শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
হাইকোর্টে মামলা করে এখন উল্টে নিজেরাই বিপাকে রাজ্যের বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা। মামলা করার সময় তারা ভেবেছিলেন, তাদের পক্ষেই রায় দেবে হাইকোর্ট। কিন্তু সমস্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আদালত উলটে ১৫ আগস্টের মধ্যে বকেয়া সমস্ত ফি-র ৮০ শতাংশ অভিভাবকদের মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি অভিভাবকদের আবেদনেও সময়সীমা বাড়াতে রাজি হল না হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত এই মামলাটির শুনানি প্রথম থেকেই চলছে অনলাইনে। মামলার গত শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ ৩১ জুলাই পর্যন্ত জমে থাকা বকেয়া বেতন আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
সোমবার এই মামলার শুনানিতে অভিভাবকদের তরফে আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা আগরওয়াল এই ফি জমা দেওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানান। তিনি বলেন, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যেন বকেয়া ফি না নেওয়া হয়। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুনঃ কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে, সোনিয়ার অন্তবর্তীকালীন সভাপতির মেয়াদ বাড়ল
লকডাউনে স্কুলে ফি মকুবের আর্জি নিয়ে মামলা করেছিলেন বিনীত রুইয়া নামে জনৈক অভিভাবক। সেই মামলায় ১১২টি স্কুলের নাম ছিল। যদিও মামলাকারী এদিন জানান যে, তাঁরা ৪৫টি স্কুলে নোটিশ দিতে পেরেছেন। মামলার শুনানিতে এজি জানান, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই বাড়তি ফি মকুবের অনুরোধ জানিয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে। সেই বিষয়টি স্কুলগুলি পালন করবে বলেই তার আশা।
ইতিমধ্যেই কিছু স্কুল তাদের প্রয়োজনীয় খরচ মকুবের কথা জানিয়েছে। তবে কেউ ফি দিতে না পারলে তাকে যেন অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত না করার আর্জিও হলফনামায় জানান তিনি। ওদিকে মামলাকারী এই মামলার একাধিক তথ্য স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগে প্রেক্ষিতে বিচারপতি নির্দেশ দেন, ভবিষ্যতে কোনও তথ্য যেন স্যোশাল মিডিয়ায় না যায়।
আরও পড়ুনঃ মিরাটিতে মন খারাপের ছায়া, দ্রুত আরোগ্য কামনা
এর উত্তরে বেসরকারি স্কুলের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, ‘এই বিষয়টিকে নিয়ে অনর্থক রাজনীতি করা হচ্ছে। এই মামলার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ১৬ হাজারের বেশি ছাত্র ছাত্রীর অভিভাবকরা। তাদেরকে মামলার বিস্তারিত বিষয় জানানোর জন্যই সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নিতে হচ্ছে। এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নেই। এতে তাদের কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও নেই। এই নিয়ে গত ৬ আগস্ট বিস্তারিত বিষয়ে হাইকোর্টের জয়েন্ট রেজিস্ট্রারের কাছে হলফনামায় দাখিল করা হয়েছে।’
অন্যদিকে, এদিন রাজ্য সরকার স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছে, ‘এই সমস্ত বেসরকারি স্কুলগুলোর নিজস্ব বোর্ড রয়েছে। সেই বোর্ডের অধীনে স্কুলগুলো চলে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে অনেক স্কুলই তাদের বেশ কিছু শতাংশ ফি মকুব করেছে।’
এদিন স্কুলগুলি তাদের কর্মীদের বেতন দেওয়া, পরিকাঠামোর উন্নতি ইত্যাদি বিষয়ে আদালতে হলফনামা জমা দিয়েছে। তারপরেই পূর্ববর্তী রায় বহাল রাখার পক্ষে রায় দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন মামলার শুনানিতে কিছু নথি না আসায় ডিভিশন বেঞ্চ আগামী সোমবার ১৭ আগস্ট মামলার শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584