শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
সীমান্তে যে পূর্ণবয়স্ক গরুকে ওজন কম দেখিয়ে বাছুর হিসাবে কম শুল্ক নিয়ে পাচার করে দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ অনেকদিন আগেই পেয়েছিল সিবিআই। তার ভিত্তিতে শুরু হয়েছিল তদন্ত। ইতিমধ্যেই এই কাণ্ডে গরু পাচার চক্রের কিংপিন এনামুল হককে জেরা করেছেন সিবিআই গোয়েন্দারা। সিবিআই তলব পেয়ে এদিন এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি নিজাম প্লেসে এসে জমা দিলেন শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা। আরও জানা গিয়েছে, সোমবার নিজাম প্লেসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে অনুপ মাঝি কে তার বাড়ির ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়েছে সিবিআই।
সূত্রের খবর, সিবিআই শুল্ক অফিসারদের কাছে তথ্য চেয়ে আগেই চিঠি পাঠিয়েছিল। সেই মত কাস্টমস অফিসাররা শনিবার সকালে নথি নিয়ে ঢোকেন নিজাম প্যালেসে৷ যে সমস্ত দুর্নীতিগ্রস্ত বিএসএফ কমান্ডার এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদেরকে জেরা করার পর কাস্টমস অফিসারদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে চাইছে সিবিআই।
আরও পড়ুনঃ সারদা কাণ্ডে ৬ প্রভাবশালীর নাম ফাঁস করে মোদী-মমতাকে চিঠি জেলবন্দি সুদীপ্ত সেনের
অভিযোগ ছিল, পাচার হওয়া পূর্ণবয়স্ক গরুকে বাছুর হিসেবে খাতায় কলমে দেখিয়ে টেন্ডার ডাকা হত৷ এবং টেন্ডার এর যাবতীয় তথ্য ফাঁসও করা হত এনামুলের কাছে৷ সেই সব টেন্ডারের নথি আজ, শনিবার, দিল কাস্টমস৷ প্রসঙ্গত, পাচারকাণ্ডে উঠে আসছে কাস্টমস যোগও৷ একাধিক শুল্ক দফতরের আধিকারিকের নাম উঠে আসছে এ ক্ষেত্রে৷ আগামী সপ্তাহ থেকেই নোটিশ যাবে তাদের কাছে, এমনই সূত্রের খবর৷ এক রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতার কাছে নিয়মিত টাকার পৌঁছনো হতো বলে জানা গিয়েছে৷ উঁচুতলার বিএসএফ কর্তারাও গোটা বিষয়টি ওয়াকিবহাল থাকতেন পাচারের বিষয়ে, এমনই জানা গিয়েছে৷
আরও পড়ুনঃ ছত্রধরকে গ্রেফতারের প্রয়োজন নেই, এনআইএ-কে এজি-র কাছে আবেদনের নথি পাঠানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
কিভাবে এই পাচারে গরুর বাছুর দেখানো হতো তার চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের সামনে। জানা গিয়েছে, পাচারের সময় কিছু গরু বিএসএফ বাজেয়াপ্তের তালিকায় রাখা হত, যাতে সন্দেহ না হয়৷ বাজেয়াপ্ত হওয়া গরু গুলোকে সরকারি খাতায় বাছুর হিসেবে ধরা হত৷ অর্থাৎ আকার আয়তনে কম করে সরকারি খাতায় দেখানো হত৷
আরও পড়ুনঃ রাজ্যপালের কাছে নালিশের পরদিনই বদলি, শাস্তি বলে দাবি বৈশাখীর
হ্যান্ডওভার করা হত শুল্ক দফতরকে৷ টেন্ডার ডাকত শুল্ক দফতর৷ টেন্ডারের কাগজেও উচ্চতা ও দৈর্ঘ্য কমিয়ে বাছুর হিসেবে দেখানো হত পূর্ণাঙ্গ গরুকে, এমন জানা গিয়েছে৷ সেই বাছুরকে তোলা হত নিলামে৷ নিলামের স্থান কাল পাত্র দাম সব এনামুলকে আগাম থেকে জানিয়ে রাখা হত৷
যাতে এনামুলই সেই টেন্ডার পেতে পারেন৷ আর সেইভাবে খবর চলে যেত অনুপ মাঝি অর্থাৎ লালার কাছে। এভাবেই গরু পাচার এবং একইসঙ্গে কয়লা পাচার হয়ে যেত ভিনদেশে। সেই কারণেই শুল্ক দফতরের নথি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি এবার অনুপ মাঝি কেও জেরা করতে চাইছেন গোয়েন্দারা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584