সলমান খুরশিদের লেখা বইয়ে বির্তকিত মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর

0
47

শরীয়তুল্লাহ সোহন, ওয়েব ডেস্কঃ

দেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কংগ্রেস নেতা সলমান খুরশিদের নৈনিতালের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার পর দুর্বৃত্তরা সেখানে একটি কলিং কার্ড রেখে যান।

Fire
ছবিঃ ফেসবুক

সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর নতুন একটি বইয়ে ‘উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের’ ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তুলনা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। যে বইটিতে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি-আরএসএসকে ইসলামিক স্টেট-এর জিহাদী গোষ্ঠী বোকা হারামের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এর মধ্যেই এমন আক্রমণের ঘটনা ঘটল।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সলমান খুরশিদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তাঁর নৈনিতালের বাড়িতে আগুনের দীর্ঘ শিখা, পোড়া দরজা এবং ভাঙচুর করা জানালা। দুজন ব্যক্তি আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন । আবার কিছু প্রত্যক্ষ দর্শীদের মতে বাড়িতে হামলা চালানোর সময় কিছু মানুষের হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা ছিল। তারা প্রথমে বাড়ি লক্ষ্যে করে পাথর ছোঁড়ে, তারপর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পোড়ানো হয় খুরশিদ আলমের কুশপুত্তলিকা।

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করেন কংগ্রেসের এই নেতা। ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের জন্য এই দরজাগুলো খোলা রাখার আশা করেছিলাম, যারা এই কলিং কার্ডটি রেখে গেছে। এটা বলা কি এখনো ভুল হবে যে, এটি হিন্দুত্ব হতে পারে না? বিতর্কটা তাহলে এমন। লজ্জা, বলাটাও যথেষ্ট নয়।এখনো আশা করি যে, আমরা একদিন একক স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে পারব এবং একটা বিষয়ে মতানৈক্য করার ব্যাপারেও আমরা একমত হব।’ এই ঘটনায় কংগ্রেস এর এক প্রবীণ নেতা মণিশঙ্কর আয়ার এই ঘটনার নিন্দা জনক প্রতিক্রিয়া, জানিয়ে বলেন, “এখন যে সরকার ক্ষমতায় আছে তাদের কাছে দেশের জনসংখ্যা ৮০ শতাংশ। যারা হিন্দু ধর্মের যাবতীয় আচার আচরণ পালন করে তারাই প্রকৃত ভারতীয়। ”

এদিকে এই ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। কুমায়োন পুলিশের ডিআইজি নিলেশ আনন্দ বার্তা সংস্থা এএনআইকে জানান, এ ঘটনায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাকেশ কপিল নামে ওই অঞ্চলের স্থানীয় একজন হিন্দুত্ববাদী অধিকারকর্মী ও তাঁর আরও ২০ জন সহযোগীকে খোঁজা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। এই ঘটনায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে অযোধ্যা নিয়ে সলমান খুরশিদের নতুন বই ‘সানরাইজ ওভার অযোধ্যা: নেশন হুড ইন আওয়ার টাইম’।

আরও পড়ুনঃ দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ প্রথম গরুর জন্য চালু হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা যোগী সরকারের হাত ধরে

বইটিতে হিন্দুত্ববাদীর সঙ্গে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ও বোকো হারামের মতো উগ্র ইসলামি গোষ্ঠীগুলোর তুলনা টেনে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন শাসক দল বিজেপি প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেছিল সলমান খুরশিদ দেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করেছেন এবং ‘সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি’ করছেন।

আরও পড়ুনঃ তিনদিনের সফরে সোমবার কলকাতায় আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত

সলমান খুরশিদের এমন মন্তব্যকে টেনে বিজেপি বলছে, কংগ্রেস এখন মুসলমানদের ভোট পেতে ধর্মীয় রাজনীতি শুরু করেছে। নিজ দলের নেতার সমালোচনার মুখেও পড়েন সলমান খুরশিদ। কংগ্রেস নেতা নবী আজাদ বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ হয়তো হিন্দুত্ববাদীকে সমর্থন বা বিশ্বাস করে না। তবে আইএস-এর সঙ্গে তুলনা করাটা ঠিক হয়নি বরং অতিরঞ্জিত হয়েছে বিষয়টি।’ এনডিটিভির তথ্যমতে, এই ইস্যুতে সলমান খুরশিদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে ইতিমধ্যে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here