উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
আগামীকাল থেকে লোকাল ট্রেন চালু হলেও শহর ও জেলায় পুরোপুরি স্বাভাবিক হচ্ছে না বাস-মিনিবাস পরিষেবা। নিজেদের বেশ কিছু সমস্যার কারণে আগামীকাল থেকে পুরো পরিষেবা দিতে পারছে না রাজ্যের বাস, মিনিবাস, অটো, ট্যাক্সি সংগঠন। বিষয়টি তারা জানিয়ে রেখেছে রাজ্য পরিবহণ দফতরকে।
সাধারণত রাজ্যে মোট বেসরকারি বাস চলে ছত্রিশ হাজার। এর মধ্যে কলকাতায় চলে ছ’ হাজার, জেলায় ত্রিশ হাজার। কলকাতায় মিনিবাস চলে আটশো পঞ্চাশ, জেলায় আড়াই হাজার। কলকাতায় ট্যাক্সি চলে বারো হাজার। শহরের মোট একশো পঁচিশ টি রুটে অটো চলে ত্রিশ হাজার, জেলায় পাঁচ হাজার।
কিন্তু আগামীকাল থেকে এই পূর্ণশক্তি নিয়ে জেলা বা শহরের পথে নামছে না বাস-মিনিবাস-অটো-ট্যাক্সি। তবে চলতি সময়ের তুলনায় কিছুটা স্বাভাবিক হবে পরিষেবা।এর মধ্যেই শহরে বেসরকারি বাস চলবে মোট সাড়ে তিন থেকে চার হাজারটি, জেলায় পাঁচ হাজার টি। কলকাতায় মিনিবাস চলবে তিনশো পঞ্চাশ, জেলায় পাঁচশোটি। পাঁচ হাজার ট্যাক্সি চলবে কলকাতার রাস্তায়। অটো চলবে শহরে পনের হাজারটি, জেলায় বারোশটি।
আরও পড়ুনঃ ১৩ জানুয়ারি নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ! জানাল নির্বাচন কমিশন
কিন্তু কেন সম্পূর্ণ পরিষেবা দিতে পূর্ণশক্তি দিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তে পারছে না বেসরকারি পরিবহণ? এর পিছনে নানা বিধ কারণ আছে। বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি মোটামুটি যা জানাচ্ছে তা হল, বাস মিনিবাস মালিকেরা দু’হাজার উনিশের লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচন বাবদ টাকা সরকারি ভাড়ার টাকা এখনও পায়নি। টাকাটা মিটিয়ে দেওয়ার কথা রাজ্য সরকারের।
আরও পড়ুনঃ ছটপুজোর শোভাযাত্রাতেও নিষেধাজ্ঞা
সংগঠনের তরফে আরও জানানো হচ্ছে, পঁচিশ শতাংশ বাস-মিনিবাসের বীমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। লকডাউনে তা নবীকরণ করা যায়নি। এখন সেই বাস নিয়ে রাস্তায় বেরোলেই পুলিশ মোটা টাকা জরিমানা করবে। বাস সংগঠনের তরফে আর্জি জানানো হয়েছে, যদি রাজ্য পরিবহণ দফতর আরটিওগুলির মাধ্যমে পুলিশকে আপাতত কেস দেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারে। পাশাপাশি বীমা নবীকরণের সময়সীমা বাড়িয়ে তা আগামী বছরের একত্রিশ মার্চ পর্যন্ত করতে পারে, একমাত্র তা হলেই বেশি বাস রাস্তায় নামানো সম্ভব।
করোনাকালে অন্য একটি সঙ্কটও ঘনিয়েছে। লকডাউন এবং ক্রমাগত লোকসানের জেরে পেশা বদলে ফেলেছেন অনেক বাস শ্রমিকই। বাসচালক, খালাসি ও কন্ডাক্টরেরা পেশা পাল্টে ফেলায় হঠাৎ করে এই ক্ষেত্রে কর্মীও অনেক কমে গিয়েছে। ওই সব কর্মীকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে আবার পুরোনো পেশায় ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে সেটা করতে কমপক্ষে এক মাস সময় লাগবে বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের। ঘাটতি থাকা ম্যানপাওয়ার স্বাভাবিক না হলে পুরো পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে না।
আরও পড়ুনঃ ‘চেনা বামুনের পৈতা লাগে না,’ তেখালির সভা থেকে জানালেন শুভেন্দু
এই সব সমস্যা ছাড়া অন্য সমস্যাও আছে। তা গণসচেতনতার সঙ্গে জড়িত। যেমন, বাসের ভিতরে সঠিক সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। ট্রেনের মতো বাসের সিটে ‘ক্রস মার্কিং’ করা সম্ভব কিনা, সেটাও প্রশ্ন। ট্রেন সরকারি পরিবহণ। সেখানে কিছু কিছু সুরক্ষাবিধি প্রয়োগ করা তুলনায় সহজ।
বাসে যাত্রীরা জোর খাটাবেনই। তাই আপাতত পুরোপুরি পরিষেবা দিতে পারছে না তারা। তবে যেটুকু কর্মী হাতে আছে, তাই দিয়েই সর্বোচ্চ পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে নিশ্চিন্ত করেছে সংগঠনগুলি। তারপর ধাপে ধাপে পূর্ণশক্তির পরিষেবা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584