শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
হেমতাবাদের বিধায়কের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় সোমবার সকাল থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু রাজ্য সরকার ঘটনাটির তদন্তভার তুলে দিল রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি-কে। নবান্ন সূত্রে খবর, সোমবার দুপুরেই সিআইডিকে তদন্তের দায়িত্ব নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ পেয়েই ঘটনার তদন্তে নেমে পড়েছেন সিআইডি আধিকারিকরা।
সিআইডি সূত্রে খবর, সিআইডির স্পেশ্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট পদমর্যাদার এক আধিকারিক সোমবার বিকেলেই ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত ঘটনা খতিয়ে দেখেন। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং অটোপ্সি সার্জেনের সঙ্গে কথা বলে সোমবার রাতেই তিনি প্রাথমিক রিপোর্ট সিআইডি তদন্তকারী দলের হাতে তুলে দিয়েছেন।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বিধায়কের জামার পকেটে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। সেই নোটে দুই ব্যক্তির নাম রয়েছে এবং তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়। তবে ওই দুই ব্যক্তিকে পরিকল্পিতভাবে বিপদে ফেলার জন্য কেউ বিধায়কের জামার পকেট এ তাদের নাম লিখে রেখে গেছে কি না, সেটা তদন্ত করে দেখছে সিআইডি।
আরও পড়ুনঃ কংগ্রেসে রেশন দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত, বিজেপিতে এসে খাদ্যমন্ত্রী
২০১৬ সালে দেবেন্দ্রনাথ রায় সিপিএমের টিকিটে বিধানসভা নির্বাচনে জেতেন। পরে ২০১৯ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেও তিনি তাঁর বিধায়ক পদ ত্যাগ করেননি। ফলে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা বাড়লেও সিপিএমের বিধায়ক সংখ্যা কমে গিয়েছে। সেই আক্রোশবশেই দেবেন্দ্রনাথকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্য বিজেপি এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এমনকি দেবেন্দ্রনাথের পরিবারও।
তাদের দাবি, বাঁ হাতের সঙ্গে দড়ি বাঁধা যে অবস্থায় দেবেন্দ্রনাথকে পাওয়া গিয়েছে, তা আত্মহত্যার লক্ষণ নয়। বাড়ি থেকে এতটা দূরে গিয়ে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন না। এত নিচু চালা থেকে আত্মহত্যা করাও সম্ভব নয়। কেউ পরিকল্পনা করে তাকে কোনভাবে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করে পকেট এ সুইসাইড-নোট রেখে দেহ ঝুলিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিত্তের চেয়ে জীবন মূল্যবান! উচ্চহারে কর দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে চিঠি কোটিপতিদের
এই বিষয়গুলি নিয়েই তদন্ত করছেন সিআইডি গোয়েন্দারা। হস্তাক্ষরবিদের সাহায্যে সুইসাইড
নোটের সঙ্গে বিধায়কের হাতের লেখা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে ময়না তদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে মেলাতে হবে পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণও। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাঁর মোবাইলের কল রেকর্ডসও।
প্রয়োজনে ভবানীভবনে সিআইডির সদর দফতর থেকে হোমিসাইড বিভাগের তদন্তকারীদের পাঠানো হতে পারে। তবে এই রহস্যের জট খুলতে খুব বেশিদিন সময় লাগবে না, এমনটাই মত তদন্তকারীদের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584