শরীয়তুল্লাহ সোহন, ওয়েব ডেস্কঃ
কবে ছন্দে ফিরবেন ডেভিড ওয়ার্নার- কোটি টাকার এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছে ক্রিকেট বিশ্ব। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই ছন্দে ফিরেছেন অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। তাঁর ছন্দে ফেরার দিনে টানা চার ম্যাচ জিতে উড়তে থাকা শ্রীলঙ্কাকে মাটিয়ে নামিয়ে এনেছে অস্ট্রেলিয়া। মারমুখী ব্যাটিংয়ের অসাধারণ প্রদর্শনী উপহার দিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটি জিতেছে ৭ উইকেটে, ১৮ বল বাকি থাকতেই। গত রাত্রের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৪ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে এই রান অস্ট্রেলিয়া তুলে নেয় ১৭ ওভারে।
শ্রীলঙ্কাকে অস্ট্রেলিয়া উড়িয়ে দিয়েছে মূলত পাওয়ার প্লেতেই। ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৩ রান নিয়েছে তারা। পাওয়ার প্লেতে শ্রীলঙ্কার বোলারদের এলোমেলো করে দেওয়ার কাজটা নিজের কাঁধে তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ।
২১ বলে ৩৭ রান করেছেন তিনি। ছন্দে ফেরার লক্ষ্য নিয়ে নামা ওয়ার্নার সেই তুলনায় একটু শ্লথই ছিলেন, ১৬ বলে ২৫ রান করেছেন তিনি। দুজনের জুটি ভাঙে ফিঞ্চের আউটে। ৬.৫ ওভারে তিনি আউট হয়েছেন দলের ৭০ রানে, তাঁর নিজস্ব ঝুলিতে সংগ্রহ ৩৭ ।
এরপর ওয়ার্নার একে একে জুটি গড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও স্টিভ স্মিথের সঙ্গে। ওয়ার্নারের সঙ্গে ম্যাক্সওয়েলের জুটি অবশ্য বেশিক্ষণ টিকেনি। ১০ বলে ১০ রানের জুটিটি ভাঙে ম্যাক্সওয়েলের আউটে। এরপর স্মিথের সঙ্গে ৪০ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান ওয়ার্নার।
শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শানাকার বলে রাজাপক্ষের হাতে ক্যাচ দিয়ে ওয়ার্নার ফিরলে ভাঙে দুজনের তৃতীয় উইকেট জুটি। ফেরার সময় ওয়ার্নারের রান ছিল ৪২ বলে ৬৫। ১০টি চার মারলেও তাঁর ইনিংসটিতে নেই কোনো ছক্কা। ১৬ রানে থাকতে একটি ‘জীবন’ পেয়েছেন ওয়ার্নার। দুষ্মন্ত চামিরার উঠে আসা বলে পুল করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বল তাঁর ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটকিপারের হাতে। চামিরা উদ্যাপন শুরু করে দেন, আম্পায়ারও আঙুল তুলেছিলেন। কিন্তু হায়, কুশল পেরেরা যে ক্যাচটি নিতেই পারেননি!
ওয়ার্নারের আউটের পর স্মিথের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মার্কাস স্টয়নিস। আর কোনো উইকেট পড়তে না দিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তাঁরা। ম্যাচ শেষে স্মিথ অপরাজিত ছিলেন ২৬ বলে ২৮ রান করে। স্টয়নিস অপরাজিত ১৬ রান করছেন ৭ বলে, দুটি চার ও একটি ছয়ে। ম্যাচ সেরার পুরস্কার অবশ্য গেছে অ্যাডাম জাম্পার অধিকারে। ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে শ্রীলঙ্কার দুটি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
এর আগে শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে ১৫৪ রান তুলতে পেরেছে তিরিশের ঘরের তিনটি ইনিংসে। দুবাইয়ে কাল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের চুম্বক অংশ এটিই। তবু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫০ ছাড়িয়েছে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করা অস্ট্রেলিয়া কাল তৃতীয় ওভারেই ফিরিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান পাতুম নিশাঙ্কাকে।
আরও পড়ুনঃ দীনেশ কার্তিকের ঘরে এল যমজ সন্তান, নেটিজেনদের শুভেচ্ছায় উপচে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়া
আড়াই ওভারে শ্রীলঙ্কার রান তখন ১৫। সেই দলটাই কিনা পাওয়ারপ্লে শেষ করল ১ উইকেটে ৫৩ রান নিয়ে। কুশল পেরেরা ও চারিত আসালাঙ্কারা পাল্টা আক্রমণে বড় রানের আশা জোগান। উইকেট পেলেও তৃতীয় ওভারে কামিন্স দেন ১৪ রান। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের পরের ওভার থেকে আসে ১৬ রান।
৪৪ বলে ৬৩ রানের জুটি গড়ে দলের রানটাকে ৭৮-এ নিয়ে যাওয়ার পর আউট আসালাঙ্কা। অস্ট্রেলীয় লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পাকে সুইপ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন আসালাঙ্কা, ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন স্টিভ স্মিথের হাতে। ২৭ বলের ইনিংসে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৫ রান করেন লঙ্কান এই ব্যাটসম্যান।
আরও পড়ুনঃ “স্বার্থের দ্বন্দ্ব” প্রশ্নে আবারও একটি পদ ছাড়লেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী
মিচেল স্টার্কের করা পরের ওভারে ওই ৩৫ রানেই আউট কুশল পেরেরাও। ২৫ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি থেমেছে স্টার্কের ১৪৪ কিলোমিটার গতির ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে। ৬ বলও ৮ রানের মধ্যে দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর রানের গতিটা আর বাড়াতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। উল্টো আরও দুটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়। ৯৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর শ্রীলঙ্কার ইনিংসটাকে টেনেছেন দাসুন শানাকা।
২৬ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত ব্যাটসম্যান ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে নিয়ে যোগ করেন ৪০ রান। শানাকা ১২ রান করেছেন ১৯ বলে। অস্ট্রেলিয়ার তিন বোলার মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স ও অ্যাডাম জাম্পা নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। তবে টানা ৪ ওভারের স্পেলে ১২ রান দিয়ে লঙ্কানদের আটকে রাখার কাজটা সবচেয়ে ভালো করেছেন জাম্পা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584