বিহারের জয় থেকে বাড়তি উৎসাহ নিয়ে ঝাঁপাবে বঙ্গ বাম

0
88

উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ

বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে মহাজোটের শরিক বামেরা মাত্র উনত্রিশটি আসনে লড়ে ষোলোটি আসনে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই বিহারে বামেদের এই সমর্থন অক্সিজেন দিচ্ছে বাংলার বামপন্থীদের। গত দু’দশকের মধ্যে বাংলা, কেরল ও ত্রিপুরাবাদে দেশের মধ্যে আর কোথাও এরকম ভাবে ও সংখ্যায় আসন পায়নি বামপন্থীরা। স্বাভাবিক ভাবেই এই ফল বাংলার বামপন্থীদের উৎসাহী দেবে। কারণ বাংলায় শিয়রে বিধানসভা ভোট।

CPIM | newsfront.co

এই রাজ্যের বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিহারে দু’শো তেইশটি বিধানসভা আসনে এগিয়ে ছিল। আর বিরোধীরা এগিয়ে ছিল মাত্র পনেরোটি আসনে। এটি কারণ মানুষের রুটি-রুজি ও দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে দেশের এই খারাপ সময়েও বামপন্থীরা লড়াই করতে পেরেছে।

Dipankar Bhattacharya | newsfront,co
সিপিআই (এম-এল) নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্য

এ রাজ্যের সাধারণ মানুষও দেখেছে সীমিত ক্ষমতার মধ্যে বামপন্থীরা কীভাবে বিনি পয়সার ক্যান্টিন ও চিকিৎসা কেন্দ্র খুলে পাশে দাঁড়িয়েছে। তাই বিহারের মত এরাজের মানুষের সমর্থন পাবে এ রাজ্যের বামপন্থীরা।“

আরও পড়ুনঃ রাজ্য পাচ্ছে নতুন তিনটি পুলিশ ব্যাটেলিয়ন, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

সিপিআই(এম) নেতা রবীন দেব এবিষয়ে বলেছেন,”করোনা পরিস্থিতি ও দেশের দুর্যোগে দুর্গতেরা পাশে বামপন্থীরা থাকে। তাই দেখেই তো বিহারের সাধারন মানুষ বামপন্থীদের ভোট দিতে কার্পণ্য করেনি। বিহারের মত এরাজ্যে ও বামপন্থীরা সাধারণ মানুষের সমর্থন পাবে বলে আমি মনে করি।

CPIM Leaders | newsfront.co
বামফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ

যদিও বিহারে বেশ কিছু আসনে বামপন্থী প্রার্থীরা প্রথমের দিকে জিতে যায়। তাদের নাম নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বের হয়ে গেলেও পরে তাদের পাঁচ ভোটে দশ ভোটে জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে সার্বিক জোট হলে শাসক বিরোধীরাই জিতবে।“

আরও পড়ুনঃ আসানসোলের ৬ কয়লা ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ সিবিআইয়ের

বিহারে বামেরা যে ষোলোটি আসনে বামপন্থীরা জিতেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফল করেছে সিপিআই(এম-এল)। বারোটা আসনে তারা জিতে যায়। সিপিআই ও সিপিএম দুটি করে আসন জিতেছে।

এর মধ্যে ভরতপুর সিপিআই (এম) প্রার্থী অজয় কুমার, মানিতে সত্যেন্দ্র যাদব ও বলরাম পুরে লিবারেশনের মেহেবুব আলমের মত প্রার্থী জিতে গিয়েছেন। মাত্র উনত্রিশটি আসনে লড়ে বামপন্থীরা ষোলোটি আসনে জিতে বামেরা আবার চর্চায় ফিরে এসেছে।

আরও পড়ুনঃ বিহার: শেষ পর্যন্ত জয়ী এনডিএ জোট, এক নম্বরে তেজস্বীর আরজেডি

প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালের বিধানসভা ভোটে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদের জনতা দলের সঙ্গে জোট বেঁধে ৩২৪ আসনের মধ্যে সিপিআই ২৬, সিপিআই(এম) ৬ এবং সিপিআই (এম-এল) আলাদা লড়ে ৬টি আসন জিতেছিল। সেটাই বিহারে বামেদের সবচেয়ে ভালো ফল ছিল। তারপর থেকে বিহারে ধারাবাহিক ভাবে সিপিআই এবং সিপিআই (এম)’এর আসন কমেছে।

২০১০ সালে সিপিআই বিহারে মাত্র ১টি আসনে জিতেছিল। আর সিপিআই (এম) ২০০৫ এরপর খাতাই খুলতে পারেনি। ২০১৫ সালের ভোটে সিপিআই (এম-এল) মাত্র ৩টি আসনে জিতেছিল। সিপিআই এবং সিপিএম এসে ঠেকেছিল শূন্যতে।

বিহারে বামেদের স্টার লিডার কানহাইয়া কুমার। তাঁকে ভোটে দাঁড় না-করানোয় বিস্তর জল্পনা শুরু হয়েছিল। লালুপুত্র তেজস্বী যাদবের কাছে কানহাইয়ার জনপ্রিয়তা ম্লান হয়েছে বলেও প্রশ্ন তুলেছিল সমর্থকরা। এরই মধ্যে হিন্দিভাষীদের মধ্যে কানহাইয়ার থেকেও বেশি সমর্থন পেল দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের সিপিআই (এম-এল)। বিহার ভোটের ফলাফলে দিনের শেষে স্টার তাঁরাই। বলা বাহুল্য বিজেপির থেকে ধাক্কা খাওয়া মহাগঠবন্ধনে বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছে বামেরাই। যা নিয়ে উচ্ছসিত বঙ্গ বাম শিবিরও।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here