শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
মহামারীর সময় বেশিরভাগ মানুষ বাড়িতে থাকার কারণে অনেকেরই অতিরিক্ত মাত্রায় বিদ্যুৎ খরচ হয়েছিল। কিন্তু একই কারণে বহু মানুষের রোজগার কমে যাওয়ায় অথবা কাজ হারানোর কারণে একবারে অতিরিক্ত এত টাকার বিল দেওয়া অনেক মানুষের পক্ষে অসম্ভব ছিল।
করোনা মহামারীর জুন থেকে সেই অনাদায়ী ইউনিট বিলে যোগ হওয়া শুরু হতেই অতিরিক্ত বিলের জেরে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শহরবাসী। একদিকে করোনা পরিস্থিতি এবং অন্যদিকে আমফান ঝড় বিপর্যয়ের কথা চিন্তা ভাবনা করে এবং সাধারণ মানুষের আপত্তিতে সেই মুহূর্তে অতিরিক্ত বিল নেওয়ার সিদ্ধান্ত রদ করেছিল বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা।
কিন্তু এবার সিইএসসির তরফে জানানো হল, নভেম্বরের বিল থেকে ১০ কিস্তিতে লকডাউনের তিন মাসের বকেয়া টাকা ধার্য করা হবে। তার জেরে নভেম্বর থেকে গ্রাহকদের বিল কিছুটা উর্ধ্বমুখী হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ পিএম কেয়ার ফান্ড থেকে মোদী-অমিত টাকা চুরি করছেনঃ সেলিম
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, লকডাউনের জেরে গত মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত (২৩ মার্চ থেকে ৮ জুন) মিটার রিডিং নেওয়া সম্ভব হয়নি। সেজন্য শেষ ছ’মাসের বিলের গড় করে বিল পাঠানো হয়েছিল। তাতে গ্রীষ্মকালের তুলনায় বিল ‘অনেকটা কম’ ছিল বলে দাবি করা হয়। জুন থেকে সেই অনাদায়ী ইউনিট বিলে যোগ করতেই শুরু হয় বিপত্তি।
গ্রাহকদের একাংশের ‘অস্বাভাবিক’ হারে বিল আসতে শুরু করে। আমফানের পর বিভিন্ন এলাকায় যেভাবে দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না, তাতে সেই ক্ষোভের মাত্রা আরও ছাড়িয়ে যায়। এই নিয়ে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টেও। শেষ পর্যন্ত অনাদায়ী ইউনিট যোগ করার কাজ স্থগিত রাখে সিইএসসি।
তারই মধ্যে অক্টোবরে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, আমফান-পরবর্তী সময় বাড়তি বিল সংক্রান্ত যে সমস্যা হয়েছিল, তার ৯৯ শতাংশই সমাধান হয়ে গিয়েছে। এবার থেকে কিস্তিতে সেই বাড়তি বিদ্যুতের বিল মেটানো যাবে। বাড়তি বিল কীভাবে নেওয়া হবে, তা নিয়ে সিইএসসির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী। আর এবার সেই পরিকল্পনার কথাই ঘোষণা করল সিইএসসি।
সিইএসসির এমডি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শীতকালে বিদ্যুতের ব্যবহার সাধারণত কম হওয়ায় গ্রাহকদের উপর কম বোঝা পড়বে। তাই নভেম্বরের বিল থেকে ওই বকেয়া টাকা ধার্য করা শুরু করেছে। লকডাউনের সময় আদতে যে পরিমাণ ইউনিট ব্যবহৃত হয়েছিল, তা এবার থেকে আসল মাসিক বিলে যোগ করা হবে।
সংস্থার ভাইস-প্রেসিডেন্ট (বণ্টন পরিষেবা) অভিজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, চলতি বছরের নভেম্বরের বিল থেকে আগামী বছরের অগস্ট পর্যন্ত বিলে সেই বকেয়া অঙ্ক নেওয়া হবে। সেই সংক্রান্ত বিস্তারিত হিসাব বিলের অপরদিকের পাতায় দেওয়া থাকবে। এতে সাধারণ মানুষের বুঝতে কোনও অসুবিধা হবে না। তার পরেও তারপরেও কারুর কোনও প্রশ্ন বা অভিযোগ থাকলে তিনি অবশ্যই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584