নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ
বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর আপাতত প্রবল ক্ষুব্ধ এনআরসি ইস্যুতে। তাঁকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে গেরুয়া শিবিরে। উত্তর ২৪ পরগণার মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে শান্তনু ঠাকুর নাগরিকত্ব ইস্যুকে সামনে রেখেই জয়ী হয়েছিলেন। নাগরিকত্ব আইন প্রণয়নের বছর ঘুরেছে কিন্তু লাগু হয়নি আইন। ধৈর্য হারাচ্ছেন ওপার থেকে এপারে আসা মানুষগুলো।

চাপ বাড়ছে বিজেপি সাংসদের ওপর। দলের কেন্দ্রীয় অবস্থানের বাইরে গিয়ে নাগরিগত্ব আইন দ্রুত বলবৎ করার জন্য মুখ খুলেছিলেন ঠাকুর পরিবারের ছোট নাতি শান্তনু। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন নাগরিকত্ব পাওয়ার আশ্বাস পেয়ে তখনকার মতো চুপ করে যান বিজেপি সাংসদ।
কিন্তু সব সুর উল্টে বেসুরো হয়ে গেল অমিত শাহের সফরের পর। নাগরিকত্ব আইন কবে লাগু হবে এই প্রশ্নে কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, “কোভিডের টিকাকরণ শুরু হওয়ার পরেই এনআরসি চালু করার কথা ভাববে কেন্দ্রীয় সরকার।“ আর এতেই আক্কেল গুড়ুম শান্তনু ঠাকুরের।
আরও পড়ুনঃ সিয়াচেনে ভারতীয় সৈনিকের ছবি বলে রাশিয়ান সেনার ছবি টুইট অবসরপ্রাপ্ত আইজি-র
বনগাঁর বিজেপি সাংসদ জানিয়েছেন, “করোনার ভ্যাকসিন ও সিএএ-র কোনও সম্পর্ক নেই। কোভিডের টিকাকরণ কবে চালু হবে, তার কোনও দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। তা ছাড়া, কোভিডের টিকা দেওয়া শুরু হলেই যে নাগরিকত্ব আইন লাগু হয়ে যাবে, তেমনটা নয়। পুরো বিষয়টিই এখন ঝুলে রইল।“
শান্তনু ঠাকুরের এই ক্ষোভ ই আপাতত চিন্তার কারণ পদ্ম শিবিরের। তাঁর বিজেপি ত্যাগের জল্পনাও তৈরি হচ্ছে। গোটা বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ জেলা বিজেপি নেতৃত্বও। এই পরিস্থিতিতে সাংসদের মানভঞ্জনের চেষ্টার পাশাপাশি বিধানসভার আগে মতুয়াদের আস্থা ধরে রাখতে মরিয়া কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়রা।
আরও পড়ুনঃ দমদমে চা-চক্রে আক্রমণাত্মক দিলীপ ঘোষ
দলের অবস্থান নিয়ে শান্তনু প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলতেই অবশ্য সোচ্চার তৃণমূল। সুযোগের সদব্যবহারে মরিয়া জোড়া-ফুল শিবির। শান্তনু ও বিজেপির মধ্যে দূরত্ব বাড়াতে তাই ময়দানে ঠাকুর বাড়িই বড় বউ তথা বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।
তিনি বলেছেন, “এই আইন চালু করলে বিজেপি মনে করছে মতুয়ারা তাঁদের থেকে সরে যাবে, তাই চালু করছে না। এখন শান্তনুকেই জবাব দিতে হবে কেন সিএএ লাগু হল না। আর দলে থেকে বিরোধিতা করলে তা ভুয়ো বলেই মনে করব। দলত্যাগের মাধ্যমেই শান্তনু প্রমাণ করুক বিজেপি সিএএ লাগু করতে চায় না।“
সব মিলিয়ে বঙ্গ জয়ের স্বপ্নে বিভোর বিজেপির কাছে খুশির খবর ছিল শুভেন্দু সহ রাজ্যের শাসক শিবিরের অনেকের পদ্মের হাত ধরা। কিন্তু উল্টো পথে হেঁটে এবার যদি সাংসদ শান্তুনু ঠাকুর দল ছাড়েন, তবে তা মাথা ব্যথার কারণ হবে বঙ্গ বিজেপির।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584