শুভশ্রী মৈত্র, ওয়েব ডেস্কঃ
দুদিন আগে বাংলায় বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারে সিএএ-র প্রতিশ্রুতি থাকলেও, আজ আসামে প্রকাশিত ‘সংকল্প পত্রে’ নেই সিএএ-এর উল্লেখ। মঙ্গলবার বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডা প্রকাশ করলেন আসামে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহার ‘সংকল্প পত্র’।
আসামের ইস্তেহারে ১০টি প্রতিশ্রুতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিশ্রুতি এনআরসি। ইস্তেহারে উল্লেখ, ক্ষমতায় এলে সুপ্রীম কোর্ট নির্ধারিত এনআরসি প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং সমস্ত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রকাশ করেন ‘সোনার বাংলা সংকল্প পত্র’, যাতে ‘প্রথম ক্যাবিনেট মিটিং’-এই সিএএ কার্যকর করার প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করা হয়। আজ গুয়াহাটিতে প্রথম দফার নির্বাচনের আগে প্রকাশিত হলো ‘সংকল্প পত্র’। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও আসাম বিজেপির সভাপতি রঞ্জিত কুমার দাসের উপস্থিতিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা প্রকাশ করলেন ‘সংকল্প পত্র’।
“পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম এই প্রতিবেশী দুই রাজ্যে সিএএ নিয়ে বিজেপির অবস্থান ভিন্ন কেন”, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে দলের রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাস বলেন, ” সিএএ আসামে কোনো ইস্যু নয়। আসাম নির্বাচনে বিজেপির লক্ষ্য রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন, আর তা ইস্তেহারে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। আর সিএএ কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়, রাজ্যের নয়। তবে একজন ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী যাতে আসামে ঢুকতে না পারে সে বিষয়টি আমরা সুনিশ্চিত করছি।”
আরও পড়ুনঃ সরকারি পরিবহণে টিকিট লাগবে না মহিলাদের, ঘোষণা বিজেপির ইস্তেহারে
‘অসম একর্ড’ কার্যকরের প্রসঙ্গে ইস্তেহারে বলা হয়েছে আসাম এজিটেশন, বোরো এজিটেশন ও কার্বি এজিটেশন-এ শহীদদের পরিবারকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হবে। এছাড়া ইস্তেহারে উল্লেখ, এনআরসি তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে সুপ্রীম কোর্টে যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে আবেদন করবে সরকার।
ওদিকে কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি, ক্ষমতায় এলে সিএএ কার্যকর করা হবে না। সে প্রসঙ্গে নাড্ডা বলেন এটি পার্লামেন্টে পাস হওয়া আইন। কোনো রাজ্যেরই কেন্দ্রীয় আইনের বিরোধিতা করার এক্তিয়ার নেই। কোন দল যদি এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে তাহলে হয় তারা এ সম্পর্কে অবহিত নয় বা জেনে শুনেই মানুষকে বিভ্রান্ত করছে তারা।
আরও পড়ুনঃ ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে রাজত্ব করেছে আমেরিকা, বিতর্কিত মন্তব্য উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর
‘লাভ জিহাদ’ ও ‘জমি জিহাদ’ আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ইস্তেহারে। এছাড়াও বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরি এবং ছাত্রীদের সাইকেল দেওয়ার কথাও বলা আছে সংকল্প পত্রে। এছাড়া একগুচ্ছ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ইস্তেহারে। তারমধ্যে জমিহীনদের জমির অধিকার দেওয়া, ৩১ মার্চ ২০২২ এর মধ্যে ১ লক্ষ সরকারি চাকরি ও ৮ লক্ষ বেসরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি।
ব্রহ্মপুত্র নদে বিরাট রিসার্ভার তৈরি হবে অতিরিক্ত জল সংরক্ষণ-এর উদ্দেশ্যে, যা বন্যার হাত থেকে বাঁচাবে রাজ্যকে। এছাড়াও অরুনোদয় স্কীমে ৩০ লক্ষ দরিদ্র পরিবারকে মাসে ৩০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ইত্যাদি ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতিতে ভরপুর ইস্তেহার প্রকাশিত হল প্রথম দফা নির্বাচনের ঠিক চারদিন আগে। কিন্তু সিএএ নিয়ে দুই রাজ্যে বিজেপির ভিন্ন অবস্থান কেন স্পষ্ট উত্তর মেলেনি এ প্রশ্নের। রাজ্যে ক্ষমতায় এলেই সিএএ কার্যকর করা যায় না তা জেনে শুনেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ধোঁয়াশা রেখেই দিল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584