হাসিমুখে ফাঁসির মঞ্চে ক্ষুদিরাম, অবাক ব্রিটিশ বিচারক

0
115

মোহনা বিশ্বাস, ওয়েব ডেস্ক :

khudiram

১১ অগাস্ট, ১৯০৮। হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে চলেছেন মায়ের আদরের ক্ষুদি। তখন সে আর মায়ের ক্ষুদি নেই তখন সেই আঠারো বছরের তরুণ হয়ে উঠেছেন ভারতের এক স্বাধীনতা সংগ্রামী। মায়ের কাছে ৩৩ কোটি ছেলে মেয়েকে রেখে সে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে ফাঁসির দড়ির দিকে। এই দৃশ্য দেখে তখন বাঁধ ভাঙা কান্নায় ভাসছে গোটা ভারত।

khudiram bose

১৯০৮ সালের ৩০ এপ্রিল মুজফফরপুর ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসি হয় তরুণ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর। তখন খাতায় কলমে তাঁর বয়স মাত্র ১৮ বছর। বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকিকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষুদিরাম বসু ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাস কিংসফোর্ডকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। একটি গাড়িতে ওই ব্রিটিশ বিচারক সওয়ার রয়েছেন ভেবে গাড়িটি লক্ষ্য করে বোমাও ছুঁড়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু হিসেবের গরমিল হওয়ায় ব্যর্থ হয় দুই বিপ্লবীর এই প্রয়াস।

khudiram bose

কারণ যে গাড়িটি লক্ষ্য করে তাঁরা বোমা ছোঁড়েন তাতে ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড ছিলেন না, ছিলেন দুই ব্রিটিশ মহিলা মিসেস কেনেডি ও তাঁর কন্যা। বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় ওই দুই ইংরেজ মহিলার। এরপরেই গ্রেফতার হওয়ার অনুমান করে আগেই আত্মহত্যা করেন বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকি। কিন্তু পালাতে পারেননি তরুণ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু। ব্রিটিশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয়।

আরও পড়ুনঃ লোকসভায় পাস ওবিসি বিল, রাজ্য ও কেন্দ্রশাষিত অঞ্চলগুলি তাদের মতো ওবিসি তালিকা তৈরি করতে পারবে

মৃত্যুর সাজা ঘোষণার পরও ক্ষুদিরামের মুখে লেগে ছিল অমলিন হাসি। অবাক হয়েছিলেন ব্রিটিশ বিচারক মি. কর্নডফ। অবশেষে ১৯০৮ সালে আজকের দিনেই হাসতে হাসতে মৃত্যুবরণ করেন তরুণ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু।
‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি। হাসি হাসি পরবো ফাঁসি, দেখবে ভারতবাসী’। গানটা শুনলে আজও একটা অদ্ভূত কষ্টে প্রত্যেক বাঙালির চোখে জল চলে আসে। সেইসব দৃশ্য চোখের সামলে ভাসলেই গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। ভারতের স্বাধীনতার জন্য তরুণ বিপ্লবীর এই আত্মবলিদান আজীবন মনে রেখেছে গোটা ভারতবাসী। ইতিহাসের পাতায় চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে এই দিনটা।

আজ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর প্রয়াণ দিবসে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার সকালে বাংলায় টুইট করে তিনি ক্ষুদিরামের উদ্দেশে প্রণাম জানান। এদিন টুইটে অমিত শাহ লেখেন, ”যখন ‘বন্দে মাতরম্’ ধ্বনিও রাজদ্রোহের সামিল ছিল, তখন তরুণ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর সাহস ও দেশপ্রেম ব্রিটিশ শাসনের শিকড় নাড়িয়ে দিয়েছিল। ভয় পেয়ে অল্প বয়সেই ব্রিটিশরা তাঁকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়। দেশের জন্য তাঁর ত্যাগ, নিষ্ঠা ও বলিদান প্রশংসনীয়। এমন অমর শহিদকে শত কোটি প্রণাম।”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here