নিখোঁজ থাকার ছয়মাস পর সাংবাদিককে গ্রেফতার ঘোষণা করল বেইজিং

0
56

নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ

অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক চ্যাং লাইকে ছয় মাস পর সরকারিভাবে গ্রেফতার দেখালো চীন। অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী ম্যারিস পেইন জানান, সাংবাদিক চ্যাং লাইকে গত শুক্রবার গ্রেফতার দেখিয়েছে বেইজিং। তাঁর বিরুদ্ধে চীনের রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Cheng Lei | newsfront.co
চ্যাং লাই

চ্যাং লাইয়ের জন্ম চীনের হুনান প্রদেশে হলেও শৈশবেই তিনি অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী হয়েছিলেন। ২০১২ সালে চ্যাং দেশে ফেরেন এবং চীন সরকারের মালিকানাধীন ইংলিশ চ্যানেল সিজিটিএনে যোগ দেন। বাণিজ্য বিষয়ক প্রতিবেদক চ্যাং ছিলেন চ্যানেলটির পরিচিত সংবাদ উপস্থাপক। তিনি সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামকরা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) সাক্ষাৎকার নিতেন।

চ্যাংয়ের বিরুদ্ধে চীন জাতীয় নিরাপত্তা আইন ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে, যা প্রমাণিত হলে তাঁকে বিভিন্ন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। উল্লেখ্য, হঠাৎ করেই গত আগস্ট মাস থেকে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সম্প্রচারে চ্যাং কে আর দেখা যায়নি। এমনকি তারপর থেকে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

অস্ট্রেলিয়া ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির পরপরই চ্যাংকে আটক করা হয়। সাংবাদিক চ্যাং লাই করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সময় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও বেইজিংয়ের সমালোচনা করে বেশ কিছু ফেসবুক পোস্ট করেন। ধরে নেওয়া হচ্ছে এ জন্য তাঁর ওপর রুষ্ট হয়েছে বেইজিং।

আরও পড়ুনঃ জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব পদে মহিলা নেতা আসুক, প্রস্তাব হন্ডুরাসের

চ্যাংয়ের আত্মীয়া লুইসা ওয়েন অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এবিসিকে জানান যে, চ্যাং-এর নিখোঁজ থাকার বিষয়ে তাঁর পরিবার ও বিশেষ করে তাঁর দুই শিশু সন্তান খুবই উদ্বিগ্ন। কার্যত চ্যাং-এর সঙ্গে ঠিক কি হতে চলেছে সেবিষয়ে তাঁরা কিছুই বুঝতে পারছেন না। চ্যাংয়ের ১১ বছর বয়সী মেয়ে ও ৯ বছর বয়সী ছেলে তাদের মায়ের সঙ্গে কী হচ্ছে, তা বুঝতেই পারছে না।

চ্যাং লাইকে নিয়ে দুজন উচ্চপদস্থ অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক বেইজিংয়ে গ্রেফতার হলেন। এর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে বেইজিংয়ে গ্রেফতার হন চাইনিজ-অস্ট্রেলিয়ান লেখক ইয়াং হেংজুন। ইয়াংয়ের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ ৫৬ শিম্পাঞ্জির মৃত্যু, নতুন ব্যাকটেরিয়ার আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের

স্বাভাবিকভাবেই চ্যাংয়ের আটকের ঘটনায় চীনে বসবাসরত বিদেশি সাংবাদিকদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। চ্যাংকে হেফাজতে নেওয়ার পরপরই অস্ট্রেলিয়ার দুই সাংবাদিক বিল বির্টলস ও মিসেল স্মিথ চীন ত্যাগ করে নিজের দেশে ফিরে যান। চ্যাংয়ের মতো তাঁরাও আটকের আশঙ্কায় ছিলেন। এমনকি চ্যাংয়ের বিষয়ে তাঁদের কাছে নানা ধরনের তথ্য জানতে চাইছিল বেইজিং।

চ্যাংকে আটকের ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে মোট ছয়বার চিনে প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়। ২৭ জানুয়ারি ২০২১ শেষ বারের মতো চীনে পরিদর্শনে যান তাঁরা। চ্যাংয়ের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী ম্যারিস পেইন বলেছেন, ” আশা করবো আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চীন ন্যায়বিচারের মৌলিক মানদণ্ড বজায় রাখবে।” একই সঙ্গে তিনি বলেছেন যে, তিনি এও আশা করেন যে বেইজিং আন্তর্জাতিক আইনে স্বচ্ছতা বজায় রেখে মানবিক আচরণ করবে চ্যাং লাই এর প্রতি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here