সুমনা দত্ত
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে নারদ নারায়ণকে লক্ষ্মীর উৎপত্তির বিষয়ে জানতে চান। নারায়ণ লক্ষ্মীর সৃষ্টি রহস্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছিলেন সৃষ্টির পূর্বে রাসমন্ডলস্থিত পরমযোগী শ্রীকৃষ্ণের বাম দিক দেবী লক্ষ্মীদেবী উৎপন্না হন। অতিশয় সুন্দরী এই নারীর অঙ্গসমূহ শীতকালে সুখদায়ক উষ্ণ ও গ্রীষ্মকালে শীতল। স্থিরযৌবনা দেবীর কটিদেশ ক্ষীণ, স্তনদ্বয় কঠিন ও গুরু নিতম্ব।
তাঁর মুখমন্ডলের প্রভা কোটি সংখ্যক পূর্ণচন্দ্রের প্রভার অধিক এবং অক্ষিদ্বয় শরৎকালের মধ্যাহ্নের পূর্ণ প্রস্ফুটিত পদ্মের চেয়েও সুন্দর। এহেন সুন্দরীশ্রেষ্ঠা লক্ষ্মীর বাহন হিসাবে কুদর্শন পেচক কেন জুটল তা বোঝা মুশকিল। গোল ভাঁটার মত চোখ, একশ আশি ডিগ্রিরও বেশী মাথা ঘুরিয়ে তাকানোর ভঙ্গিমা, তীক্ষ্ণ কর্কশ চিৎকারের সঙ্গে শ্রীদেবীর সংযোগ স্থাপন অতি দূরুহ। সমস্যা হল কোন পুরাণ বা পুঁথি লক্ষ্মীর বাহন সম্মন্ধে সঠিক করে কিছু উল্লেখ করেনি।
তাই লক্ষ্মীর সঙ্গে পেঁচার সংযোগ রহস্যটি ঠিক মত প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি।
প্রাকধর্ম যুগেই মানব সংস্কৃতিতে পশু টোটেম বা কুলকেতুর ধারণার উদ্ভব ঘটে। আদিম প্রগৈতিহাসিক যুগে মানবগোষ্টীর সঙ্গে পশুর সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ট। কৃষিপূর্ব সমাজে খাদ্যের জন্য পশু মাংসই ছিল প্রধান উৎস। তাই মানুষকে খাদ্যের জন্য পশুকে শিকার করতে হতো আর একই সঙ্গে পশুদের শিকার হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হত। প্রতি নিয়ত পশুদের সঙ্গে সংগ্রামেরত মানুষ লক্ষ্য করেছিল, মানুষ অপেক্ষা প্রাণীরা অনেক শক্তিশালী, ক্ষিপ্র ও চতুর। তাই সে ভয় ও ভক্তিতে পশুকে তাদের অপেক্ষা উৎকৃষ্ট জ্ঞান করে পশুর সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক স্থাপন করে।
মানুষ মনে করে পশুরা তাদের রক্ষাকারী পূর্বপুরুষ। প্রতিটি গোষ্ঠী তাদের নিজ নিজ টোটেম হিসেবে একটি প্রাণীকে চিহ্নিত করে। কিন্তু পশুর সঙ্গে মানুষের সম্পর্কটি বদলাতে থাকে নব্যপ্রস্তর যুগে এসে। এই সময় মানুষরা কৃষিকাজ করতে শেখে ও পশুকে পোষ মানাতেও শুরু করে। তার ফলে পশুদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি, ভয়ও কমতে থাকে।
পূর্বেকার যাদুবিশ্বাসের বদলে ধর্মবিশ্বাস জন্ম নেয়। ধর্মের এই প্রাথমিক অবস্থায় মানুষ পশুর বদলে নিজেদের রক্ষাকর্তা হিসাবে মনুষ্যরূপী দেবতার কল্পনা করতে থাকে। কিন্তু পশু পুজাকে একেবারে ঝেড়ে ফেলতে পারেনা। তাই প্রাচীন নদীমাতৃক সভ্যতাগুলিতে মিশ্রিত দেবতার রূপকল্পনা আবির্ভূত হয় – যাঁরা অর্ধপশু ও অর্ধমানুষ। ধর্ম আরো একটু জটিল রূপ পরিগ্রহন করলে মানব-পশু মিশ্ররূপের বদলে পূর্ণ মানবরূপী দেবদেবী আবির্ভুত হন। কিন্তু পশুরাও থেকে যায়। মানব সংস্কৃতি থেকে একেবারে নির্বাসিত হয় না। দেবতার পায়ের তলায় স্থান নেয় বাহনরূপে।
