করোনার চিকিৎসা নিয়ে জুনিয়র ডাক্তার, স্থানীয়দের বিক্ষোভে উত্তাল বাঙুর, সাগরদত্ত হাসপাতাল

0
55

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর বন্দোবস্ত না করেই করোনা চিকিৎসা চালু করতে চায় স্বাস্থ্য দফতর। এমনই অভিযোগ তুলে শুক্রবার বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল শহরের দুই প্রান্তের এমআরবাঙুর এবং সাগরদত্ত হাসপাতাল। পরিস্থিতি সামলাতে দু’ক্ষেত্রেই ছুটে আসতে হয় স্থানীয় পুলিশকে।

Bangur hospital | newsfront.co
বাঙুরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

সূত্রের খবর, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে দুপুর প্রায় ১টা পর্যন্ত হাসপাতালের সুপারের বিল্ডিং ঘিরে বিক্ষোভ দেখান জুনিয়র চিকিৎসকরা। পরিস্থিতি জানতে সুপারকে দফায় দফায় ফোন করেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব, রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ প্রশাসনিক কর্তারা।

Sagar dutta hospital | newsfront.co
সাগরদত্তে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

প্রসঙ্গত, রাজ্যের প্রায় একাধিক হাসপাতালকেই প্রাথমিক ভাবে করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হবে, এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেই প্রাথমিক পর্যায়ের কথাবার্তা চালাচ্ছিল স্বাস্থ্য দফতর। এমআর বাঙুর হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা হবে, এই নিয়েও সম্প্রতি নোটিশ আসে।

আরও পড়ুনঃ নিজামুদ্দিন জমায়েতে যোগ দেওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের যুবকের করোনা পজিটিভ

অভিযোগ, এর পর থেকেই কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার মিলে হাসপাতালের সাফাইকর্মী, নিরাপত্তারক্ষী এবং অন্যান্য চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীদের এ নিয়ে বোঝাতে শুরু করেন যে, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ছাড়া করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু করলে, তাঁদের শরীরেও বাসা বাঁধবে মারণ ভাইরাস। তখন তার দায় আর নেবে স্বাস্থ্য দফতর।

এতেই আতঙ্কিত হয়ে শুক্রবার সকাল থেকে সুপার শিশির নস্করের অফিসের সামনে সকলে জড়ো হন। জুনিয়র চিকিৎসক, নার্স এমনকি চতুর্থ শ্রেনীর কর্মীদেরও এই বিক্ষোভে সামিল হতে দেখা যায়। তাঁদের আরও দাবি, নতুন এবং পুরনো দুই বিল্ডিংয়েই করোনা রোগীদের রাখলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

কারণ, এখন পর্যন্ত নতুন বিল্ডিংয়ে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা হচ্ছে আর পুরনো বিল্ডিংয়ে রয়েছেন অন্যান্য রোগীরা।তাই শুধুমাত্র নতুন বিল্ডিংয়েই করোনা রোগীদের চিকিৎসা হোক।

আরও পড়ুনঃ সরকারের সমালোচনা:চিকিৎসকের বাজেয়াপ্ত ফোন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে সুপার স্পষ্ট জানিয়েছেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক পিপিই আছে। কাউকেই সুরক্ষা ছাড়া কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আর নতুন বা পুরনো আলাদা করে কিছু নয়, যেভাবে স্বাস্থ্য দফতর চাইছে, সেই নিয়ম মেনে কাজ করাটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ এরপরেই বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। তবে যে জুনিয়র চিকিৎসকরা এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে, একই ছবি দেখা গেল কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালেও। শহরতলির বাসিন্দাদের কেউ করোনায় আক্রান্ত বলে সন্দেহ হলেই সেই রোগীদের ভর্তি করার জন্য সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে বলেছিল স্বাস্থ্য ভবন। কিন্তু সেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকায় করোনা হাসপাতাল তৈরি উচিত নয় বলে তারা দাবি করেন। তারপর এই স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দফতরের প্রস্তাবে বাঙুর হাসপাতালের মত এই হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও একাংশেরই সায় নেই। ৫০০ শয্যার মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসকের সংখ্যাই যথেষ্ট নয়। তারপর ওপর কামারহাটির মতো এলাকায় প্রচুর মানুষের বসবাস।

করোনা পরিকাঠামো খতিয়ে না দেখে ওই হাসপাতালে করোনা রোগীদের ভর্তি শুরু করলে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের অনুমান, চিকিৎসকদের একাংশ স্থানীয় মানুষজনকে কথা বুঝিয়ে তাদের মাধ্যমেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপরে চাপ সৃষ্টি করেছেন। সাগর দত্ত হাসপাতালের বিষয়েও এখনই কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দফতর।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here