গরুপাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে প্রথম গ্রেফতার বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমার

0
119

শুভম বন্দোপাধ্যায় কলকাতাঃ

বিধানসভা নির্বাচনের আগে এবার গরু পাচার কান্ডের জাল গোটাতে শুরু করল সিবিআই। ঠিক যেমনভাবে লোকসভা নির্বাচনের আগে নারদ কান্ডে গ্রেপ্তারি শুরু হয়েছিল, সেভাবেই গরু পাচারকারীদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ এবার গ্রেফতার করা হল বিএসএফ কমান্ড্যান্ট সতীশ কুমারকে।

Satish Kumar | newsfront.co
সতীশ কুমার

মঙ্গলবার সকালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। সারাদিন জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গরু পাচার কাণ্ডে অনেক বড় বড় মাথার সঙ্গে অভিযুক্ত এই বিএসএফ কমান্ডার জড়িয়ে রয়েছেন বলে সিবিআই সূত্রের খবর।

জেবি ম্যাথিউ নামে এক বিএসএফ আধিকারিককে গ্রেফতার করার পর সতীশ কুমারের হদিশ পান সিবিআই গোয়েন্দারা। গরু পাচার করে কিভাবে সতীশ ঘুষ নিতেন, তার পুরোটাই প্রকাশ্যে উঠে আসে গোয়েন্দাদের কাছে। আদতে গরু নিয়ে আসা হলেও নথিতে সেগুলি হয়ে যেত ছোটো এবং কম ওজনের বা ‘বাছুর’।

আরও পড়ুনঃ দলনেত্রীর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীর

আর গরুর যে আসল দাম, তার থেকে কম দামে সেই ‘বাছুর’ নিলাম করা হত। সেখান থেকে বিএসএফ ও শুল্ক দফতর আধিকারিকদের মিলত ‘ঘুষ’। এই এএফআইআরে নাম রয়েছে বিএসএফের ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের প্রাক্তন কমান্ডান্ট সতীশ কুমার, পাচার চক্রের মাথা এনামূল হক-সহ আনারুল শেখ এবং মহম্মদ গোলাম মুস্তাফার।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মালদহে ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন সতীশ কুমার। যিনি এখন ছত্তিশগড়ের রায়পুরে মোতায়েন আছেন। বাংলা থাকার সময় তাঁর অধীনে মালদহে দুই এবং মুর্শিদাবাদে চার কোম্পানি বাহিনী ছিল।

ওই ১৬ মাসে পাচারের আগে সীমান্তে ২০,০০০-এর বেশি গরু বাজেয়াপ্ত করেছিল বিএসএফ। কিন্তু কখনও গাড়ি এবং পাচারকারীরা সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর জালে ধরা পড়েনি। সেখানেই পাচারকারীদের সঙ্গে এক শ্রেণির বিএসএফ ও শুল্ক দফতর আধিকারিকদের যোগসাজশ উঠে এসেছে বলে খবর।

আরও পড়ুনঃ ফের সম্পত্তির হিসেব চেয়ে সস্ত্রীক মুকুল রায়কে নোটিশ ইডির

সূত্রের খবর, আসলে যে গরু বাজেয়াপ্ত করা হত, খাতায়কলমে তা পালটে যেত। গরুর ওজন কমে যেত। ছোটোও দেখানো হত। তারপরই কম দামে সেই বাজেয়াপ্ত গরুগুলিকে নিলামে তোলা হত। সিবিআইয়ের অভিযোগ, শুল্ক দফতরের নিলামে সেই গরুগুলি ফের কিনে নিত আনারুল ও মুস্তাফা।

এরকম আনুকূল্যের বিনিময়ে বিএসএফ আধিকারিকদের গরু পিছু ২,০০০ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের ৫০ টাকা দিত এনামূল হক। তাছাড়াও এনামূল, মুস্তাফা এবং আনারুল শেখের মতো সফল হওয়া লোকেদের থেকে নিলামে যে দাম উঠত, তার ১০ শতাংশ ঘুষ নিতেন শুল্ক দফতরের কয়েকজন আধিকারিক।’

অপর এক বিএসএফ কমান্ডান্ট জিবু টি ম্যাথুকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ২০১৮ সালের মার্চে এনামূলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তার আগে সেই বছর জানুয়ারিতে ৪৭ লাখ টাকা নগদ-সহ কেরালার আলাপ্পুজা স্টেশন থেকে ম্যাথুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

এনামূলের বিরুদ্ধে যে বেআইনি কাজের যোগ উঠেছিল, তা নিয়ে এপ্রিল থেকে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। সেই তদন্তেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে এরকম তথ্য উঠে আসে। তারপর বুধবার দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, শিলিগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ, পঞ্জাবের অমৃতসর এবং ছত্তিশগড়ের রায়পুরের ১৫ টি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। সেই মামলাতেই এদিন প্রথম গ্রেপ্তারি করল সিবিআই।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here