গো বন্দনার বাঁদনা পরবে মেতেছে ঝাড়গ্রাম

0
641

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রামঃ

বাঁদনা পরবে মেতে উঠেছে ঝাড়গ্রাম।এক দিকে কালীপুজোর মণ্ডপ ও রাস্তা আলোর রোশনাইয়ে যখন ভেসে যাচ্ছে,সেই সময় জেলার বাসিন্দারা এই উৎসবে মেতে উঠল। প্রথা মেনে কালীপুজোর দিন থেকেই এই পরব শুরু হয়ে গেল।চলবে ভাই ভোঁটার দিন পর্যন্ত।

অনেকে বলেন বন্দনা থেকে বাঁধনা শব্দটি এসেছে।এই উৎসব মূলত গরুর বন্দনা করা।বস্তুত,এই পরব মূলবাসীদের। কালীপুজোর দিন গোয়াল ঘর পরিস্কার করা হয়।গোবর-মাটি দিয়ে নিকানো হয়। গরুদের স্নান করিয়ে শিংয়ে তেল মাখানো হয়।কপালে দেওয়া হয় সিঁদুরের টিপ।গোয়াল ঘরে প্রদীপ জ্বালানো হয়।আল্পনাও দেওয়া হয়।

গো বন্দনা।নিজস্ব চিত্র

কথিত রয়েছে, মহাদেব কালীপুজোর রাতে গৃহস্থের গোয়াল পরিদর্শন করতে আসেন।রাতে হয় গরু জাগান।ঝাগড় দল গৃহস্থের গোয়ালে ঢোল, করতাল সহযোগে গান গাইতে বেরোয়।সারা রাত ধরে তাঁরা গ্রামে গ্রামে গান শোনান। তাঁদের পিঠে খেতে দেওয়ার চল রয়েছে। পরের দিন হয় ‘গোহাল পুজো’।নতুন জামা-কাপড় পরে চাষের সরঞ্জাম লাঙল, জোয়াল,কোদাল ধুয়ে গোয়াল ঘরে রাখা হয়। বাড়ির এয়োস্ত্রীরা পুকুরে স্নান করে ভিজে কাপড়ে নতুন মালসায় ঘিয়ে ছেঁকা পিঠে তৈরি করেন।ভাই ফোঁটার দিন হয় গরু খুঁটান। গ্রামের ফাঁকা মাঠে গাছের মোটা ডাল পুঁতে সেখানে বলদ বা ষাঁড় বেঁধে রাখা হয়।তার পরে তার সামনে মরা পশুর চামড়া ঘুরিয়ে বিরক্তি তৈরি করা হয়। গোল করে ঘিরে থাকা দর্শকরা ঢাক, কাঁসর বাজান।প্রায় উন্মত্ত অবস্থায় বলদ বা ষাঁড় লাফালাফি করতে থাকে।তা দেখে খুশি হন দর্শকরা।এই সময় বাড়ির মেয়ে-জামাইকে বাড়িতে নিয়ে এসে আদর যত্ন করা হয়। জামাইকে শাশুড়ি ফোঁটা দেন।বাঁদনা এক ধরনের কৃষি উৎসব। মাঠে এই সময় পাকা ধান থাকে।ক’দিন পরেই সেই ধান গোলায় ভরা হবে।তাই তার আগে কৃষি কাজে সাহায্যকারী পশু গরুর যত্ন করা হয়।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here