দলবিরোধী মন্তব্যের জন্য সায়ন্তন বসুকে শো-কজ করল বিজেপি

0
275

উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ

কথায় আছে -‘ঝিকে মেরে বৌকে শাসন’। সেরকম ভাবে আসানসোলের পুরপ্রধান তৃণমূলের নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে দলে না নেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল-সুপ্রিয়। তাঁকে সমর্থন করেছিলেন খোদ রাজ্যের সভাপতি দিলীপ ঘোষও।

sayantan basu | newsfront.co
ছবিঃ ফেসবুক

কিন্তু সংবাদমাধ্যমে দলবিরোধী এবং নিম্নরুচির মন্তব্য করার কারণে দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে শো-কজ করল রাজ্য বিজেপি। কারণ বাবুলের মন্তব্য সমর্থন করেছিলেন সায়ন্তন বসু। বাবুল সুপ্রিয় ও খোদ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে শোকজ না করে সায়ন্তনকেই বলির পাঁঠা করা হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

সায়ন্তন বসুর কাছে চিঠিতে এই বিষয়েও কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে যে, ওই কাজের জন্য তাঁর কেন কড়া শাস্তি হবে না, তা নিয়ে সাতদিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে। মজার ও তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল শোকজের চিঠি সায়ন্তন বসুর হাতে ধরালেন খোদ দিলীপ ঘোষই।

আরও পড়ুনঃ কয়লা পাচার কান্ডে কলকাতায় তল্লাশি শুরু সিবিআই-র

কোন মন্তব্যের জন্য ওই শাস্তি, তা চিঠিতে লেখা নেই। তবে বিজেপি-র অন্দরের খবর, জিতেন্দ্র তিওয়ারির দলে যোগদান নিয়ে মন্তব্যের জেরেই ওই শাস্তি। তবে জিতেন্দ্রের দলে যোগদানের বিরোধিতা করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয় এবং দিলীপ ঘোষও। আপাতদৃষ্টিতে তাঁদের কোনও শাস্তি দেওয়া হয়নি। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ‘দিলীপের নির্দেশে’ই ওই শাস্তি বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।

যা থেকে বিজেপি-র অন্দরের জল্পনা— সায়ন্তনকে শাস্তি দিয়ে আসলে বাবুল এবং দিলীপকেও বার্তা দিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। যাকে বলে, ঝি-কে মেরে বউকে শেখানো। দিলীপকে দিয়ে ওই নির্দেশ দেওয়ানো এবং সে কথা শো-কজের চিঠিতেও উল্লেখ করার মধ্যে একই উদ্দেশ্য রয়েছে বলে দলের একাংশ নেতারা মনে করছেন।

আরও পড়ুনঃ শাহের অভিযোগ মিথ্যার বেসাতি, পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি সৌগতর

শোকজের এই চিঠিতে জানানো হয়েছে, সায়ন্তন বসু গত ১৮ ডিসেম্বর সংবাদমাধ্যমে দলবিরোধী এবং নিম্নরুচির মন্তব্য করেছেন। যা দলের অবস্থানের সম্পূর্ণ বিরোধী। দল এই ধরনের বক্তব্য সমর্থন করে না।

দলের সংবিধান অনুযায়ী, এমন মন্তব্যের জন্য বহিষ্কার করা হতে পারে। কেন তাঁকে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে না, তা নিয়ে সাতদিনের মধ্যে সায়ন্তনের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। শো-কজের চিঠি প্রসঙ্গে সায়ন্তন যদিও বলেন, ‘‘আমি দলের একনিষ্ঠ কর্মী। আমি উত্তর দিয়ে দিয়েছি।”

আরও পড়ুনঃ বুধবার প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিঃ মুখ্যমন্ত্রী

সায়ন্তনের পাশাপাশি শো-কজ করা হয়েছে নাগরাকাটার মন্ডল সভাপতি সন্তোষ হাতি, আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাকেও। তিন জনের ক্ষেত্রেই শো-কজের কারণ এক। সন্তোষের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ১৯ ডিসেম্বর তাঁর নেতৃত্বে এলাকায় যে সভা হয়েছে, সেখানে দলবিরোধী স্লোগান তোলা হয়েছিল। অভিযোগ, সেখানে মন্ডল সভাপতির সরাসরি হাত ছিল।

সে কথাও চিঠিতে লেখা হয়েছে। নাগরাকাটার বিধায়ক শুক্রা মুণ্ডা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর, সেখানেও দলবদল নিয়ে বিজেপি-র পুরনো নেতা-কর্মীরা উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। সেই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন সন্তোষ। গঙ্গাপ্রসাদও উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। দলের অন্দরের খবর, সে কারণেই শো-কজ করা হয়েছে তাঁদের। সন্তোষ এবং গঙ্গাপ্রসাদের সঙ্গে একাধিক বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে দু’জনের কেউই ফোন ধরেননি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here