নিজস্ব সংবাদদাতা,ঝাড়গ্রামঃ
পৌষ সংক্রান্তি থেকে গ্রাম বাঙলার লৌকিক দেব দেবীর পুজো শুরু হয়ে যায় পুরো জঙ্গলমহল জুড়ে। এই পুজোকে কেন্দ্র করে বসে মেলা। ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা। চলে দেদার কেনাকাটা।

তবে অধুনা ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের ঠাকুরবাড়িতে এলাকার হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান বুলবুলি পাখির লড়াই দেখতে। দীর্ঘ কয়েক শতাব্দী প্রাচীন এই বুলবুলির লড়াইয়ের জনপ্রিয়তা আজও অটুট রয়েছে মকর সংক্রান্তির দিনে গোপীবল্লভপুরের ঠাকুরবাড়ী প্রাঙ্গণে ।

স্থানীয় বাসিন্দারা মকর সংক্রান্তির দিন সকাল সকাল সুর্বণরেখা নদীতে স্নান সেরে বাড়িতে পিঠে পুলি খেয়ে সটান্ পৌঁছে যান ঠাকুরবাড়ী প্রাঙ্গণে উদ্দেশ্যে একটাই, চাক্ষুষ বুলবুলি পাখির লড়াই দেখার। কে কতো আগে ঠাকুরবাড়ির দালানে পৌঁছাতে পারবে এই নিয়েও প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় স্থানীয়দের মধ্যে ৷ কারণ দেরি করে পৌঁছালে ভিড়ের চাপে হয়তো বুলবুলির লড়াইটাই ঠিকঠাক উপভোগ করা যাবে না ৷
আরও পড়ুনঃ কোলাঘাটের রূপনারায়ণ নদীতে মকর সংক্রান্তির পূণ্যস্নান
বছরের পর বছর ধরে বুলবুলির এই লড়াই স্থানীয়দের কাছে এতোটাই জনপ্রিয় হয়ে গেছে যে ঠাকুরবাড়ী এলাকার মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় উৎসব বলেই পরিচিত । স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জঙ্গলমহলের গোপীবল্লভপুরের আজও আটুট শতাব্দী প্রাচীন বুলবুলি পাখির লড়াই। আজ থেকে প্রায় ৪০০বছর ও তার আগে থেকে চলে আসছে এই বুলবুলি পাখির লড়াই প্রতিযোগিতা।
দূর- দূরান্ত থেকে এমনকি পাশের রাজ্য ঝাড়খন্ড, ওড়িশ্যা থেকেও লোকজন আসেন এই লড়াই দেখতে। যে লড়াইয়ে ব্যবহার করা হয় না কোনো অস্ত্র৷ গোপীবল্লভপুরের দুটি পাড়া ‘বাজারসাই’ ও ‘দক্ষিণসাই’ এদের মধ্যেই হয় এই প্রতিযোগিতা৷ এবছরের লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেছিল দুটি পাড়ার প্রায় ৮০জন। এবছরের লড়াইয়ে জয়লাভ করল বাজারসাই পাড়া। তাদের হাতে পুরষ্কারও তুলে দেওয়া হয় ৷
আরও পড়ুনঃ করোনাতঙ্ক কাটিয়ে টুসু উৎসবে সামিল জঙ্গলমহল
এই দুই পাড়ার অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগিরা জানিয়েছেন, ‘একবছর আগে থেকে আমরা বুলবুলি পাখি ধরে আনি। তারপর সেগুলিকে বাড়িতে দুধ, কলা খেতে দিয়ে পোষ মানানো হয়৷ পোষ মেনে গেলে মকরের দিন এক থেকে দু ঘন্টা খিদেতে রাখতে হয়। তারপর কলা দেখালে তারা একে অপরকে কামড় বসায়। তবে এই লড়াইয়ে কোনো ধরণের কোনো অস্ত্র ব্যবহার করা হয় না।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584