবুকে চিঠি লিখে পাশে থাকার আশ্বাস দেন মমতা। ‘বন্ধু এবং বোন’ হিসেবে তাঁকে বিবেচনা করার অনুরোধও ওই চিঠিতে জানিয়েছিলেন মমতা।

মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির বিষয়ে অমর্ত্যবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে সহানুভূতি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন, তাতে দুঃখ করার কিছু নেই। কিন্তু হঠাৎ বিশ্বভারতী থেকে এরকমভাবে মিথ্যে কথা বলা শুরু করল কেন? সেটার বোধহয় রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে।“

আরও পড়ুনঃ অনড় কেন্দ্র, দাবি আদায়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কৃষকরা আন্দোলনের পথ ঠিক করতে বৈঠকে

তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের ওপরে তার প্রভাব বাড়াতে চাইছে। প্রভাব বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রের হাতিয়ার হচ্ছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে কটাক্ষ করে অমর্ত্য সেন বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক কারণে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ব্যবহার করতে চাইলে এবং সেই ষড়যন্ত্রে যদি উপাচার্য যোগ দিয়ে খুব আনন্দ পান তাতে কারুর কিছু করার নেই।

কিন্তু অমর্ত্য বাবুর বাড়ি প্রসঙ্গে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, সে বিষয়ে তাঁকে জানানো উচিত কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত একটা চিঠিও পাননি। কেবল খবরের কাগজে বা অন্যান্য মিডিয়াতে এবিষয়ে বক্তৃতা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ উত্তপ্ত হেস্টিংস! সাংসদের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূলের

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ খুব স্পষ্ট ভাবে বলেন, “এর মধ্যে আমি বাংলা কথা বলছি, একটা ছোটলোকামি আছে, সেটা ঢাকা যাচ্ছে না। বাংলায় প্রভাব আর সেই কারণটা কী হতে পারে, সে নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী দু’এক কথা বলেছেন। আমায় চিঠিতেও বলেছেন। বক্তব্য হিসেবে সাধারণ আলোচনায় সে বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।“

ভারতে বহু শতক ধরে চর্চিত বহুত্ববাদী ভাবধারাকে ধ্বংস করতে চায় কেন্দ্রের শাসক শক্তি। এ জন্য অতীতে বহু বারই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। সেই কারণেই অমর্ত্য সেনের বাড়ি ঘিরে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here