আমদের দশাবতারের রূপটি বিশ্লেষণ করলেই এই রূপবিবর্তনের বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়। প্রথম তিনটি অবতার যথা, মৎস, কুর্ম, বরাহ প্রাণীরূপী। প্রথমটি জলের প্রাণী, দ্বিতীয়টি উভচর ও তৃতীয়টি স্থলভাগে বিচরণ করে। চতুর্থ অবতার নৃসিংহ মানুষ ও সিংহের মিশ্রিতরূপ যা তার নামেই বোঝা যায়। তার পরের পাঁচজন অবতার মনুষ্যরূপী।
আরও পড়ুনঃ কোজাগরী লক্ষ্মীতে শেষ তুলির টান রান্টুয়ার ‘কুমারটুলিতে’
আশ্বিনের কোজাগরী পূর্ণিমায় পুজোর জন্য বাজার ভরে গেছে লক্ষ্মীসরায়, লক্ষ্মীমূর্তিতে। লক্ষ্মীর পাশেই থুম হয়ে বসে লক্ষ্মীর বাহন গোমড়ামুখো একখানি সাদা পেঁচা। কিন্তু আশ্চর্যের কথা এই যে বাহন হিসাবে পেঁচার উপস্থিতি লক্ষ্মীর কোন প্রাচীন মূর্তিতে বা চিত্রে পাওয়া যায় না।
ভারতীয় সংস্কৃতিতে লক্ষ্মীমূর্তি ভাস্কর্যে, মুদ্রায় আবির্ভূত হয়েছেন সেই খৃঃ পূঃ তৃতীয়-দ্বিতীয় শতকে। ভারহুত স্তুপের পূর্বতোরণ সংলগ্ন বেষ্টনীর সূচী অংশে একটি গোলাকার মন্ডল আকৃতির মধ্যে ধান্যমঞ্জরীহস্তা, কটি-অলম্বিতা লক্ষ্মীদেবী দন্ডায়মান। বাম পাশে একটি পদ্মফুল। এই বৃত্তের চারপাশ ঘিরে নালসহ পূর্ণ ও অর্ধপ্রস্ফুটিত পদ্মফুলের অলঙ্করণ খোদিত।
লক্ষ্মীদেবী পূর্ণকুম্ভ হতে উৎগত প্রস্ফুটিত পদ্মের উপর দন্ডায়মান। তিনি এক হাতে স্বয়ং বামস্তন ও অন্যহাতে পদ্মনাল ধারণ করে আছেন। পদ্মের উপর দন্ডায়মান দুটি হাতি ভদ্রঘট উপুর করে লক্ষ্মীর মাথার উপর জল সেচন করছেন।
প্রায় এই রকম গজলক্ষ্মীমূর্তি সাচীস্তুপের তোরণে একটি চতুষ্কোন ফলকে উৎকীর্ণ। লক্ষ্মীর নানা রূপের মধ্যে গজলক্ষ্মী রূপটি অত্যন্ত প্রসিদ্ধ যা বারবার আবির্ভূত হয়েছে। ভারহুতের স্তুপ বেষ্টনীর লম্বাটে থব অংশে পদ্মের উপর দন্ডায়মান এক নারী মূর্তি পাই। তাঁর ডানহাতে ধরা পদ্মটি এখন ভগ্ন। মাথার ওপর ব্রাহ্মীলিপিতে লেখা সিরিমা দেবতা।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মী-সরস্বতীর যুগল বন্দনা হাড়দার লক্ষীপূজোর মূল আকর্ষন
বৌদ্ধদেবী সিরিমা (শ্রীমা) শ্রীদেবীর মতোই সৌন্দর্য, শোভা ও সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই মূর্তিগুলিতে কিন্তু লক্ষ্মী পেচকহীনা। বাহন শব্দটির অর্থ যদি সরাসরি করা হয় যে বহন করে, তাহলে প্রস্ফুটিত পদ্ম তাঁর বাহন। তিনি পদ্মাসনা।
খৃঃপূঃ দ্বিতীয় শতাব্দীতে স্থানীয় কুনিন্দ জনগোষ্ঠীর রাজা অমোঘভূতির মুদ্রায় লক্ষ্মীর সামনে একটি হরিণকে পাওয়া যায়। ঋগ্বেদে খিলসূক্তের অন্তর্গত শ্রীসূক্তে লক্ষ্মী বা শ্রী-কে চন্দ্রের মত সুদৃশ্য এবং সোনা রূপোর অলঙ্কারে শোভিতা এক হরিণি হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। গুপ্তযুগের মুদ্রায় বিভিন্ন বাহনের সাথে লক্ষ্মী বারম্বার উৎকীর্ণা হয়েছেন।
দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বিক্রমাদিত্যের মুদ্রায় তিনি সিংহবাহনা। আবার প্রথম কুমারগুপ্তের মুদ্রায় লক্ষ্মীর সঙ্গে ময়ূরকে দেখা যায়। গুপ্ত বংশের শেষ রাজা স্কন্দগুপ্তের মুদ্রায় লক্ষ্মী এবং স্কন্দগুপ্তের মাঝে গরুড় অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মী পুজোয় পকেটে টান
গৌড় অধিপতি শশাঙ্কের স্বর্ণমুদ্রায় পদ্মকরা লক্ষ্মীর পায়ের কাছে বাহন হিসাবে হংস খোদিত। এই পাখিটিকে ভারতীয় সংস্কৃতিতে অত্যন্ত পবিত্র জ্ঞান করা হয়েছে। তাই ব্রহ্মা, সরস্বতী ও মনসা দেবী সকলেই বাহন হিসাবে হংসকে অধিগত করেছিলেন।
পশুপতিনাথ মন্দিরে অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত একটি লক্ষ্মীমূর্তি অবস্থিত যাঁর বাহন একটি বিশালকায় কূর্ম। নাসিকের অনতি দূরে গন্ডেশ্বর মন্দিরেও বিষ্ণু মূর্তির সম্মুখে একটি কূর্ম ভাস্কর্যের উপস্থিতি লক্ষণীয়। এটি সম্ভবত লক্ষ্মীরই প্রতীক।
নেপালে অর্ধলক্ষ্মীনারায়ণ মূর্তিরূপটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই ধরণের মূর্তিতে নারায়ণের পায়ের তলায় গরুড় আর লক্ষ্মীর পায়ের নীচে কূর্ম থাকে। যখন বিষ্ণুর সঙ্গে লক্ষ্মী প্রিয়া হিসাবে একত্রে অবস্থান করেন তখন বিষ্ণুর বাহন গরুড় তাঁকেও বহন করে।
সপ্তমাতৃকারূপে বিষ্ণুজায়া তাঁর স্বামীর আয়ুধ, অলঙ্কার, মুদ্রা, বাহন সবই হস্তগত করেছেন। ইলোরার কৈলাস মন্দিরের ডানদিকের প্রকোষ্টটিতে অসাধারণ সপ্তমাতৃকার মূর্তি আছে। এই সপ্তমাতৃকারা প্রত্যেকেই তাঁদের পুরুষ শক্তিরই প্রকৃতি শক্তি রূপিনী। এঁরা হলেন ঈন্দ্রানী, ব্রহ্মাণী, মাহেশ্বরী, বরাহি, কৌমারী, বৈষ্ণবী, চামুন্ডা। বিষ্ণুর নারীশক্তি বৈষ্ণবী একহাতে শঙ্খ আর অন্য হাতে চক্র ধারণ করেছেন। তাঁর মাথায় কিরীট মুকুট, গলায় বনমালা ও গরুড় বাহন।
ইলোরার অন্য গুহাগুলিতেও সপ্তমাতৃকার সন্ধান মেলে। তাই স্বাভাবিকভাবে বৈষ্ণবীরূপী লক্ষ্মী এখানে গরুড় বাহনারূপে কল্পিত। তবে এই বৈষ্ণবীরূপ বাদ দিয়ে কিছু বিক্ষিপ্তভাবে লক্ষ্মী গরুড়কে বাহন হিসাবে নিয়েছেন। যেমন কৌসাম্বিতে একটি শিলমোহর পাওয়া যায় যেখানে লক্ষ্মীর বাহন গরুড়। হংসনারায়ণ ভট্টাচার্য অনুমান করেছেন যে, গরুড়ের ক্ষুদ্র সংস্করণরূপে পেঁচা লক্ষ্মীর বাহন হিসাবে স্থান করে নিয়েছে। তবে হংসনারায়ণের এই মতটিতে সন্দেহের অবকাশ আছে।
এই সমস্ত বাহনগুলির তুলনায় লক্ষ্মীর বাহন হিসাবে পেঁচা অনেক অর্বাচীন। ঠিক কবে থেকে পেঁচা যে লক্ষ্মীসংলগ্না হল তা স্থির করে বলা যায় না। তবে দিনাজপুর থেকে এগারো-বারো শতাব্দী নাগাদ নির্মিত শিশু কোলে একটি চতুর্ভূজা লক্ষ্মীর সন্ধান মেলে যার পাদপীঠে পেঁচা খোদিত। এখন পর্যন্ত পাওয়া প্রাচীন মূর্তিতে লক্ষ্মীর বাহন হিসাবে পেঁচার এটিই আদি উদাহরণ।
