পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
মাত্র দিন তিনেক আগে বীরভূম জেলায় নির্বাচনী প্রচারে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল কে বাঘের বাচ্চা আখ্যা দিয়ে গিয়েছিলেন।সোমবার বীরভূম জেলার দুটি কেন্দ্রে লোকসভা নির্বাচন।রবিবার নির্বাচন কমিশন মুখ্যমন্ত্রী সেই বাঘের বাচ্চাকে খাঁচা বন্দি করে ফেলল।নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বিরোধীরা বারবার বলছিল ভোটের দিন অনুব্রত মণ্ডল কে নজর বন্দি করতে হবে।
অতীতে সেই দাবিকেই মান্যতা দিয়ে নির্বাচন কমিশন অনুব্রত মণ্ডলকে খাঁচায় পুরে ফেলল।অতএব সোমবার অনুব্রত মণ্ডল খাঁচাতে থেকেই নির্বাচন পরিচালনা কিভাবে করেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।।তবে এবারই প্রথম নয়,২০১৬ সালে পশ্চিম বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনেও অনুব্রত মণ্ডলকে নির্বাচন কমিশন ভোট শুরু হবার দু’দিন আগে থেকে নজরবন্দী করেছিল।
আরও পড়ুনঃ ভোটকর্মীদের দাবী মেনে কমিশনের নজরবন্দী অনুব্রত
শনিবার নির্বাচন কমিশনকে ভোট কর্মীদের তরফে একটি চিঠি দেওয়া হয় যেখানে বলা হয় যে, ভোটের দিন যদি অনুব্রত মণ্ডল জেলা জুড়ে দাপিয়ে বেড়ায় স্বভাবতই ভোট কর্মীদের মধ্যে ভয়ের সঞ্চার হবে।নির্বিঘ্নে ভোট কর্মীরা ভোট করাতে পারবে না।তাই তাকে যেন নজরবন্দি করা হয় ভোটের দিন যাতে তিনি ভোট কর্মীদের উদ্দেশ্যে শাসানি বা চোখ রাঙানি কোনটাই না করতে পারেন।
বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, “এখনই জানতে পারলাম অনুব্রত মণ্ডলকে এখন থেকে শুরু করে মঙ্গলবার সকালে নজরবন্দি করে রাখবে নির্বাচন কমিশন,এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই,নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল আরো কিছুদিন আগে অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ন্ত্রিত করা, তাহলে এতদিন ধরে যে গ্রামের মানুষকে ভয় দেখানো বা বাইক বাহিনী দিয়ে ভোটারদের মনে যে ভয়ের সন্ত্রাস সৃষ্টি করা সেটা হতো না, ভোটাররা মানসিকভাবে আরও নিশ্চিন্তে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে আসতে পারতো।”
বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএমের প্রার্থী রামচন্দ্র ডোম জানান, “অনুব্রত মণ্ডলকে নজর বন্দি করেছে নির্বাচন কমিশন এটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই,বিষয়টা অনেকটা বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো,অতীতের অভিজ্ঞতা আমাদের একদমই ভালো নয়,যেখানে বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনে বীরভূম জেলার ভোট পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সেখানে পুলিশ পর্যবেক্ষক বীরভূম এসে পুলিশ ভালো কাজ করেছে সার্টিফিকেট দিয়ে যাচ্ছে তা এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে না কোথাও একটা গন্ডগোল রয়েছে।
ভোটের দিন নির্বাচন কমিশনের কি ভূমিকা থাকে এবং মানুষকে কিভাবে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যেতে নির্বাচন কমিশন সক্ষম হয় তা সোমবার নির্বাচন শেষ হবার পরেই বলতে পারব। কোথাও যদি মানুষ বাধাপ্রাপ্ত হয় ভোট দিতে গিয়ে তাহলে উত্তরবঙ্গের মতো এখানেও মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার প্রতিরোধ গড়ে তুলবে সে বিষয়ে আমরা ১০০% নিশ্চিত।”
বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডলকে নির্বাচন কমিশনে নজরবন্দি করার চিঠি এসে পৌঁছেছে,নির্দেশ অনুযায়ী একজন ভিডিও গ্রাফার,একজন ম্যাজিস্ট্রেট লেভেলের অফিসার এবং আধাসামরিক বাহিনী ইতিমধ্যেই নিযুক্ত করা হয়েছে।
বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, “নির্বাচন কমিশন নিজের মতো করবে, আমি আমার মত কাজ করব।”
আগামী নির্বাচনে জেলায় রাজনৈতিক পারদ উঠছে এটুকু নিশ্চিত,তবে বাঘের বাচ্চা খাঁচায় থেকে কি নিয়ন্ত্রন করে সেটাই দেখবার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584