শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে শাসক-বিরোধী সব পক্ষই। করোনার কারণে মিটিং মিছিল না করতে পারার কারণে ভার্চুয়াল প্রচারের বিষয়েও ভাবতে হচ্ছে সব দলকেই। এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূলের ‘সোজা বাংলায় বলছি’ ভিডিও সিরিজ শুরু স্বাভাবিকভাবেই সাড়া ফেলেছে রাজনৈতিক মহলে। আর তার প্রতিবাদে এবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে সক্রিয় হয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপিও।
গত রবিবার শুরু হওয়া ‘সোজা বাংলায় বলছি’ অভিযানের মাধ্যমে গত ৯ বছরে তাদের সরকারের বিভিন্ন ভালো কাজ ছোট ছোট বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরতে চলেছে তৃণমূল সরকার। সপ্তাহে তিনদিন একটি করে ভিডিও আপলোড করা হবে বলে জানান তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন। গত রবিবার একটি ভিডিও আপলোড করা হয় , যাতে দাবি করা হয় যে বাংলায় বেকারত্বের হার সবচেয়ে কম।
তৃণমূলকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেওয়া যাবে না বুঝে সক্রিয় হয়েছে বঙ্গ বিজেপিও। আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় পালটা ছোট ছোট কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করেন সোশ্যাল মিডিয়ায় । তিনি বলেন,’ খুব ক্যাজুয়ালি কিন্তু সিরিয়াসলি সোজা বাংলায় বলছি তৃণমূল হঠাও, মমতা দিদি হঠাও, বাংলা বাঁচাও। ওনার একটি সুস্থ, সবল, আনন্দময় জীবন কাটুক এই শুভেচ্ছা জানাই। উনি দীর্ঘায়ু হন, একজন লড়াকু নেত্রী হিসাবে উনি আনন্দে থাকুন। কিন্তু ওনার রাজনৈতিক নৃশংসতা ২০২১ এ সাফ হয়ে যাক। উনিশে হাফ করেছি একুশে সাফ করবই।’
আরও পড়ুনঃ দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সহকর্মীকে হারালাম, সোমেন মিত্রের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ প্রণব মুখোপাধ্যায়ের
পাশাপাশি তিনি তৃণমূলের এই ‘সোজা বাংলায় বলছি ‘ কর্মসূচির বিষয়ে বলেন, মানুষের কোটি কোটি টাকা খরচ করে এই অভিযানে আসলে তিনি বাঙালী আবেগকে উস্কে দিতে চেয়েছেন। যেহেতু বিজেপির সর্বভারতীয় নেতারা বাংলায় এসে হিন্দিতে বক্তৃতা দেন, তাই মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে একটি অবাঙালি দল হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন।
কিন্তু বিজেপি আসলে সর্বভারতীয় দল, তৃণমূল নাম রাখলেও সর্বভারতীয় উপস্থিতি নেই। কারণ বাংলার বাইরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দিল্লি, অসম, ত্রিপুরা, ওড়িশা কিংবা আন্দামান- সব জায়গাতেই জমানত জব্দ হয়েছে তৃণমূলের। আসলে বাঙালীকে বাংলাতেই আটকে রাখতে চান দিদি, ভারতীয় হিসেবে ভাবতে দিতে চান না। তৃণমূলের মত বিজেপি ব্যক্তিকেন্দ্রিক পরিবারতান্ত্রিক দল নয়।
আরও পড়ুনঃ প্রয়াত যুবনেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানালো জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব
বাবুল সুপ্রিয় আরও বলেন, বিজেপিতে অনেক নেতা, সকলে মিলে বসে আলোচনা করেই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলে বাঙালীর পাশাপাশি অনেক অবাঙালী নেতাও আছেন, যাদের মতামতও জরুরি। আপনি বাঙালী আবেগকে উস্কে দিতে চাইছেন। কিন্তু মানুষ এত বোকা নয়। গত নয় বছরে মানুষকে অনেক বোকা বানিয়েছেন। এটা আপনার অপরিণত মস্তিষ্কপ্রসূত একটি অভিযান। এটি আগের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির মতো মুখ থুবড়ে পড়বে এবং মানুষের ভোটে গণতান্ত্রিকভাবে আপনার সরকারকে উৎখাত করা হবে।
একই সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির যুবমোর্চার রাজ্যসভাপতি এবং বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁও ভিডিও প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, ‘সোজা বাংলায় বলছি তৃণমূল চোরদের দূর হঠাতে হবে আর কালীঘাটের মমতা দিদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার থেকে দূর হঠাতে হবে ।’ সব মিলিয়ে এই লকডাউন পরিস্থিতিতে তৃণমূল-বিজেপির ভার্চুয়াল বাকবিতণ্ডা বেশ ভালই উপভোগ করছেন সাধারণ মানুষ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584