উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
এ রামায়ণের বিভীষণ নয়। তবুও বাঁকুড়ার চতুরডিহির বিভীষণকে নিয়ে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি অব্যাহত।
হঠাৎই বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামের বিভীষণ হাঁসদার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ভাবিত হয়ে পড়েছে গোটা রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু বিভীষণ হাঁসদা কোনো কিছুরই পড়োয়া করছেন না।
পড়োয়া করবেন বা কেন? চতুরডিহির বিভীষণ বাঁকুড়ার একজন প্রান্তিক চাষি হলেও তিনি যে স্বয়ং ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত পছন্দের! ৫ নভেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিভীষণের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন। ব্যস! তার পরেই রাতারাতি বিভীষণ একেবারে যেন লঙ্কাকাণ্ডের মধ্যে পড়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ভাগ্নির শপথ অনুষ্ঠানে মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিচ্ছেন মামা
সব রাজনীতির লোকজন তার বাড়িতে চলে যাচ্ছেন তার খোঁজ-খবর নিতে। দিচ্ছেন সাহায্যের আশ্বাস। নতুন উপহারের ডালি নিয়ে বিভীষণের বাড়িতে চলে গিয়েছে বিজেপি, তৃণমূল ও রাজ্য প্রশাসন!
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাঁকুড়া থেকে ফেরার পরই বিভীষণের বাড়িতে যান জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য সোনাই মুখার্জী। রবিবার সকালে বিভীষণের বাড়ি গিয়ে তার মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া ও হাঁসদা পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। তিনি বিভীষণের বাড়ি থেকে বের হতেই হাজির হন বাঁকুড়া ১-এর বিডিও বিপ্লবকুমার রায়। তিনিও পরিবারটির পাশে থাকা ও বিভীষণের মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুনঃ জল্পনার মাঝেই মুর্শিদাবাদে স্মরণসভায় এসে অনুগামীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুভেন্দুর
অথচ এতদিন বিভীষণ খুবই কষ্টে কাটিয়েছেন। নিজে প্রান্তিক চাষি। কতটুকুই-বা রোজগার! এর ওপর তার ক্লাস ইলেভেনে পড়া মেয়ে আবার বেশ কয়েক বছর ধরে রক্তের এক জটিল অসুখে ভুগছে। টানাটানি ও উদ্বেগের মধ্যেই দিন কাটে তার।
এবার রাজনীতির দৌলতে রাতারাতি বিভীষণ খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, রাজনীতিরই শিকার হয়েছেন বিভীষণ। সব পক্ষই তাকে বলতে চাইছেন, তুমি, আমাদেরই লোক! রামায়ণে বিভীষণের অবস্থান নিয়ে একটা সময়ে ধন্দে পড়েছিল রাম-রাবণ দুই শিবিরই। পরে অবশ্য পুরাণের বিভীষণ রামের কাছে নিজেকে সমর্পণ করে সেই ধন্দ ঘোচান। এই বিভীষণ কি সে রকমই কিছু একটা করবেন?
বিভীষণ নিজে অবশ্য এ সব রাজনৈতিক দড়ি টানাটানির মাঝে যেতে নারাজ। তার বক্তব্য, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী নন। বিভিন্ন দল ও প্রশাসন যেভাবে তার সাহায্যে এগিয়ে এসেছে তাতে তিনি খুশি।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে এতদিন তা হলে উপেক্ষিত থাকল কেন বিভীষণের দুঃস্থ পরিবার?
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584