পিকের অফিস থেকে বলছি…, ধেয়ে আসা প্রশ্নবাণে নাজেহাল মন্ত্রী থেকে নেতা

0
194

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ

ফোনের ওপার থেকে ধেয়ে আসছে একের পর এক প্রশ্ন। আর সেই প্রশ্নবাণ সামলেই দিতে হচ্ছে যথাযথ উত্তর। এমনই জবাবদিহির ঝক্কির মধ্যেই প্রায়শই সইতে হচ্ছে ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তির ধমকধামকও। এমন অভিজ্ঞতা অবশ্য আগেও হয়েছে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের। তবে তা ‘দিদি’র সামনেই। কিন্তু এবার পুরো ব্যাপারটাই চলছে মেঘের আড়ালে। অর্থাৎ ফোনে ফোনে। আর কণ্ঠটিও দিদি মানে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নয়। অন্য প্রান্তের স্বর অপরিচিত।

জানতে চেয়েও ওই স্বরের মালিকের পরিচয় জানতে পারছেন না দাপুটে নেতা-মন্ত্রীরাও। জবাব একটা মিলছে। সেই জবাব হল, ‘পিকে-র অফিস থেকে বলছি।’ পিকে মানে প্রশান্ত কিশোর।

Calling from PK office
সংবাদ চিত্র

প্রসঙ্গত, প্রায় মাস দুয়েক আগে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রশান্ত। তখনই জানা গিয়েছিল ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে কাজ করবেন ‘আচ্ছে দিন’-এর ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’। তারপরই দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করে দেন ইলেকশন স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত। তৃণমূলের সকলস্তরের নেতা এবং কাউন্সিলর-বিধায়কদের জনসংযোগ বৃদ্ধির পাঠ দেওয়ার পাশাপাশি ‘দিদিকে বলো’ এবং ‘আমার গর্ব মমতা’র মতো ক্যাম্পেনও চালু করেছেন তিনি। অল্পদিনেই যার সাফল্য আকাশছোঁয়া। কিন্তু সেই সাফল্যের পিছনে রয়েছে প্রশান্তর কড়া নজরদারি।

যেমন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচীর সবিস্তার তথ্য ছাড়াও ছবি তুলে প্রশান্ত কিশোরের অফিসে পাঠাতে হচ্ছে তৃণমূলের সব মন্ত্রী-বিধায়ক-নেতাকে। তাঁরা ছবি তুলে পাঠাচ্ছেনও। তবু ঝক্কির শেষ নেই। কিছুক্ষণ আগে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচী শেষ হয়েছে। অথচ ছবি পৌঁছয়নি পিকের অফিসে। কেন ছবি পাঠাননি মন্ত্রী? জবাব চাইলেন পিকে অফিসের প্রতিনিধি। আমতা আমতা করে ছবি পাঠানোর কথা বললেন মন্ত্রী।

জানালেন, তিনি তাঁর এক সহযোগীকে সংশ্লিষ্ট জায়গায় ছবি ও তথ্য পাঠানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রীর জবাবে ‘সন্তুষ্ট’ না হওয়ায় মন্ত্রীকে তাঁর দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে পিকে-র প্রতিনিধি বলেন, ‘আপনি শুধু অন্য কাউকে ছবি পাঠানোর কথা বলেই দায়িত্ব শেষ করলেন! আপনার কি উচিত ছিল না, ছবিটা পৌঁছেছে কি না, দেখে নেওয়া?’

তবে এখানেই শেষ নয়। এরপর আরও একটি প্রশ্ন ধেয়ে এল মন্ত্রীর কাছে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হল, তিনি কর্মসূচীর সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেননি! কেন করেননি? জবাবে মন্ত্রী জানান, সাংবাদিক বৈঠকের সময় ঠিক করা হয়নি। সময় নির্ধারণ করেই জানিয়ে দেওয়া হবে। সঙ্গে সঙ্গে পিকে-র প্রতিনিধি বলেন, ‘টাইম ঠিক করে জানিয়ে দেবেন।’ এভাবেই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচীর ছবি পাঠানো নিয়ে ত্রুটি হলেই পিকে-র অফিসের তরফে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে মন্ত্রী-বিধায়কদের। জুটছে মৃদু ভর্ৎসনাও। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, এক ‘পিকে’ কিছু দিন আগে রুপোলি পর্দা কাঁপিয়ে দিয়েছিল। সে ছিল বিনোদন-বিশ্বের পিকে। আর এখন তৃণমূলের হয়ে বাজিমাত করতে এসেছেন রাজনীতি জগতের এক ‘পিকে’।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here