আজকের বাজেট ভাষণে কাশ্মিরী কবি দীননাথ কৌল নাদিমের কবিতার অংশবিশেষ পড়েন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।জনগনের জন্য সরকার কি কাজ করছে সেটিকে তুলে ধরতে এই বাজেটকে বেছে নেন অর্থমন্ত্রী। প্রথমে কাশ্মীরিতে কবিতাটি পড়েন অর্থমন্ত্রী তারপর সেটিকে হিন্দিতে অনুবাদ করে দেন। হিন্দি অনূদিত কবিতার লাইনগুলি হলো,’ হামারে ওয়াতন খিলতে হুয়ে শালিমার বাগ যাইসা, হামরা ওয়াতন ডাল লেকমে খিলতে হুয়ে কমল জাইসা, নৌজওয়ানা কে গরম খানা জাইসা, মেরে ওয়াতন, তেরে ওয়াতন দুনিয়াকে সবসে প্যায়ারা ওয়াতন।‘
কবিতা উদ্ধৃত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটিই সরকারের মূল ফোকাস। সব কিছু তাঁরা দেশের জন্যই করেন বলেই মত নির্মলার। গত বছর জুলাইয়ে প্রথম বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। আগষ্টে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা অবলুপ্ত করে কেন্দ্র সরকার, যার ফলে কাশ্মীরের স্পেশাল স্টেটাস লোপো পায়। এবারের বাজেটে কাশ্মীরি কবিতার এই লাইনগুলি উদ্ধৃত করে উপত্যকাকে বার্তা দিলেন অর্থমন্ত্রী বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
একনজরে অর্থমন্ত্রীর বাজেট ২০২০ ভাষণের উল্লেখযোগ্য দিকঃ অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের বাজেটের লক্ষ্য ভারতকে একটি গতিশীল এবং প্রাণবন্ত অর্থনীতিতে পরিনত করা এই বাজেট সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের আশা পূর্ণ করবে।
তিনটি বিষয়ের উপর দাঁড়িয়ে বাজেট এক, সবার জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দুই, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভারত, তিন আমাদের সমাজ যত্নশীল হবে।
জিএসটির ফলে পরিবহন লজিস্টিক ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন হয়েছে। ইন্সেস্পেক্টর রাজ বিলুপ্ত হয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সুবিধা হয়েছে। জিএসটির মাধ্যমে ক্রেতারা বার্ষিক আয় লাখ কোটি টাকার সুবিধা পেয়েছেন। ২০২০ সাল থেকে জিএসটি রিটার্ন ফাইল সহজতর হবে।
কৃষিক্ষেত্রের জন্য ১৬ পয়েন্ট অ্যাকশন প্ল্যানের ঘোষনা অর্থমন্ত্রীর তিনি বলেন, ‘ ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে নিয়োজিত সরকার। সেচ ও গ্রামীণ উন্নয়নের ২.৮৩ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে।
মানুষের আয় ও তাঁদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই বাজেট।
ঝঞ্ঝাটহীন কোল্ড সাপ্লাই চেণো গড়ে তোলা হবে। পিপিপি মডেলের মাধ্যমে ভারতীয় রেল কিষান রেল তৈরি করবে। যাতে পচনশীল দ্রব্য দ্রুত সরবরাহ করা যায়। অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রুটে কৃষি উড়ানো উড়বে।
সবনির্ভর গোষ্ঠীগুলি গ্রামে যে স্টোরেজ প্রকল্প চালাচ্ছে, সেগুলি কৃষকদের ধারণ ক্ষমতা বাড়াবে, গ্রামের মহিলারা ফের ধণলক্ষ্মী মর্যাদা ফিরে পাবেন।
সরকার খুব শীঘ্রই নতুন শিক্ষানীতি ঘোষণা করবে। ন্যাশানাল ইনস্টিটিউশনাল র্যারঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্কের অধীনে দেশের ১০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিগ্রি পর্যায়ে পুরোপুরি অনলাইন কোর্স চালু চালু হবে। শিক্ষায় প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ করা যাবে।
২০২০-২১ অর্থবর্ষে শিক্ষাখাতে ৯৯,৩০০ কোটি বরাদ্দের প্রস্তাব দেন, দক্ষতাবৃদ্ধির জন্য ৩০০০ কোটি বরাদ্দ করেন।
১০ কোটির বেশি গৃহস্থের পুষ্টিগত অবস্থা আপলোডের জন্য ৬ লাখের বেশি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর কাছে স্মার্টফোন আছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে পুষ্টিগত প্রকল্পের জন্য ৩৫,৬০০ কোটি বরাদ্দের প্রস্তাব দেন।
বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও দুর্দান্ত সমর্থন পেয়েছে। শিক্ষার প্রতিটি পর্যায়ে মোট এনরোলমেন্ট অনুপাতের নিরিখে, ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে মেয়েরা।
নন-গেজেটেড সমস্ত চাকরির জন্য অভিন্ন একটি পরীক্ষা নেবে কেন্দ্র।প্রতিটি পিছিয়ে পড়া জেলায় পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরি করবে সরকার।
শিল্প বাণিজ্য উন্নতির জন্য ২৭,৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর।
ব্যাঙ্কের আমানতকারীদের অর্থ সুরক্ষিত আছে। ব্যাঙ্কে আমানতের উপর সুরক্ষা এক লাখ টাকা থেকে বেড়ে পাঁচ লাখ হল বলে জানালেন অর্থমন্ত্রী।
জলসঙ্কটের মুখে থাকা দেশের ১০০টি জেলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কৃষিখাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ১৫ লাখ কোটি টাকা নির্ধারিত হয়েছে।
স্বচ্ছ ভারত মিশনের জন্য ১২,৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব।
ব্যক্তিগত কর কাঠামোয় বড়সড় পরিবর্তনের ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর। ০-২.৫ লাখ পর্যন্ত আয়করে ছাড়। ২.৫-৫ লাখ পর্যন্ত আয়ে করের হার ৫ শতাংশ ৫-৭.৫ লাখ পর্যন্ত আয়করের হার ১০ শতাংশ, বর্তমানে যা ২০ শতাংশ। ৭.৫-১০ লাখ পর্যন্ত আয়ে করের হার কমে হল ১৫ শতাংশ। এখন আয় করের হার ২০ শতাং। ১২.৫-১৫ লাখ পর্যন্ত আয়েও কমল করের হার। বর্তমান করের হার ৩০ শতাংশ। নতুন প্রস্তাবে তা কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হচ্ছে। তবে ১৫ লাখের উপর আয়ে করের হার অপরিবর্তিত থাকছে।
‘সাগরমিত্র’ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে মৎস্যচাষে গ্রামের যুবকদের যুক্ত অরা হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584