কলকাতার যুবকের অদম্য লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়াতে চালু বাংলা ভাষায় সরকারি ওয়েবসাইট

0
64

নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ

বাংলায় লেখা কোনও ওয়েবসাইট- “মহামারির দুর্যোগকালীন ছুটি ভাতা ১৫০০ ডলার।“ হঠাৎ দেখলে চোখ কপালে উঠবে অনেকেরই,কিন্তু এমনটাই ঘটেছে বাস্তবে। সুদূর অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া স্টেট। করোনা সংক্রান্ত হাজারো তথ্য, সাবধানবানী, পরামর্শ সব কিছুই বাংলায় লেখা। কলকাতার বাঙালি যুবকের লড়াইয়ের ফল অস্ট্রেলিয়াতে। অর্ণব ঘোষ রায়ের বক্তব্য, এবার লড়াই ভিক্টোরিয়াতে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে বাংলার অন্তর্ভুক্তিকরণ।

arnab | newsfront.co
অর্ণব ঘোষ রায়

কিভাবে নিরাপদ ও সুস্থ থাকা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে কী কী সরকারি সাহায্য পাওয়া যেতে পারে, পরীক্ষা ও নিভৃতবাস, নিরাপদে থাকাসহ যাবতীয় বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া স্টেটের স্বাস্থ্য দফতরের বাংলা ওয়েবসাইটে।

বাংলা ভাষা নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি স্তরে দীর্ঘ লড়াই এখনও চলছে পশ্চিমবঙ্গে। প্রধানত বাংলাভাষী রাজ্য হলেও বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাংক-সহ অনেক সংস্থায় বাংলায় কথাই বলেন না কর্মীরা এমনকি বাংলা জানেনও না অনেক অবাঙালি কর্মী।

আরও পড়ুনঃ বন্ধু প্রীতিতে ভোট লাভ হচ্ছে না ট্রাম্পের, বলছে সমীক্ষা

বাংলা ভাষার অপমান নিয়ে কলকাতা মেট্রো রেলেও বিক্ষোভ হয়েছে সাম্প্রতিক কালে। অভিযোগ পাওয়া গেছে , কলকাতায় কিছু অবাঙালি সংস্থা বাঙালি কর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে। সেখানে সুদূর অস্ট্রেলিয়ার একটি অঞ্চলে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বাঙালিদের কথা চিন্তা করে বাংলায় ওয়েবসাইটই চালু করে ফেললেন কলকাতারই বছর আটত্রিশের বাঙালি যুবক অর্ণব ঘোষ রায়।

অর্ণবের বাবা ছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারি। ২০০৩-তে পরিবারের আর্থিক সংকটের মধ্যেও পড়াশুনা করতে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া। কলকাতার এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান অর্ণব। দুবছর পর ফেডারেল ইউনিভার্সিটি থেকে কমার্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৭-তে অ্যাসোসিয়েট মেম্বার অব ইন্সটিটিউট অব পাবলিক অ্যাকাউন্টেন্ট। ২০০৯ সালে সেখানে নাগরিকত্বের অধিকার পান। ২০১৪ তে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ। সলিসিটর হতে চান, তাই এখন ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব ল পড়ছেন অর্ণব। বিদেশে গিয়ে একদিকে নিজের অস্তিত্বের লড়াই, একইসঙ্গে বাঙলা ভাষা ও বাঙালির হয়ে লড়াইয়ে সফল হলেন কলকাতার যুবক।

আরও পড়ুনঃ নিলাম তত্ত্বের স্বীকৃতি, অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী পল আর মিলগ্রোম, রবার্ট বি উইলসন

ভারতের ৫৪,৫৬৬জন বাঙালি অস্ট্রেলিয়ার পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট রয়েছেন ভিক্টোরিয়ায়। এছাড়া বাংলাদেশের বাঙালিও আছেন সেখানে। দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়ায় থাকার পর অর্ণবের মনে হয় ভাষাগত কারণে বাঙালি প্রবীণরা সেখানে বিভিন্ন ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। ভাষাগত অসুবিধা দূর হলে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া সহজতর হতে পারে তাঁদের।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংসদের সঙ্গে আলোচনা করেন অর্ণব। বিষয়টি মেলবোর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় ও ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনার জন্যও উত্থাপন করেন অর্ণব। সেখান থেকেই সরকারি স্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়। অস্ট্রেলিয়ায় সরকারি নীতি নির্ধারনে বিশেষ ভূমিকা থাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির। অবশেষে দিন কয়েক আগে চালু হয় স্বাস্থ্য দফতরের বাংলা ওয়েবসাইট, অর্ণবের লড়াইয়ের ফল। এবার অর্ণবের লড়াইয়ের পরবর্তী পর্যায়, ভিকটোরিয়া স্টেটে বাংলাকে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে অন্তর্ভুক্তিকরণ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here