নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
শনিবার সকালে উদ্ধার হল কেরলের কোঝিকোড় বিমানবন্দরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস বিমানটির ব্ল্যাক বক্স। ডাইরেক্টেরট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে।
ব্ল্যাক বক্সের মধ্যে থাকা ডেটা রেকর্ডারটিই জবাব দেবে দুর্ঘটনার আগের পরিস্থিতি ঠিক কী হয়েছিল। ব্ল্যাক বক্সের মধ্যে থাকে দুটি রেকর্ডার- একটি ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (ডিএফডিআর) এবং একটি ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর)।
ডিএফডিআর বিমানটি কোন উচ্চতায় উড়ছিল, তার অবস্থান কোথায় ছিল এবং বিমানের গতি কী ছিল সেই সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ করে। পাশাপাশি সিভিআর বিমান চালকদের মধ্যে হওয়া সমস্ত কথোপকথনের রেকর্ড রাখে। উদ্ধার হওয়া এই ব্ল্যাকবক্সের থেকে দুর্ঘটনার তদন্তে নামা আধিকারিকরা দুর্ঘটনার আগের প্রতিটা মুহূর্তের বিষয় জানতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ একদিনে করোনায় মৃত ৯৩৩
দুবাই থেকে যাত্রীদের নিয়ে বিমানটি ভারতে ফিরছিল। শুক্রবার রাত ৭ টা ৪১ মিনিটে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ৩৫ ফুট দূরে ছিটকে পড়ে বিমানটি। ওই বিমানটিতে ২ পাইলট ও বিমানকর্মী সহ মোট ১৯০ জন সওয়ার হয়েছিলেন। কেরলের কোঝিকোড়েতে ওই বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান দুই পাইলট সহ মোট ১৮ জন।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন। ঘটনাস্থল সরেজমিনে দেখার পর তিনি বলেন, “কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” অন্য দিকে, উদ্ধারকাজের জন্য মালাপ্পুরম এবং ওয়নাড থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর(এনডিআরএফ) দুটি এবং সিআইএসএফ-এর একটি দল এ দিন সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুনঃ কেরল বিমান দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮
কোঝিকোড় বিমানবন্দরটি ‘টেবল টপ’-এ হওয়ার জন্য বিমান ওঠানামায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। রানওয়ে দৈর্ঘ্যে ছোট হওয়ায় বোয়িং ৭৭৭ এবং এয়ারবাস এ৩৩০-সহ বহু বড় বিমান এই বিমানবন্দরে ওঠানামা বন্ধ করে দিয়েছিল।
এয়ার সেফটি বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন মোহন রঙ্গনাথন জানান, এই বিমানবন্দর বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রে যে নিরাপদ নয় তা সবিস্তার রিপোর্টে জানিয়েছিলেন আজ থেকে ৯ বছর আগে। তিনি বলেন, “কেরলের চারটে বিমানবন্দরের মধ্যে কোঝিকোড় বিমানবন্দরের রানওয়ে তুলনামূলক অনেক ছোট। এর আগেও বৃষ্টির কারণে রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।”
আরও পড়ুনঃ কেরলে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা, মৃত ৫
“আবহাওয়ার রাডার অনুযায়ী, রানওয়ে ২৮-এ অবতরণের কথা ছিল বিমানটির, কিন্তু দু’বার অবতরণের সমস্যা হওয়ায় পাইলটরা রানওয়ে ১০-এ নামার চেষ্টা করতে গেলে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে”,জানিয়েছে ডিজিসিএ।
ডিজিসিএ-র আধিকারিকরা বলেন যে, বিমানটি তার পূর্ণ গতিতেই ছিল এবং রানওয়ে ১০ এর চারপাশে চক্কর কাটে বেশ কয়েকবার। কিন্তু অবতরণ করতে গেলে সেটি রানওয়ে থেকে ছিটকে যায়। তবে বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটলেও আরও অনেক মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হয়েছিল কারণ সৌভাগ্যবশত বিমানটিতে আগুন ধরে যায়নি, যার সবরকম সম্ভাবনা ছিল এদিন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584