কুষাণযুগে মথুরাশৈলীতে নির্মিত একটি পেঁচার মূর্তি পাওয়া যায়। এই মূর্তিটির বৈশিষ্ট্য হল পাখির মস্তকযুক্ত দুটি মনুষ্য অবয়ব ঘট দিয়ে পেঁচাটির মাথায় অভিষেক বারি ঢালছে। অভিষেক বারি সিঞ্চনের এই ঘটনা গজলক্ষ্মীর কথা মনে করিয়ে দেয়। প্রজ্ঞা, হস্তশিল্প ও যুদ্ধের গ্রীকদেবী এথেনা প্রথমদিকে পেঁচারূপেই পূজিত হতেন, পরে যা তাঁর বাহন হিসাবে পরিলক্ষিত হয়।
কুষাণমুদ্রায় দেবী এথেনার এই পেঁচাই খোদিত হয়েছে। যা কুষাণরা সরাসরি গ্রীকদের কাছ থেকে ধার করেছিল। ইলাহাবাদ ম্যুজিয়ামে রক্ষিত এই পেঁচাটিও কি লক্ষ্মীর জুমর্ফিক ফর্ম, যা পরবর্তীকালে লক্ষ্মীর বাহনে পরিণত হয়। আঠেরো উনিশ শতকের শিল্পকলা পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে এইসময় পেঁচা লক্ষ্মীর বাহন হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ফেলেছে। ভাদ্রমাসের লক্ষ্মীব্রত যাকে পেঁচাপেঁচি ব্রতও বলা হয় সেখানে পেঁচা একটি বড় মঙ্গলময় চরিত্র।
যেহেতু বাহন হিসাবে পেঁচার প্রতীক বিশ্লেষণ বা তাৎপর্য কোন পুরাণেই উপলব্ধ নয় তাই সবাই তাঁদের অনুমানের ভিত্তিতে বাহনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেছেন। স্বামী নির্মলানন্দ বলেছেন, “… লক্ষ্মীর সঙ্গে পেচকের সম্মেলন সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ। ধানের শত্রু দুরন্ত মুষিককূল সংহার করে সে ধনরক্ষার ব্রত পালন করছে। তাছাড়া ধনার্জন ও পরমার্থ চিন্তা, এ দুদিক থেকেও লক্ষ্মীর বাহন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।”
এছাড়াও তিনি বলেন যে, পেঁচা যমের দূত হওয়ারও কারণে লক্ষ্মী যমের চিহ্নটি স্বয়ং ধারণ করে ধনোপার্জনের ক্ষেত্রে সংযম বুদ্ধি ও ধর্মীয় চেতনা জাগরূক করেন।
সুধীর কুমার মিত্র বলেন, “পেঁচা দিবান্ধ আর ঐশ্বর্য মদেও মানুষ হয় অন্ধ, তাই যেন লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা সবসময় সাবধান বাণী উচ্চারণ করছে যে, ঐশর্যে মত্ত হয়ো না, ভুলো না তোমার আত্মীয় বন্ধু বান্ধব এবং দেশের অন্যান্যদের।”
লক্ষ্মী চঞ্চলা। তাই বলে কি তার বাহনগুলিও চঞ্চলা। কিছুতেই আর লক্ষ্মীর সঙ্গে স্থির হয়ে থাকে না। কেবলই বদলে বদলে অন্য দেবদেবীর কাছে চলে যায়। এত বাহন বদল অন্য কোন দেবদেবীর ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয় না।
এখন দেখা যাক এই পেচক বাহন লক্ষ্মীদেবীর প্রতি কতদিন আনুগত্য বজায় রাখতে পারে। তবে পেঁচা বলে লক্ষ্মীদেবীর এই বাহনটিকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। এই স্থির বুদ্ধি সম্পন্ন প্রাজ্ঞ প্রাণীটি প্রাচীন কাল থেকেই ইস্থার, এথেনা, মিনার্ভা প্রভৃতি দেবীদের বাহন হয়ে নিজের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করেছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584