৫০ বছর আগের প্রয়াত অভিনেতার নামে আমন্ত্রণপত্র! বিজেপি কর্মীদের অজ্ঞতায় হতবাক পরিবারের সদস্যরা

0
108

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ

একুশে বাংলা বিজয় বিজেপির পাখির চোখ। ভোট যুদ্ধ যত এগোচ্ছে ততই নিজেদের ‘বহিরাগত’ তকমা ঘুচিয়ে, বাংলা তথা বাঙালির দল হিসাবে প্রমাণে মরিয়া গেরুয়া শিবির। শাসকদল তৃণমূল বারবার বিজেপিকে অবাঙালিদের দল বলে আক্রমণ করেছে।

jahor ganguly | newsfront.co
জহর গাঙ্গুলি

বলেছে, বাংলার মনীষী তথা বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সম্মান দেওয়া তো দূরের কথা, তাঁদের সম্পর্কে কোন জ্ঞানই নেই বিজেপির। সেই অপবাদ ঘুচিয়ে একুশের আগে বাঙালির ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়াই লক্ষ্য বিজেপির। কিন্তু বিধি বাম, বাঙালি প্রমাণ করতে গিয়ে বারে বারে নিজেদের হাস্যকর করে তুলছে তারা।

উল্টে তৃণমূলের অভিযোগ যে অনেকটাই সত্যি তা প্রমাণ হয়ে গেল গত বুধবারের আর একটি ঘটনায়। প্রায় ৫০ বছর আগে প্রয়াত বাঙালি অভিনেতা জহর গাঙ্গুলির বাড়ি গিয়ে তাঁর নাম ধরেই ডাকাডাকি শুরু করলেন বিজেপি কর্মীরা। আবার তাঁরই নামে আমন্ত্রণ পত্রও দিয়ে এলেন অভিনেতার নাতনির হাতে।

আরও পড়ুনঃ সারদাকাণ্ডে রাজীব কুমারকে হেফাজতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন সিবিআইয়ের

গত বুধবার সন্ধ্যাবেলা দক্ষিণ কলকাতার ডোভার লেনে প্রয়াত অভিনেতা জহর গাঙ্গুলির পৈতৃক বাড়িতে হাজির হন দুই বিজেপি কর্মী। সেই বাড়িতে বর্তমানে থাকেন সুজাতা দেবী, জিমি সাউথ পয়েন্ট স্কুলের শিক্ষিকা। তিনিই গোটা বিষয়টি সকলকে জানান।

তিনি জানান, সন্ধ্যাবেলা দুজন লোক দাদুর নাম ধরে ডাকাডাকি করছিলেন । ১৯৬৯ সালে মৃত্যুর পর এই নাম ধরে ডাক কারও মুখে শোনেননি তিনি। ফলে একটু খটকা লাগে তাঁর। এরপর সুজাতা দেবী বাইরে আসতেই দুজন তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ”জহরদা কি বাড়ি আছেন? আসলে, ওঁকে ফোনে পাচ্ছিলাম না, তাই আমরা এলাম।”

আরও পড়ুনঃ মুর্শিদাবাদ জেলায় চাকরির নাম করে টাকা তুলতে গিয়ে আটক ছয়

শুনে তো প্রায় আকাশ থেকে পড়েন সুজাতাদেবী। বিস্ময়ের ঘোরে কী বলবেন নিজেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। নিজেদের বিজেপি কর্মী বলে পরিচয় দেন আগত দুই আগন্তুক। এরপর প্রয়াত অভিনেতার নামাঙ্কিত একটি কার্ড দিয়ে ২৫ ডিসেম্বর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিবস উপলক্ষে ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডে রক্তদান শিবিরে তাঁকে উপস্থিত থাকার কথা বলেন তাঁরা।

তাঁরা অনুরোধ করেন, ওইদিন সকালে জহরবাবুকে শিবিরে থাকতেই হবে। সুজাতা দেবী বলেছেন, যাঁরা এমনটা ভেবে বসে আছেন তাঁদের ভুল ভাঙাতে যাওয়া একপ্রকার বৃথা। তাই অভিনেতার প্রয়াত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আর কথা বাড়াননি তিনিও।

আরও পড়ুনঃ মনোরঞ্জনের উপর হামলার প্রতিবাদে মিছিল তৃণমূলের

১৯৬৯ সালে প্রয়াত হওয়া অভিনেতার সম্পর্কে কি কিছুই জানেন না নব্য বিজেপি কর্মীরা নাকি নেতৃত্বের চাপে যেমন করে হোক লক্ষ্যপূরণের জন্য কার্ড দেওয়ার বাহানায় বেমালুম মিথ্যা কথা বললেন কর্মীরা? এই ভ্রান্তি কাটানোর জন্য রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর সাফাই, ”আমাদের কর্মীরা হয়তো ভুল করেছে।

হয়ত অন্য কোনও জহর গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি কার্ড পৌঁছে দিতে গিয়ে প্রয়াত অভিনেতার বাড়ি চলে গিয়েছেন। ওঁদের আরও দেখেশুনে কাজ করতে বলব।” শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টায় তাঁর বক্তব্য,” তবে আমরা কিন্তু বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিত্বদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here