মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
বিজেপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দিনহাটা ১ নং ব্লকের ভেটাগুড়ি বাজার এলাকায়। ওই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তা স্বাভাবিক হয়। যদিও ওই ঘটনার কথা অস্বীকার করে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্বরা।
অভিযোগ, ১লা জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস ছিল ভেটাগুড়িতে। সেই উপলক্ষে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ভেটাগুড়ি বাজার এলাকায় মিছিল করা হয়। মিছিল শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই বাজার এলাকায় চিৎকার চেঁচামেচি ও দুই একটা টোটো গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। এবং বিজেপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করার অভিযোগ তোলে বিজেপি কর্মীরা।
আরও পড়ুনঃ বর্ষবরণের জটলা কাটানোর প্রস্তুতি দেখতে পার্কস্ট্রিটে গোয়েন্দা প্রধান
পরে আতঙ্কিত হয়ে দোকান বন্ধ করে দেয় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এবং তারা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ এসে তাদের সাথে কথা বলে রাস্তা অবরোধ তুলে দেয়। বিজেপির ২৩ নং জেড পি মণ্ডল সভাপতি গোপাল চন্দ বলেন, “আজ তৃণমূলের একটা মিছিল ছিল। সেই মিছিল শেষে তারা লাঠি শোটা নিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের উপর অত্যাচার করে ও দোকান খামার সব বন্ধ করে দেয় এবং আমাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে। তৃণমূল কংগ্রেস এলাকায় যেভাবে সন্ত্রাস করছে তা কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই এই ঘটনায় যারা প্রকৃত দোষী তাদের গ্রেফতার করা হোক।”
আরও পড়ুনঃ বর্ষবরণের রাতে আইন ভাঙার অভিযোগ, গ্রেফতার ৫১৯
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা রহমত আলি খোন্দকার। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আমরা ভেটাগুড়ি ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ভেটাগুড়ি বাজার এলাকায় একটি মিছিল করা হয়। মিছিল শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা সব্জি বাজারের দলীয় কার্যালয়ে চলে আসি।
আরও পড়ুনঃ পর্ণশ্রীতে বর্ষবরণের রাতে মৃত্যু যুবকের
তারপর হঠাৎ চিৎকার শুনতে পাই বাজারে। তখন আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী বাজারের দিকে যায়। সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পায় সাংসদের বাড়িতে থাকা কয়েকজন ছেলে দুটি টোটোতে ভাঙচুর চালাচ্ছে। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে তারা বাজারের ব্যবসায়ীদের হুমকি দেয় দোকান বন্ধ করার। তারপর তারা তাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে সাংসদের বাড়িতে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুনঃ ফাঁসিদেওয়ায় বালি বোঝাই ট্রাক্টর আটক,ধৃত ২
পরে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে জোর করে রাস্তা অবরোধ করার কথা জানায়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তখন বাধ্য হয়ে রাস্তা অবরোধ করে। কারণ বিজেপি দেখে যে আজকে একটা অঞ্চল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে প্রায় ৩ হাজারের বেশি কর্মী নিয়ে এসে মিছিল করছে। হয়তো তারা ভাবছে আমরা তো শেষ। তাই তারা নিজেরাই নিজেদের দলীয় কার্যালয় ভেঙ্গে তৃণমূলের বদনাম করার চেষ্টা করছে।”
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, আমরা তৃণমূল কংগ্রসের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনারা কারও কথা বা কোন রাজনৈতিক দলের হুমকিতে ভয় পাবেন না। আপনারা ভালভাবে ব্যবসা করুন। কোন চক্রান্তের শিকার হবে না।
আরও পড়ুনঃ ডায়মন্ড হারবারে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু
এবিষয়ে ব্যবসায়ী সমিতির বলরাম বসাক বলেন,”আজ তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে মিছিল ছিল। তারা শান্তিপূর্ণ মিছিল শেষ করে তাদের দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যায়। পরে কে বা কারা এসে বিজেপির দলীয় পতাকাগুলো খুলে ফেলে দেয়। এবং ব্যবসায়ীদের দোকান তাড়াতাড়ি বন্ধ করতে বলে। পরে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে দোকান খামার বন্ধ করে দেয়। পরে ব্যবসায়ীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। পরে পুলিশ এসে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে পথ অবরোধ তুলে দেয়।”
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে সব দলই ভালো। আমরা কারও বিরোধিতা করিনা। আমরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে বিশেষ অনুরোধ করছি। ভেটাগুড়ি বাজার এলাকায় কোন রাজনৈতিক দলের যাতে মিটিং মিছিল না হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
তারা গ্রামে-গঞ্জে মিছিল মিটিং করুক কিন্তু বাজারে আর মিছিল-মিটিং নয় বলে দাবি জানান তিনি। কারণ ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত রয়েছে, তাদের নিরাপত্তা নেই। এলাকায় পুলিশ থাকলেও তাদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584